সৌমেন সুর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফগানিস্থান থেকে সোভিয়েত প্রভাব দূর করতে গিয়ে আমেরিকা যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তার পরিণতি আজকের সন্ত্রাসবাদ। তবে সন্ত্রাসের প্রথম সাক্ষাৎ পাই ফরাসী বিপ্লবের ইতিহাসে। ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ অরাজকতা ও প্রতিবিপ্লবীদের দমন এবং বিদেশী শক্তির আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যে শাসনব্যবস্থা রচিত হয়েছিল, তা ইতিহাসে সন্ত্রাসের রাজত্ব নামে পরিচিত। তবে সেই সন্ত্রাস আন্তর্জাতিক রূপ পায়নি। যাই হোক আমেরিকা সোভিয়েতের বিরুদ্ধে তালিবান গোষ্ঠীর ওসামা বিন লাদেনকে লেলিয়ে দেয় এবং অস্ত্র, অর্থ, সামরিক শিক্ষা দিয়ে। আমেরিকা সেদিন কল্পনা করতে পারেনি যে, তারা একজন ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে জন্ম দিলো। যে ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কার্যকলাপ আমেরিকা সহ বিশ্বের উন্নতশীল দেশগুলোর ঘুম কেড়ে নিয়েছে সেই সংগঠনের নাম 'আলকায়দা।' ওসামা বিন লাদেন হল প্রধান। লাদেন মেলিবাদীদের কাছে সন্ত, বিশ্ববাসীর কাছে বিভীষিকা। তাঁরই নির্দেশে আমেরিকার সম্মানীয় ট্রেড সেন্টার ধূলোয় মিশে যায়।
বস্তুত, পরে ওসামা বিন লাদেনকে আমেরিকা খঁজে বের করে তাঁকে হত্যা করে। তবে বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলো সন্ত্রাসবাদের শিকার। সিরিয়া, লেবানন, আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ভারতে সর্বত্র সন্ত্রাসবাদীরা তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদীদের কার্যকালপে আজ সারা বিশ্ব ভীত ও ত্রস্ত। সন্ত্রাসবাদ একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এর বিরুদ্ধে সকলকে সংঘবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে। মৌলবাদীরা যতই ধর্মের জিগির দিয়ে সন্ত্রাসের জাল ছড়াক না কেন, বিশ্বের সমস্ত ধর্মের মানুষ মনে করে, কোনও ধর্মই মানবতা বিরোধী নয়। মুষ্টিমেয় কিছু সন্ত্রাসবাদী শত চেষ্টা করেও বিশ্বজনমতকে তাদের পক্ষে আনতে সক্ষম হবে না। মানুষ চায় শান্তি, স্বস্তি। হিংসা কখনো জয়লাভ করতে পারে না। আপামর বিশ্বজনমত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ধ্বনিত হলে একদিন না একদিন সন্ত্রাসের অবসান ঘটবেই। তারা শুভবুদ্ধির কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হবে। তাহলে চুপ করে বসে থাকলে সমস্যার সমাধান হবে না। বিশ্বজনমতকে দৃঢ় করতে হবে অশুভশক্তির বিরুদ্ধে। তবেই একদিন সন্ত্রাসবাদ নিপাত হবে। নচেৎ নয়।