
কোলেস্টেরলের (Cholesterol) সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। কোলেস্টেরল দেহের জন্য প্রয়োজনীয়, তবে হাই কোলেস্টেরল শরীরে নানরকমের অসুখের সৃষ্টি করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি পরিমাণে থাকলে হার্টের সমস্যা দেখা যায় ও স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। আবার রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে শুরু করে ও রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না আনলে কখনও ধমনী পুরোপুরি ব্লকও হয়ে যায়। যার ফলে দেহে বিশেষ করে পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যাকে পেরিফেরাল আর্টেরি ডিজিস বা প্যাড (PAD) বলা হয়। তবে বুঝবেন কী করে যে, আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে নেই?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যদি আপনার হাই কোলেস্টেরল থেকে থাকে, তবে আপনি প্রথমেই বুঝতে পারবেন আপনার পা দেখে। যদি কখনও আপনার পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, তারপর সেই ব্যথা কিছুক্ষণ বিশ্রাম করার পর ঠিক হয়ে যায়, তখনই বুঝতে পারবেন যে, আপনার হয়তো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এই পেরিফেরাল আর্টেরি ডিজিসের আরও একটি লক্ষণ আছে। যেমন-শুয়ে থাকার সময় যদি আপনার পা ও পায়ের পাতায় ব্যথা, জ্বালা বা পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে, এমন অনুভব করেন বা পায়ের তলার রং পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে, তবে বুঝে নিতে হবে যে আপনার হাই কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে।
তবে এতে ভয় পাওয়ার দরকার নেই বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। ডাক্তারদের পরামর্শ, খাবারের প্রতি সচেতন হলেই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। বিশেষ করে মদ, ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে, saturated fats যেমন- ঘি, বাটারের পরিমাণ কমাতে হবে ও soluble fiber যুক্ত শাক-সবজি খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। আবার কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে নিয়মিত এক্সারসাইজ করার পরামর্শও দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
প্রসূন গুপ্ত: আজকাল বাঙালিদের মধ্যে একটা রীতিই হয়ে গিয়েছে সরকারি চাকরির জন্য জান লড়িয়ে দেওয়া। কারণ, নিশ্চিত চাকরি, সঙ্গে একাধিক সুযোগ-সুবিধা। অবসর নিলে পেনশন, মারা গেলে নিকটতম স্বজন পাবেন অর্ধেক পেনশন। এ রকম সুখের মধ্যেই ডিএ নিয়ে আন্দোলন, উপলক্ষ্য বেতন একটু বাড়িয়ে নেওয়া। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে। অলাভজনক সংস্থা হাতে রাখছে চাইছে না কেন্দ্র। হয়তো এমন দিন আসবে, সরাসরি প্রশাসনিক অফিস ছাড়া সরকারি চাকরি আর থাকবেই না। বার্তা পরিষ্কার, দক্ষতা দেখাও, শ্রম দাও, বেতন নাও। বার্তা এটাই যে, ব্যবসা করাটা সরকারের কাজ নয়। এই পদ্ধতিই নাকি চলে প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে। সেখানে পুলিস প্রশাসন চালায় কিছু বেসরকারি সংস্থা।
বাংলায় এ সব কিছু হবে না। বামেরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্কৃতির দিকে জোর দিয়েছিল। ব্যতিক্রম নয় মমতা সরকার। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ছাত্রছাত্রীর এমন কিছু কোর্স করা বা পড়া উচিত যেখানে চাকরি প্রায় নিশ্চিত। এই মুহূর্তে বাংলায় অজস্র বেসরকারি কারিগরি ও ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট হয়েছে। যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের সমস্ত দফতর রয়েছে। ডিগ্রি কোর্স না পড়তে পারলে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতেই পারে।
ম্যানেজমেন্ট কোর্স যে কত-শত হয়েছে তা নিয়ে ভাবতেই পারেন পড়ুয়ারা। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কলা বিভাগের যে কেউই এই কোর্স পড়তে পারে। হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট থেকে মিডিয়া সায়েন্স। জানেন কি ডাক্তারির সমতুল্য একটি কোর্স এসেছে, বিপিটি। অর্থাৎ ব্যাচেলার অফ ফিজিও থেরাপি। এই কোর্স অবশ্যই বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের জন্য। পাশ করলে নামের আগে ডাক্তার লিখতেই পারেন। এরকম বহু অজানা কোর্স এসেছে। এই কোর্সের ধারক মৌলনা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউ। সেখানেই বিশদ জানা যাবে। পরীক্ষার্থীদের উচিত ২৭ মার্চ পরীক্ষা শেষের পর গিয়ে খোঁজ নেওয়া।
মনি ভট্টাচার্য: পাহাড় যেমন সুন্দর তেমন মৃত্যুফাঁদও বটে, সবাই নিশ্চয় ভাবছেন, পাহাড়কে মৃত্যুফাঁদ কেন বলছি? এ পৃথিবীতে ৮ হাজারী পাহাড়ের সংখ্যা মোট ১৪টি। আর এই চূঁড়ায় চড়তে গিয়ে জানি না কত মানুষের মৃত্যু হয় প্রতি বছর। কিছু আমরা খবর পাই, কিছু পাই না। এ পৃথিবীর ১৪টি ৮ হাজারী পাহাড়ের ৭টিই নেপালে (Nepal)। এবার সেই নেপালের দুটি অন্যতম শৃঙ্গ অভিযানে বেড়িয়েছেন বাঙালি পর্বতারোহী পিয়ালী (Piyali Basak) বসাক। পিয়ালী পৃথিবীর উচতম শৃঙ্গ এভারেস্ট (৮৮৪৮মি) বিনা অক্সিজেনে জয় করে পৃথিবীতে নজির গড়েছেন। তিনিই প্রথম বাঙালি যিনি কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। পিয়ালী অবশ্য বলেন, 'এভারেস্ট অভিযানের শেষ ১০০ মিটারে অক্সিজেন প্রয়োজন হয়েছিল।' এবার তিনি নেপালের এই দুইটি আট হাজারী শৃঙ্গ, কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া জয় করবেন, এমন লক্ষ্য নিয়ে রওনা হয়েছেন বলেই খবর। পিয়ালীর পরিবার সূত্রে খবর, এই মাস অর্থাৎ মার্চের ১৬ তারিখ তিনি রওনা দিয়েছেন।
তিনি নেপালের মাউন্ট মাকালু এবং নেপালের মাউন্ট অন্নপূর্ণা সামিট অভিযানে বেড়িয়ে পড়েছেন। নেপাল-তিব্বত বর্ডার রিজিয়নের পাহাড় হলো মাউন্ট মাকালু, যার উচ্চতা ৮৪৬৩ মিটার। মাকালু অভিযানকে কাঠিন্যের বিচারে ৪-ই গ্রেড করা হয়েছে (আল্পাইন গ্রেডিং লিঙ্ক)। এই অভিযান শুরু করার আগে পর্বতারোহীদের উপযুক্ত এবং শক্তিশালী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাকালু বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পর্বতগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। মাকালু অভিযান কঠিন, কারণ পর্বতটি তার খাড়া পিচ এবং ছুরির ধারের শিলাগুলির জন্য কুখ্যাত।
নেপালের মাকালু শিখর বিশ্বের পঞ্চম সবচেয়ে বিপজ্জনক। একটি আন্তর্জাতিক রিসার্চ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও অবধি ২৩৪ জন আরোহীর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই শিখরে পৌঁছতে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত মাউন্ট মাকালুর সামিটের পথে, চতুর্থ শিবির থেকে মাউন্ট মাকালুর সামিট পর্যন্ত, প্রায় ৬০% পর্বতারোহী এই অংশে অক্সিজেন ব্যবহার করেন। এবার এই যাত্রা অক্সিজেন ছাড়াই চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন পিয়ালী।
মাকালুর প্রসঙ্গে আমাদের প্রতিনিধিকে বুধবার পিয়ালী বলেন, 'মাকালু খুবই ভয়ানক শৃঙ্গ। মাউন্ট অন্নপূর্ণা থেকে নেমে তিনি মাউন্ট মাকালুর জন্য যাত্রা শুরু করবেন। সব ঠিক থাকলে এপ্রিলের ২৬ তারিখ থেকে মে মাসের ১৪ তারিখের মধ্যে তিনি মাকালু অভিযান সেরে ফেলবেন।'
এছাড়া তাঁর তালিকায় রয়েছে, পৃথিবীর দশম শৃঙ্গ ,উত্তর-মধ্য নেপালের মাউন্ট অন্নপূর্ণা (৮০৯১ মি)। অন্নপূর্ণা হিমালয়ের একটি অংশ যা অভিযানের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্বতমালার মধ্যে রয়েছে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, ৬০টিরও বেশি প্রাণহানি এবং মৃত্যুর হার ৩২%-সহ এই পর্বত ৮০০০ মিটারের উপরে যেকোনও পর্বতের চূড়ার অনুপাতে সর্বোচ্চ প্রাণঘাতী। পর্বতটি নেপালে গন্ডকী নদীর পূর্বদিকে ৫৫-কিলোমিটার (৩৪ মাইল) রিজ বরাবর অবস্থিত। যা বিশ্বের গভীরতম নদী গিরিগুলির মধ্যে একটি খোদাই করেছে।
এটি একটি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ তুষারপাত-প্রবণ এলাকা যেখানে কিছুটা প্রযুক্তিগত অসুবিধাও রয়েছে। এই অভিযানে উচ্চতায় গড়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা হাটতে হবে দুর্গম পথে। কিছু দিন ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।
সিএন ডিজিটালের তরফে পিয়ালীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি আমাদের জানান, 'এই অভিযানে খরচ প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা, সেই টাকার মধ্যে ১৪ লক্ষ টাকা এখনও জোগাড় হয়েছে।' তিনি এদিন আরও জানান, 'প্রথমে তিনি মাউন্ট অন্নপূর্ণার জন্য যাত্রা শুরু করবেন, অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প থেকে তিনি অন্নপূর্ণা সামিটের উদ্দেশে ১২-ই এপ্রিল যাত্রা শুরু করবেন এবং এই যাত্রা শেষ করবেন বা শেষ করার চেষ্টা করবেন এপ্রিলের ২৪ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যেই।' বুধবার তিনি সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'অন্নপূর্ণার এই ১২ থেকে ১৫ দিনের যাত্রায় রোজ গড়ে ১০ থেকে ১২ কিমি হাটতে হবে।'