Breaking News
Gardenrech: গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ে তৎপর কলকাতা পৌরসংস্থা, নোটিশ দেওয়া হয়েছে ৬ টি বাড়িতে      KMC: গার্ডেনরিচকাণ্ডে পুরসভার ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ়, ‘তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়’ এক্স হ্যান্ডেলে কটাক্ষ শুভেন্দুর      Sandeshkhali: 'মুখ্যমন্ত্রী-ই বহিরাগত', ক্যাম্পের ২য় দিনে সন্দেশখালিতে আক্রমণাত্মক প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল      Election: বাজল লোকসভা ভোটের দামামা! নির্ঘণ্ট প্রকাশ নির্বাচন কমিশনের, ৭ দফায় ভোট বাংলায়      Mamata: চোট কপালে, নাকে! এখন স্থিতিশীল মুখ্যমন্ত্রী, ‘পিছন থেকে ধাক্কা’র ব্যাখ্যা দিলেন SSKM-র ডিরেক্টর      Mamata Banerjee: ফের গুরুতর আহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভর্তি SSKM হাসপাতালে      Bhawanipur: নিমতা হত্যাকাণ্ডে উঠছে প্রশ্ন! ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা কোথায়?      Sheikh Shahjahan: ফের আদালতে ধাক্কা শাহজাহানের, আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট      CAA: আজই দেশজুড়ে জারি হল CAA! লোকসভা ভোটের আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি কেন্দ্রের      TMC: লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বড় চমক, একঝাঁক নতুন মুখ, দেখে নিন তালিকা...     

অন্যান্য

Bangla: আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!

'আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!' গানের লাইনটি ভীষণ ভাবে সার্থক এ ক্ষেত্রে, যেখানে বাংলা ভাষা প্রয়োগ নিয়ে বাঙালিরা কেত দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কেন? কারণ, জানেন সারাদিনে আমরা যা বলি তার মধ্যে কত শতাংশ বাংলা?

চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার সময় হঠাৎ মাথায় আসলো যে এই চা চীনা শব্দ। আবার বিস্কুট ফরাসি শব্দ। বিস্কুটের সাথে থাকা চানাচুর হিন্দি। চায়ে যে চিনি ও পানি থাকে সেখানে চিনি চীনা অথচ পানি হিন্দি শব্দ। আবার চা ভর্তি পেয়ালাটা ফারসি কিন্তু কাপটা ইংরেজি শব্দ। এদিকে ইংরেজি শব্দটাই আবার পর্তুগিজ। চা চীনা হলেও কফি কিন্তু তুর্কি শব্দ। আবার কেক পাউরুটির কেক ইংরেজি, পাউরুটি পর্তুগীজ। 

একটু দামী খানাপিনায় যাই। আগেই বলে রাখি, খানাপিনা হিন্দী আর দাম গ্রীক। রেস্তোরাঁ বা ব্যুফেতে গিয়ে পিৎজা, বার্গার বা চকোলেট অর্ডার দেওয়ার সময় কখনও কি খেয়াল করেছেন, রেস্তোরা আর ব্যুফে দুইটাই ফরাসী ভাষার, সাথে পিৎজাও। পিৎজাতে দেওয়া মশলাটা আরবি।

মশলাতে দেওয়া মরিচটা ফারসি! বার্গার কিংবা চপ দুটোই আবার ইংরেজি। কিন্তু চকোলেট আবার মেক্সিকান শব্দ। অর্ডারটা ইংরেজি। যে মেন্যু থেকে অর্ডার করছেন সেটা আবার ফরাসী। ম্যানেজারকে নগদে টাকা দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন, নগদ আরবি, আর ম্যানেজার ইটালিয়ান। আর যদি দারোয়ান কে বকশিস দেন, দারোয়ান ও তার বকশিস দুটোই ফারসি। এবার চলুন বাজারে, সবজি ফলমূল কিনতে। বাজারটা ফারসি, সবজিও। যে রাস্তা দিয়ে চলছেন সেটাও ফারসি। ফলমূলে আনারস পর্তুগিজ, আতা কিংবা বাতাবিলেবুও। লিচুটা আবার চীনা, তরমুজটা ফারসি, লেবুটা তুর্কী। পেয়ারা-কামরাঙা দুইটাই পর্তুগীজ। পেয়ারার রঙ সবুজটা কিন্তু ফারসি। ওজন করে আসল দাম দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন ওজনটা আরবি, আসল শব্দটাও আসলে আরবি। তবে দাম কিন্তু গ্রীক, আগেই বলেছি।

ধর্মকর্মেও একই অবস্থা। মসজিদ আরবি দরগাহ/ঈদগাহ ফারসি। গীর্জা কিন্তু পর্তুগীজ, সাথে গীর্জার পাদ্রীও। যিশু নিজেই পর্তুগীজ। কেয়াং এদিকে বর্মিজ, সাথে প্যাগোডা শব্দটা জাপানি। আর, মন্দিরের ঠাকুর হলেন তুর্কী। আর কি বাকি আছে? ও হ্যাঁ। কর্মস্থল! অফিস আদালতে বাবা, স্কুল কলেজে কিন্ডারগার্ডেনে সন্তান। বাবা নিজে কিন্তু তুর্কী, যে অফিসে বসে আছেন সেটা ইংরেজি, তবে আদালত আরবি, আদালতের আইন ফারসি, তবে উকিল আরবি। ছেলে যে স্কুলে বা কলেজে পড়ে সেটা ইংরেজি, কিন্তু কিন্ডারগার্ডেন আবার জার্মান! স্কুলে পড়ানো বই কেতাব দুইটাই আরবি শব্দ। যে কাগজে এত পড়াশোনা সেটা ফারসি। তবে কলমটা আবার আরবি। রাবার পেনসিল কিন্তু আবার ইংরেজি! পুরো স্ট্যাটাস মনে না থাকলে অন্তত এটা মনে রাখবেন যে মন শব্দটা আরবি। শব্দের কেচ্ছা-কাহিনী এখানেই খতম। তবে কেচ্ছাটা আরবি, কাহিনীটা হিন্দি, উভয়ের খতমটা আরবিতে।  মাফ চাইলাম না বা সরি বললাম না, কারণ মাফটা আরবি আর সরিটা ইংরেজি।

(সোমনাথ পাঠকের পাতা থেকে)

4 weeks ago
AKD Group: তবুও শান্তি, তবু আনন্দ...

প্রসূন গুপ্ত: এই পৃথিবীর একমাত্র ভবিতব্য জন্ম হলেই মৃত্যু হবে। এই ভবিষ্যৎ বাণীর জন্য বিজ্ঞান বা জ্যোতিষী হওয়ার দরকার হয় না। একটু বয়স বাড়লে মানুষ জানতে পারে তাঁকে একদিন চলে যেতে হবেই। কোনও শক্তি এর ব্যতিক্রম হতে দেবে না। তবুও মানুষ আনন্দ করে। যতদিন বেঁচে থাকা যায় ততদিন ইচ্ছাশক্তি নিজের চলনকে ছাড়িয়ে যেতে চায়। তবে এটাও বাস্তব অসময়েও চলে যায় অনেকেই।

AKD গ্রুপের অন্যতম পরিচালক মানসী দাস চলে গেলেন মাত্র ৫৮ বছরেই। ঠিক ৬ মাস আগেও দিব্বি দায়িত্ব নিয়ে চলেছিলেন। হঠাৎ পেটের যন্ত্রণা, পরীক্ষা এবং কর্কট রোগ ধরা পরলো। একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে। তারপর কয়েক মাসের লড়াই। হেরে গেলেন। এ যেন জীবনে একটাই ইনিংস। কত রান করতে পারো?

কিন্তু এই মানসীকে চিনত ক'জনা? খুব বেশি কেউ নয়তো। টেলিভিশন কোম্পানির ফার্স্ট লেডি অথচ অজানা অচেনা কেন? আসলে পাবলিসিটি পছন্দই করতেন না। খুব সাধারণ শিক্ষিত সাংস্কৃতিক পরিবারে একটা শিক্ষাই পেয়েছিলেন বাবা-মায়ের কাছ থেকে যে, মানুষের জন্য কাজ করো।

বিরাট ব্যবসায়ী পরিবারে বিয়ে হয়েছিল। প্রাচুর্য ছিল বিস্তর। সে পরিবারে মেজবৌদি হওয়া সত্ত্বেও সংসারের অনেকটা দায়িত্ব এসে গেল তাঁর কাছে। শ্বশুর/শাশুড়ির রান্না অনেক কাজের লোক থাকার পরেও নিজের হাতে করতেন। স্বামী, পুত্র বা বাড়ির বাকি সদস্য, এমনকি বাইরের মানুষের পাতও পড়ত তাঁদের বাড়িতে। সেটা পারতেন কারণ সেভাবেই মানুষ হয়েছিলেন বাপের বাড়িতে। টিউশন করে রোজগার করেছিলেন যে।

এরপর এলো টেলিভিশন কোম্পানি। AKD গ্রুপের সিটিভিএন, পরে সিএন ইত্যাদি। এই বাণিজ্যে এলে ঝঞ্ঝাট অনেক। পেশায় শত্রুবৃদ্ধি তো অবশ্যম্ভাবী। ভয়ঙ্কর কঠিন রাজনৈতিক চাপ এসেছিল বারবার, কর্তা শুভাশীষের পাশে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন চিরকাল।

এরপর ব্যবসা বাড়লো। হলো ডক্টর প্লাস, আবরণ। চিকিৎসা কেন্দ্র এবং জামা কাপড়ের দোকান। দায়িত্ব নিলেন তার। কর্মীরা ভারী খুশি। কাজ তো আছেই তার সাথে খাওয়া দাওয়া পিকনিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। একটা যেন ইনস্টিটিউট। কারোর সমস্যা হলেই 'ম্যাডাম', একদম লুকিয়ে টাকা গুঁজে দিতেন হাতে। এছাড়া সুখেদুখে তো সাথে থাকা বটেই। অসুস্থ হলেন, শুভাশীষ তো ২৪ ঘন্টা তাঁর পাশে। কতগুলো সংসার চলতো অতি গোপনে তাঁর সাহায্যে। দীর্ঘদিনের কর্মচারীরা যেন পরিবারের অঙ্গ। কে লিকার চা খাবে বা দুধ চা কার পছন্দ সবদিকে নজর।

এই মানসী দাসকে কেউ চেনে না। তিনি বিখ্যাত তো নন। সারা জীবন নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলেছেন। ভাল যেমন বুঝতেন তেমন বিপদের গন্ধও পেতেন। চিকিৎসা কেন্দ্র চালানোর কারণে রোগের বিষয়টি বুঝতেন চমৎকার। কিন্তু নিজের কর্কট রোগ বুঝতেই পারলেন না? সোমবারের সন্ধ্যায় যখন হাজার ডিগ্রির চুল্লিতে তাঁর নিথর দেহটি প্রবেশ করলো, তখন শতাধিক কর্মীরা ভেঙে পড়েছেন কান্নায়। কিন্তু তিনি তো ইনিংস শেষ করে ফেলেছেন। চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। শীতের ঝাপসা কুয়াশা গ্রাস করেছে নিমতলা। অজানা অচেনা কি অধরাই থাকবেন? বলুন আপনারা?

2 months ago
Howrah: খাঁ খাঁ করছে জরি হাব, হাওড়ায় ধুঁকছে শিল্প

ময়ূরকণ্ঠী নীল কিংবা রানি রঙের সোনালি ছোঁয়া। আঁচল বেয়ে নেমে এসেছে রঙিন ঝুমকো, সিল্কের সুতোর বুনোন, জরির ফুল-- এককালে এসবের চাহিদা তুঙ্গে। এখন কমছে চাহিদা, ধুঁকছে জরি শিল্প। হাওড়ার ধুলাগড়ে এক সময় ঘরে ঘরে  জরির কাজ হত। রমরমিয়ে চলছিল ব্যবসা, সংসারের হালও ফিরেছিল। কিন্তু সেই জরি ওস্তাদরা হতাশায় ভুগছেন। যে শিল্পে নিজের হাতে গড়ে পিঠে তুলেছিল, সেই শিল্পের আলো একটু একটু করে নিভছে। 

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ‍্যায় মহিলাদের স্বনির্ভর করতে উদ্যোগ নিয়েছিল। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনও করেছিলেন। সেমত, ২০১৩ সালে হাওড়ায় জরি শিল্পীদের অগ্রগতির জন‍্য ধুলাগড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব‍্যয়ে জরি হাব তৈরী করে উদ্বোধন করেছিলেন। কথা ছিল, এখানে যেমন ভিন রাজ্যের ক্রেতারা আসবেন, তেমনই কারিগর-ওস্তাগরদের স্টল থাকবে। বড়বাজারের বিকল্প হয়ে উঠবে এই হাব। কিন্তু এখনও তা খাঁ খাঁ করছে। বেশির ভাগ জরি শিল্পীরা কাজ ছেড়ে অন‍্য কোন কাজে যুক্ত হয়েছেন। তাদের আশা মুখ‍্যমন্ত্রী যদি একটু জরি শিল্পীদের দিকে নজর দেন, তাহলে হয়ত ফের আগের মত কাজ পাওয়া মিলছে, দুটো পয়সার মুখ দেখতে পারবেন।

পুজো ও বিয়ের মরসুমে আগে এই সময়ে ওঁদের নিঃশ্বাস ফেলার সময় থাকে না। কিন্তু এখন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন হাওড়ার জরি শিল্পের কারিগর-ওস্তাগররা! এই অবস্থায় এখন আশার আলো তেমন চোখে পড়ছে না। অগত্যা শুধুই হা-পিত্যেশ অপেক্ষা।

4 months ago


Special: অমর সৃষ্টি পাণ্ডব গোয়েন্দা

সৌমেন সুর: ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়কে এককথায় কোনো বিশেষণ দিয়ে ভূষিত করা যাবে না। সাহিত্যের কোন বিভাগে তিনি অনুপস্থিত? সব বিভাগই তিনি বীরবিক্রমে জাজ্বল্যমান। তবে সব শিল্পী সাহিত্যিকদের চেনা যায় তার কোনো একটি সৃষ্টি বা লেখা তাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। তার সৃষ্টি মানুষকে আনন্দ দেয়। লেখক ষষ্ঠীপদকে আমরা চিনেছি- তার অমস সৃষ্টি পান্ডব গোয়েন্দা কাহিনী থেকে। এই কিশোর গল্পটি,  যা ছোট বড় সবার কাছে খুব আদরনীয়। লেখকের জীবনে একটা মাইলস্টোন। তিনি কি না লিখেছেন, গল্প উপন্যাস,  ভ্রমণ কাহিনী, এমন কি ছড়া পর্যন্ত। তার লেখা একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যায় না। সব বিভাগে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র। একটা ছড়া উপহার দিই আপনাদের। লেখার মধ্যে শব্দের ব্যবহার কত প্রাঞ্জল, কত আধুনিক। ' ব্রাবোন রোডে উড়ালপুল/ ভূগর্ভেতে রেল/ আজব শহর কলকাতাতে/ নিত্য নতুন খেল/ এই খেলারই পাশে পাশে আদিম খেলা চলে/ ঝমঝমাঝম  বৃষ্টি হলেই/ শহর ভাসে জলে।'

সরকারি চাকরির পাশাপাশি সাহিত্যকে তিনি জীবনের একমাত্র সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। ষাট বছরের সাহিত্য জীবনে অসংখ্য গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। শুধু ছোটদের জন্য নয়, বড়দের জন্য তাঁর গল্প প্রথম সারির পত্রিকায় পাই। ৮ থেকে ৮০ সব বয়সের মানুষের কাছে তিনি পেয়েছেন অকৃত্রিম ভালোবাসা। তিনি যেসব গল্প লিখেছেন, তাতে অহেতুক জটিল মনস্তত্বের বর্ণনা একদম নেই। অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে আমাদের কাছে প্রেজেন্ট করেছেন।

ষষ্ঠীপদবাবু জীবনপথে দিন অতিবাহিত করেছেন- নিপাট একজন ভালো মানুষ হয়ে। সাধারণ জীবনযাপন করে। এত ভদ্র মানুষ ও স্বল্পভাষী ছিলেন সে সম্পর্কে কয়েকটা কথা তুলে ধরছি। কোন একটি জায়গায় প্রধান অতিথি হয়ে নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন তিনি। কোন সাম্মানিক তো নেননি, এমনকি গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত নেননি।  এমনই মানুষ ছিলেন তিনি।  ২০২৩ সালের ৩রা মার্চ তিনি পৃথিবী ছেড়ে চির বিদায় নেন। রেখে যান অগণিত গ্রন্থ- যা মানুষকে ভাবাবে, আনন্দ দেবে। তবে ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় মানুষের কাছে বেঁচে থাকবেন অনেকদিন, কারণ তিনি যে চিরসবুজ, চির নবীন।

5 months ago
Tarasankar Bandyopadhyay: গীতিকার তারাশঙ্কর

সৌমেন সুর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কালজয়ী নাম। সাহিত্য রসিকদের হৃদয়ে তারাশঙ্কর আমৃত্যু বেঁচে থাকবেন। তাঁর গল্প বলার স্টাইল, ভাষা, চরিত্র গঠন চোখ বুজে বলা যায় অনবদ্য। তারাশঙ্করের গল্প উপন্যাসগুলো যদি চলচ্চিত্রায়িত না হত তাহলে আমরা জানতেই পারতাম না, উপন্যাসের পেছনে তিনি একজন মস্ত বড় গীতিকার। সিনেমায় তিনি প্রথম গান লেখেন তারি লেখা গল্প 'কবি' ছবিতে। রবিন মজুমদারের কন্ঠ আর অনিল বাগচীর সুরে এবং লেখকের কথায় গানগুলো মন ছুঁয়ে যায়। কাব্যরসে ভরপুর, প্রেম ভালোবাসা, সব মিলিয়ে সংগীত মুখর ছবিটি দর্শক নিয়েছিল। পাশাপাশি রাইকমল, চাপাডাঙার বউ, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, ডাক হরকরা, , মঞ্জুরি অপেরা তারই  কাহিনী একের পর এক গান লিখেছেন লেখক। সেই গান গীতা দত্ত, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, পঙ্কজ মল্লিক প্রভৃতি স্বনামধন্য গায়করা গান গেয়েছেন।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় গীতিকার হয়েছেন একটু বেশি বয়সে। প্রথম দিকে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা পড়লে এক বছর জেল হয়। এরপর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি সাহিত্য সেবায় দেশকে পূজিত করবেন বলে, সূচিত হয় সাহিত্য সাধনা। হাঁসুলী বাঁকের উপকথা ছবির জন্য তপন সিনহা বীরভূমে লোকেশন দেখতে বেরিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গী ছিলেন তারাশঙ্কর। তিনি ক্রমাগত হেঁটে চলেছেন আর, বিভিন্ন অঞ্চলের মাহাত্ম্য নিয়ে ইতিহাস বলছেন। ডাক হরকরা ছবিতে গীতা দত্তের মুখে 'কাঁচের চুড়ির ছটা, ছেঁয়া  বাজের ছলনা/ আগুনেতে ছটা নাকি, ছটায় আগুন বলো না... ' তারাশঙ্করের লেখা এই গানটি আজও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তিনি যেসব ছবিতে গান লিখেছেন তার প্রায় সবকটি কাহিনী তারই।

কত গুণী মানুষ শিল্পের সম্ভারে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। শিল্পী আলোয় আসে,  আলোয় মিশে যায়, রেখে যাই তার অমর কীর্তি। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তারই মাঝে একজন। তিনি ছিলেন,  আছেন, থাকবেনও।

5 months ago


Special: দেশের যুব সম্প্রদায় হল শক্তির উৎস

সৌমেন সুর: দেশের যুব (Youth) সম্প্রদায় হল শক্তির উৎস। দেশের মানুষ তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে। তারা যদি দেশের মানুষদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে কতটা সচেতন, তা একমাত্র তরুণ সমাজে অনুধাবন করতে পারে। এখন তরুণ সমাজকে প্রথমে দেশকে জানতে হবে। দেশের সমাজ সংস্কৃতিকে ভালো করে বুঝতে হবে। নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা করার জন্য সমাজ সেবামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ভারতবর্ষের সংহতি বিনষ্ট করছে। তাই দেশের নাগরিক হিসেবে দেশ সেবার ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।

দেশের জন্য আমরা, দেশ না থাকলে, আমাদের অস্তিত্ব যে বিপর্যস্ত, একথা উপলব্ধি করলে দেশ গঠনের উপযোগিতা চোখের সামনে ভেসে উঠবে। তাই দেশকে গঠন করার লক্ষ্যে দেশের সেবার প্রয়োজনীয়তা আছে এই ব্যাপারে সর্বাগ্রে তরুণ সমাজেই একমাত্র উপযুক্ত- একথা বলাই বাহুল্য। তরুণ সমাজকে ভাবতে হবে রাতের গভীরে ফুটে আছে সকাল, তাকেই নিয়ে আসতে হবে এই জীবনে । যা কিছু অসত্য, যা কিছু মিথ্যা, তাকে অতিক্রম করে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করা মানব জীবনের সার্থকতা। একথা তরুণ সমাজকে ভাবতে হবে, বুঝতে হবে।

আমাদের জীবনের সংগ্রামই হলো- অন্ধকার থেকে আলোই আসা। রাত্রির অন্ধকার চিরস্থায়ী নয় একসময় অন্ধকার ভেদ করে ফুটে উঠবে সকাল। তখন সব কিছু দৃশ্যমান হয়ে যাবে অতএব তরুণ সমাজকে জাগ্রত থাকতে হবে তাদের মাথায় নৈতিকতার আকাশ। সেখানে আলো তাদের ফোটাতেই হবে। মানুষের কাছে তরুণ সমাজ ঝড়ের বার্তা, আগাম জানিয়ে সেটা রোধ করার জন্য তাদের এগিয়ে এসে সমাজকে কলুষ মুক্ত করার জন্য সতর্ক হয়ে কর্মে প্রবেশ করতে হবে। তরুণ সমাজকে ভাবতে হবে জীবনের নানান অন্ধকারকে দূর করতে পারলে জীবনে সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত হবেই।

5 months ago
Maa Sarada: মা সারদার ছোট্টবেলা

সৌমেন সুর: মা সারদা ছিলেন ধৈর্য, সরলতা ও দয়াভাবের প্রতিমূর্তি। তার জন্ম কাহিনী নিয়ে একটা মত প্রচলিত আছে। সারদা মা স্বয়ং এই প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন। ' আমার মা শিহরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন। মা ছিলেন অত্যন্ত ভক্তিমতী, নিষ্ঠাবান ও কর্তব্যপরায়ণ। ঠাকুর দেখে ফিরবার সময় হঠাৎ শৌচে যাওয়ার ইচ্ছে হওয়ায় একটা গাছের কাছে যখন যান, তখন শৌচ আর হলো না, মা দেখলেন একটা আলো তাঁর পেটের মধ্যে প্রবেশ করলো, আর দেখলেন, একটা ৫-৬ বছরের একটি মেয়ে গাছ থেকে নেমে আসে, পরনে লাল চেলি। মেয়েটি হাসিমুখে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বললো, 'আমি তোমার ঘরে আসছি মা।' এলে মেয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় আর মা অচৈতন্য হয়ে যায়।

১২৬০ বঙ্গাব্দের ৮ই পৌষ বৃহস্পতিবার রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ঘরে মঙ্গলশঙ্খ বেজে উঠলো। গ্রামবাসীর কাছে খবর পৌঁছালো, রামচন্দ্রের ঘরে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। সকলে শিশুকন্যার মঙ্গল কামনা করতে লাগলেন। এদিকে জন্মপত্রিকা অনুসারে নাম দেওয়া হল ঠাকুরমনি দেবী। লোকবিশ্রুত নাম সারদামনি। পরবর্তীতে নাম হয়ে যায় সারদা। ১২৭১ সালে এ দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ হয়। দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষেরা রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে দলে দলে আসতো দুটো ভাতের আশায়। রামচন্দ্র ছিলেন দরিদ্র ব্রাহ্মণ।

মানুষেরা যাতে ফিরে না যায় তার জন্য মরাই থেকে ধান বার করে চাল করে সবাইকে খাইয়েছেন। মা সারদা ওই ছোট্ট বয়সে পরিবেশন করেছেন। কাউকে দুহাত দিয়ে বাতাস করেছেন। বাড়িতে দলে দলে মানুষ। কাউকে ভুখা পেটে ফিরে যেতে হয়নি। এমনই মানুষ ছিলেন মা সারদা। সেই বাল্য বয়সেই বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য কত দয়া! ছোটবেলায় যিনি দিন দুঃখী মানুষদের অন্ন জুগিয়েছেন, তিনি যে জগতের মা হয়ে উঠবেন সেটাই তো স্বাভাবিক।

সেই যুগে সমাজে বাল্যবিবাহ প্রথা ছিল। সারদা দেবীর মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ২২ বছর বয়সের শ্রীরামকৃষ্ণের সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের আয়োজন ঈশ্বর আগে থেকেই তৈরি করে রেখেছিলেন। সারদা মায়ের মামার বাড়ির কাছে একটা শিব মন্দিরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান হয়। মেলা,  যাত্রা আরও কত কি। যাত্রাপালা শেষ হলে এক মহিলা সারদাকে জিজ্ঞাসা করেন, 'এই যে এত লোক এখানে রয়েছে এর মধ্যে কাকে তোর বর করতে পছন্দ?' সারদা দেবী আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যুবক রামকৃষ্ণকে। এখন মা সারা পৃথিবীতে বিরল। আমরা পরম শ্রদ্ধা ভরে মায়ের চরণে শতকোটি প্রণাম জানিয়ে বলি, 'মা, তুমি জগতের মা, তুমি সতেরও মা, অসতেরও মা। তুমি আমাদের রক্ষা করো।'

6 months ago
Special: রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সহকারীকে চেনেন? এক নিখাদ সম্পর্কের উপাখ্যান পড়ুন

সৌমেন সুর: সেই সময়ের কথা। তখন সদ্য প্রকাশ হয়েছে রবীন্দ্রনাথের 'ঘরে বাইরে' উপন্যাস। অমিয় চক্রবর্তী (Amiya Chakraborty) তখন হেয়ার স্কুলের ছাত্র। বইটি পড়ে তরুণ অমিয় চক্রবর্তী মনে অনেক প্রশ্ন জাগে, রবীন্দ্রনাথকে চিঠি লিখলেন। রবীন্দ্রনাথ (Rabindranath) চিঠি পেয়ে পত্র লেখক কে প্রবীণ মনে করে 'আপনি' সম্বোধন করে চিঠির উত্তর দেন। পরিচয়ের সূত্রপাত হলো এই প্রথম। তারপর অমিয় চক্রবর্তীর সঙ্গে কবির সশরীরে দেখা বালিগঞ্জের মে-ফেয়ার রোডে প্রমথ চৌধুরীর বাড়িতে। তখন কবিকে দেখে আপ্লুত অমিয়। তাঁর প্রভাব অমিয় চক্রবর্তী জীবনকে বদলে দিল। আস্তে আস্তে পরস্পরের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। একসময় অমিয়'র শোকের যন্ত্রণা থেকে কিভাবে শান্ত থাকতে হয় সে ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ তাকে উদ্ধার করেছিলেন। এরপর রবীন্দ্রনাথই তাকে কাছে টেনে নিলেন-করলেন তার সাহিত্য সহকারী।

অমিয়চন্দ্রের কাজ হল রবীন্দ্রনাথের বিদেশী চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়া, বইয়ের প্রুফ দেখা, কবিতা কপি করা, অতিথিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, বাংলা ও ইংরেজি পান্ডুলিপি প্রকাশের জন্য সাজিয়ে রাখা, ইন্টারভিউ দেওয়া ইত্যাদি। প্রত্যেকটি কাজে রবীন্দ্রনাথ মুগ্ধ হয়েছিলেন। তাই বিদেশীদের অভ্যর্থনার ভার তার ওপর ছেড়ে দিয়ে কবি নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন।

অমিয়চন্দ্রকে সংসার জীবনে প্রবেশ ঘটিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ডেনমার্কের বিদূষী রমনী হেয়রডিস সিগরের সঙ্গে তার বিবাহ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কবি এই রমনীর নাম দিয়েছিলেন হৈমন্তী। এই 'হৈমন্তী'ই পরে যথার্থ একজন আশ্রমিকা হয়েছিলেন। এদিকে সাহিত্য সহকারী হিসেবে অমিয়চন্দ্র কবির ভ্রমণ সঙ্গী হবার সুযোগ পেয়েছিলেন বারবার। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রবীন্দ্রনাথের সহকারী হয়েছিলেন অমিয়। বিদেশে ভ্রমণকালে অমিয়চন্দ্রের সেবায় ও সাহচর্যে মুগ্ধ হয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। বাহিরে তোমার যা পেয়েছি সেবা/ অন্তরে তাহা রাখি/ কর্মে তাহার শেষ নাহি হয়, প্রেমে তাহা থাকে বাকি।'

১৯৩৩ সালে রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অমিয় চক্রবর্তী অক্সফোর্ডে গবেষণা করতে যান। কর্মসূত্রে যোগ না থাকলেও রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনের সঙ্গে অমিয় চক্রবর্তীর সম্পর্ক আমৃত্যু অটুট ছিল। কবির কাছে অমিয় চক্রবর্তীর সাহচর্য যেমন প্রয়োজন ছিল না তেমনি আবার অমিয় বাবুর জীবনের রবীন্দ্রনাথের ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল। রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যের ফলে অমিয়চন্দ্র হতে পেরেছেন বিশ্বপথিক-রবীন্দ্রনাথের যথার্থ উত্তর সাধক এবং মানবসন্তান। অমিয় চক্রবর্তী স্বীকার করেছেন, রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনের কাছে যা পেয়েছি তা আমার অন্তরের পাথেয়।

6 months ago


Durga Pujo: রামমোহন থেকে প্যারীমোহন, মনীষীদের পুজোর খাবারের কথা শুনলে চোখ কপালে উঠবে

সৌমেন সুরঃ আর কিছুদিন পরে দুর্গাপুজো। পুজোয় ভালোমন্দ খাওয়া দেওয়ার ওপর বাঙালির ভীষণ নজর। পুজোর পাঁচটা দিন ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বিভিন্ন পদের খাওয়া দাওয়ায় বাঙালি সর্ব্বোচ্চ স্থানে বিরাজ করছে। এককথায় বলা যায় বাঙালি বড্ড ভোজনরসিক। ভোজন রোশনে প্রিয় খাবারের বৈচিত্রে বাঙালি দু'কদম এগিয়ে। খাওয়া দাওয়ায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষ তো আছেই, তবে অবাক হতে হয় কিছু মনীষীদের খাওয়া দাওয়া শুনলে।

শুরু করি রামমোহন রায়কে নিয়ে। তিনি যেমন সুপুরুষ ছিলেন তেমনি খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ছিলেন সবার উপরে। একটা গোটা পাঠা খেয়ে ফেলা তাঁর কাছে কোনও ব্যাপারই ছিল না। দিনে দুধ খেতেন দশ/বারো সের। এছাড়া পঞ্চাশটা আপ আর এক কাদি নারকেল তার কাছে অতি সাধারণ ব্যাপার ছিল। অন্যদিকে প্যারীমোহন সরকার ও বিদ্যাসাগর মশায় ভোজনে কম যান না। প্যারীমোহন জলখাবার সারতেন এক ধামা মুড়ি আর শ'খানেক মূল খেয়ে। কোনও এক নিমন্ত্রণ বাড়িতে বাজি ধরে-সমস্ত খাওয়া দেওয়ার পর একসের ছানাবড়া খেয়েছিলেন। বিদ্যাসাগর মশায় ছিলেন তার যোগ্য সহচর। একটা পাঠ দু-বন্ধু মাইল অর্ধেক সাবাড় করে ফেলতেন। অন্যদিকে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কম যান না, পেট ভরে পোলাও মাংস খাবার পর দু'সের রসগোল্লা অম্লান বদনে খেয়ে ফেলতেন।

আমিষ ও নিরামিষ দুটোই দুটোতেই বাঙালির রান্নার খ্যাতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। পরাধীন ভারতের ইংল্যান্ডের রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড যুবরাজ থাকাকালীন ভারত ভ্রমণের সময় ভবানীপুরে এক নিমন্ত্রণ বাড়িতে বাঙালির নানা পদের রান্না তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। প্রখ্যাত লেখিকা পার্ল বাক বাঙালির রান্নার প্রশংসা করে গেছেন। শোভাবাজার রাজবাড়িটির রাজা নবকৃষ্ণদেব তাঁর মাতৃশ্রাদ্ধে যে বিপুল খরচ করেছিলেন সেইসময়ে, শুনলেই চক্ষু চড়কগাছ।  খরচ করেছিলেন আনুমানিক দশ লক্ষ টাকা। নিমন্ত্রিত অতিথিদের সব আহার্য কলকাতার সব দোকান থেকে জোগাড় করা হয়েছিল। তাতে কলকাতার সমস্ত মুদির দোকানের চালডাল ফুরিয়ে গিয়েছিল। কুমোরটুলির একটি মাটির হাঁড়িও অবশিষ্ট ছিল না। ছিল না কলাগাছের একটি পাতা। নবকৃষ্ণের এই নিমন্ত্রণ এখনও ইতিহাস বিখ্যাত হয়ে আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে খাওয়া আর খাওয়ানোর ব্যাপারে বাঙালিদের মতো ভোজন বিলাসী ও ভোজনরসিক জাত সত্যিই বিরল। তবে এখন আর নিমন্ত্রণের তেমন বহর নেই। আছে হারিয়ে যাওয়া কিছু সুখকর স্মৃতি। তবে বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাচ্ছে সেই সুখকর স্মৃতিও।

6 months ago
Smile: হাসিটুকু ছাড়া আর আছে কী!

সৌমেন সুরঃ সঙ্গীত শিল্পী তালাত মামুদের কন্ঠে 'যে আঁখিতে এত হাসি লুকানো'- এই গানেই বলে দেয় হাসতে গেলে দাঁতের সাহায্য না পেলেও চলে। চোখও হাসতে জানে। চোখও কথা বলতে জানে। বর্তমানে মানুষের মন থেকে হাসি একেবারে উধাও হয়ে গেছে। চারিদিকে এত সমস্যা এত টেনশন, মানুষ হাসবে কখন? হাসি এখন অস্তাচলে।

একটা গল্প দিয়ে বিষয়বস্তুর ভিতরে যাওয়া যাক। এক মহতী সাধুবাবুর কাছে একদিন একটা লোক দেখা করতে আসে। লোকটি সাধুকে বলে, দেখুন সাধুবাবা, আমি ইদানীং হাসতে ভুলে গেছি। সবসময় আমার মনের মধ্যে রাগ। কাউকে আমার সহ্য হয় না। এই রাগের কারণেই আমার জীবন থেকে সমস্ত সুখ অন্তর্ধান করেছে। আমি যেন সবার কাছে রামগরুরের ছানা। আমার জীবনে হাসিকে কিছুতেই আহ্বান জানাতে পারছি না। কেন? কেন আমার এই দুর্দশা? এর থেকে কি কোনও পরিত্রাণ নেই!

সাধুবাবা সব শুনে বললেন, দেখো বাবা, আমার হাসি আনন্দের রহস্য আমার জানা নেই। তবে আমি তোমার ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারি। লোকটি একটা ভালো কিছু শোনার  আশায়, সাধুবাবার দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে। সাধুবাবা বলে ওঠেন, তোমার ব্যাপারে আমি যা ভেবে দেখলাম, তাতে দেখতে পাচ্ছি, তোমার আয়ু মাত্র সাতদিন আছে। এই কথা শুনে লোকটি থম মেরে যায়, তারপর একরাশ চিন্তা নিয়ে ওই স্থান ছেড়ে চলে যায়। এরপর দিন যায় একটার পর একটা। সাতদিনের দিন লোকটি সাধুবাবার কাছে এসে প্রণাম করে বলে, বাবা- আমি আপনার কাছে মৃত্যুর আগে শেষ দেখা করতে এলাম। সাধুবাবা ওর প্রফুল্ল মুখ দেখে প্রশ্ন করেন, এখন কেমন আছো? লোকটি বলে, ভালো আছি। বাবা, আমি ভেবে দেখলাম, আয়ু যখন আমার সামান্য, তখন আর রাগারাগি করে কি লাভ! হাসি আনন্দ নিয়ে বাকি কটা দিন কাটিয়ে দিই। সাধুবাবা মনে মনে হাসলেন।

আসলে সাধুবাবার কৌশলে লোকটির জীবনে হাসি ফিরে এসেছিল। কিন্তু কজনেরই বা এমনই হয়! সবক্ষেত্রে হয় না। সংসারের যাঁতাকলে পড়ে আর অর্থ সংগ্রহের নেশায় আমাদের জীবনে কখনও কখনও হাসি অজ্ঞাতবাসে চলে যায়। জীবনে আমাদের হাসিটুকু ছাড়া কীই বা আছে! জন্মের পর ভাষাহীন মুখে যে নিষ্পাপ হাসিটুকু বর্ষিত হয়েছিল, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি- সেই হাসি যেন সারাটা জীবন বর্ষিত হয়েছিল, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি- সেই হাসি যেন সারাটা জীবন বর্ষিত হয় মানব জীবনে, আর জীবনটা হাসিতেই যেন পূর্ন থাকে। তথ্যঋণ- চন্ডিচরন দাস

6 months ago


DurgaPuja: পুজোর বাজার (পর্ব ১)

প্রসূন গুপ্তঃ বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন। তা হলেও দুর্গাপুজো মানেই শ্রেষ্ঠ উৎসব। সারা বছরে এই সময়ে অর্থাৎ আশ্বিন মাসে বা কখনও কার্তিক মাসেও বাঙালি হিন্দুরা ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করে থাকে। বলতে দ্বিধা নেই এমন অসাম্প্রদিক উৎসব বোধহয় আর কোথাও দেখা যায় না। পুজো তার নিজের মণ্ডপে কিন্তু বাকি সময়ে হৈচৈ, খাওয়া দাওয়া। বাংলার এমার্জেন্সি কাজ ছাড়া বাকি সমস্ত স্কুল কলেজে ছুটি। একই সাথে কলকারখানাতেও থাকে ছুটির মেজাজ। সরকারি, বেসরকারি অফিসগুলিতে পুজোর ৪ দিন অবশ্যই ছুটির মেজাজ। অনেকেই হয়তো মণ্ডপে মণ্ডপে না ঘুরে পরিবারকে সময় দেয় এই চারটি দিন। বাড়িতে রোজগার মতো খাবার তৈরি হয়। আজকাল অনেকেই চার দিনই হয়তো বাইরে খাওয়ার ব্যবস্থা রাখে অবশ্যই ফের বলতেই হয় পকেটের হাল বুঝেই। অনেকেই পূজোর বোনাস পায়। অবিশ্যি তার অনেকটাই বাড়ির জামাকাপড় ইত্যাদি কেনাকাটাতে খরচ হয়। এই রাজ্যে বসবাসকারী অবাঙালিরাও এই উৎসবে ওই একই মেজাজে হাজির হয়।

আজকাল জিনিসপত্রের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে করে যা ইচ্ছা কেনা হয়তো সম্ভব হয় না কিন্তু কিছু কেনাকাটাতো করতেই হয়। বাড়ির গিন্নীবান্নিরা কিন্তু অনেকেই সারা বছরের খরচের থেকে টাকা বাঁচিয়ে রাখে পূজোতে কেনাকাটার জন্য এবং এটাও বাস্তব আজকের দুর্মূল্যের বাজারে সস্তায় এই শহরগুলিতে নিশ্চিত কেনাকাটা করা যায়।

এক সময়ে পূজোর আগে খবরের কাগজগুলিতে কাপড়ের দোকান থেকে জুতোর দোকানের বিজ্ঞাপন থাকতো প্রায় রোজই কিন্তু আজকে অনেকটাই কমেছে। রেডিও থেকে টিভিতেও বিজ্ঞাপন যা আগে থাকতো তাও অনেকটাই কমে গিয়েছে। বিজ্ঞাপনের দর যে অনেক। কলকাতার বিভিন্ন খাবারের দোকানের বিজ্ঞাপন আজকে খুব একটা দেখা না। তবুও বাঙালির দুর্গা পূজো কিছু না থাকলেও কিছু তো থাকবেই। (চলবে)

6 months ago
Special: অরবিন্দ ঘোষের ছেলেবেলা

সৌমেন সুর: জন্মের সময় পিতা কৃষ্ণধন ঘোষ শিশু অরবিন্দের নাম রাখেন 'অরবিন্দ অ্যাকরয়েড ঘোষ। পরে স্বয়ং অরবিন্দই নিজের নামের থেকে অ্যাকরয়েড শব্দটি বাদ দেন। পিতা কৃষ্ণধন 'অরবিন্দ' নাম রেখেছিলেন পদ্ম- এর নাম অনুসারে। তাঁর সুপ্ত বাসনা ছিল, তাঁর সন্তানেরা এক একজন দেশের শতদল হয়ে ফুটে উঠুক। আলোকে যেমন চেপে রাখা যায় না, তেমনি প্রতিভাকে জোর করে চেপে রাখা যায় না। সেটা অরবিন্দের মেধা দেখে বুঝতে পেরেছিলেন- ল্যাটিন ভাষার সু পণ্ডিত মিঃ ড্রয়েট। শিশু অরবিন্দ অসামান্য মেধায় খুব কম সময়ের মধ্যে শেক্সপিয়ার, শেলী,  কিটস ও  অন্যান্য ইউরোপীয় লেখকের লেখা পড়লেন এবং আত্মস্থ করলেন। এই অসাধারণ মেধা দেখে মিসেস ড্রয়েট চেয়েছিলেন খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করতে। কিন্তু মিস্টার ড্রয়েট তাঁকে নিরস্ত করেন, যেহেতু শিশু অরবিন্দের ধর্ম ও দর্শনের প্রতি আগ্রহ ছিল না সে সময়।

শিশু অরবিন্দকে যখন লন্ডনে 'সেন্ট পলস স্কুলে' ভর্তি করে দেওয়া হয় তখন স্কুলের হেডমাস্টার অবাক হয়ে গেলেন শিশু অরবিন্দের ল্যাটিন ভাষায় ব্যুৎপত্তি দেখে। উনি এবার চেষ্টা করলেন জটিল গ্রীক ভাষা শেখাতে। কি আশ্চর্য, যে ভাষা শিখতে মানুষের দম ছুটে যায়, সে ভাষা অরবিন্দের কাছে সহজ সরল। জীবনের প্রথম ২১ বছরের মধ্যে শেষ ১৪ বছর কেটেছিল ইংল্যান্ডে। প্রথম সাত বছর ভারতে কাটলে ও তার মধ্যে দু'বছর কেটেছিল কনডেন্ট স্কুলে। ইংল্যান্ডের প্রতি অরবিন্দের কোনও আকর্ষণ জন্মায়নি। শুধুমাত্র সাহিত্য ছাড়া। বরঞ্চকিশোর অরবিন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফ্রান্স। সেখানকার মানুষের শিক্ষা ও আন্তরিকতার জন্য।

দেশে ফিরে আসার পর কিশোর অরবিন্দের পাশ্চাত্য রীতি থেকে বেরিয়ে আসতে একটু সময় লাগে। এরপর আমরা পায়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন অরবিন্দকে। তাঁর মুখ থেকে শোনা যায় ভারতীয় সংস্কৃতির কথা। তবে ভারতীয় সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিলেও ইউরোপীয় সংস্কৃতিকে অসম্মান করেননি। বরং উভয় সংস্কৃতির মিলনের ফলে মনের গভীরতা আরো উদার হয়। অরবিন্দের পিতা আদ্যোপান্ত সাহেব হলেও নিজেও দেশকে কোনদিন অস্বীকার করেননি। ধীরে ধীরে কিশোর অরবিন্দের মনে যে সব প্রেমের যে বীজ বপন হয় তা তাকে পরবর্তীতে একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক আদর্শ বিপ্লবী রূপে সাহায্য করে।  তথ্যঋণ তীর্থ মিত্র।

6 months ago
Cinema: সিনেমার আবির্ভাব কলকাতায় কিভাবে!

সৌমেন সুর: ১৮৯৬ সাল। কলকাতার হাতিবাগান অঞ্চলে বাঙালি বাবুদের ভিড়। কি নেই হাতিবাগানে! নাটক, কবিগান, তরজা আরো কত কি! সেই সময় গিরিশচন্দ্র ঘোষ স্টার, তাঁর নাটকের জন্য। শুধু গিরিশচন্দ্র নয়, পাশাপাশি রসরাজ অমৃতলালের নাটক। চারদিকে গুঞ্জন। কোন নাটক কেমন, কাদের অভিনয় ভালো হচ্ছে, এমনি সব আলোচনায় মুখর উত্তর কলকাতা। একদিন স্টার থিয়েটারে স্টিফেন সাহেব এসে হাজির। তার কাঁধে ঢাউস একটা ব্যাগ দেখে কৌতুহল সবার। ওই মত্ত ব্যাগে কি এমন গুপ্তধন লুকিয়ে আছে সেটা দেখতে চাই উৎসুক সবাই। জানা গেল ওই ব্যাগের যন্ত্রে জীবন্ত ছবি ধরা আছে। যা দেখে সবাই অবাক হয়ে যাবে।

শুরু হলো বায়োস্কোপ উত্তরের কলকাতায়। স্টার থিয়েটারে নাটকের ফাঁকে ফাঁকে অনেকদিন ধরে বায়োস্কোপ দেখানো হয়েছিল। কিন্তু প্রচারে যত চমকেই থাকুক না কেন, স্টিফেন সাহেব যে বায়োস্কোপের প্রথম প্রদর্শক, এই প্রমাণ মেলেনি। তবে টিফিনের আগে কলকাতায় ফাদার লাঁফো প্রথম বায়োস্কোপ প্রদর্শন করেন। তিনি অধ্যাপক ছিলেন। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াতেন। কয়েকজন ছাত্রকে তিনি দেখিয়েছিলেন প্রথম জীবন্ত ছবি। তার প্রচারের তেমন কিছুই ছিল না। তাই তাঁর আয়োজন প্রসার লাভ করতে পারেনি। তবে জীবন্ত ছবি দেখানোর ব্যাপারে দাবিদার প্রথম তিনিই। অর্থাৎ স্টিফেনের আগে। একদিন স্টিফেন সব সরঞ্জাম নিয়ে ফিরে যান নিজের দেশে। একটা ভরা শূন্যস্থানে হঠাৎ চমক দেখা দিলো। হীরালাল সেন জীবন্ত ছবি নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরীর কথা ভাবছেন। কিন্তু ক্যামেরা তেমন কোথায়! একদিন একটা বিজ্ঞাপন হীরালালকে উচ্ছ্বসিত করলো। একটা বিদেশি কোম্পানি বায়োস্কোপ ক্যামেরা বিক্রি করবে। অনেক কষ্টে টাকা-পয়সা জোগাড় করে, বিদেশ থেকে সেই ক্যামেরা নিয়ে এলেন। হীরালালের মনের এই খিদে তৈরি হয়েছিল স্টিফেনের কর্মকান্ড দেখে।

চললো সাধনা। ১৮৯৮ সাল। দেশের সামনে একটা তাৎপর্যময় সময়। হীরালাল ও তার দাদা মতিলাল সেনের উদ্যোগে তৈরি হলো রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি। ১৯০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উক্ত ব্যানারে ছবি দেখালেন। ১৯০১ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রদর্শিত হয় হীরালাল সেনের ক্যামেরায় বঙ্কিমচন্দ্রের 'সীতারাম' উপন্যাস, এরপর গিরিশচন্দ্রের ' মনের মতন', ক্ষীরোদ প্রসাদের 'আলিবাবা'। সবটাই নির্বাচিত অংশ। ১৯০৪ সালে অনেক মেহনত করার পর হীরালাল সেন দু ঘন্টার একটি কাহিনী চিত্র তৈরি করেন। এরপর ১৯১৭ সালে হীরালাল সেন মারা যান। এর কয়েক মাস আগে দাদা সাহেব ফালকে তৈরি করেন ' সত্যবাদী রাজা হরিশচন্দ্র। এটিই প্রথম ভারতীয় কাহিনীচিত্র। এর পরিবেশক ছিল ম্যাডান কোমকোম্পানি তবে ১৯১৯ সালে তৈরি হয় প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাহিনী চিত্র বাংলায় - ' বিল্বমঙ্গল'। এটি নির্বাক কাহিনীচিত্র ছিল। এভাবেই অনেক সাধনার মধ্যে দিয়ে কলকাতায় সিনেমার আবির্ভাবে সূচনা হয়।

6 months ago


Rabidranath: একটি রাবীন্দ্রিক জার্নি ফিরে দেখা

সৌমেন সুর:  রবীন্দ্রনাথ জীবনের অনেকটা সময় বাংলাদেশের শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসরে কাটিয়েছেন। এখানে তিনি বহু রচনা করেছেন- যেমন, কবিতা, গল্প এবং পত্রাবলী। কবির বহু রচনায় এই স্থানগুলোর বর্ণনা আমরা পাই। বাংলাদেশের এই জায়গাগুলোয় যেতে ভারত থেকে দুভাবে শিলাইদহ শাহজাদপুর ও পতিসরে যাওয়া যায়। প্রথমতঃ কলকাতা থেকে বেনাপোল যশোর হয়ে বাসে বা ট্রেনে কুষ্টিয়া। এই কুষ্টিয়ায় করুন রাত্রি যাপন। কুষ্টিয়ার ঠাকুরবাড়ি, লালনের আখড়া দেখে দিন। সকালবেলা অটোতে বা ছোট গাড়িতে করে শিলাইদহে কুঠিবাড়ি, কাছারি বাড়ি, পদ্মার ঘাটে ঘুরে আবার চলে আসুন কুষ্টিয়ায়। 

কুষ্টিয়া (ভেড়ামারা) থেকে ট্রেনে নাটোর হয়ে সান্তাহারে নেমে পাশের নওগাঁ শহরে রাত্রিযাপন। নওগাঁ থেকে পরদিন সকালে অটো বা ছোট গাড়িতে করে রানিবাঁধ হয়ে পতিসর যাওয়া যায়। তারপর নওগাঁ থেকে বাসে বগুড়া হয়ে সিরাজগঞ্জ, সেখান থেকে আবার বাসে শাহজাদপুর। শাহজাদপুরে কুঠিবাড়ি ও মখদুম মসজিদ দেখে বাসে করে কুষ্টিয়ায় ফিরে আসা। আবার উল্টোদিকে কুষ্টিয়া থেকে বাসে প্রথমে শাহজাদপুর দেখে বগুড়ায় গিয়ে রাত্রিযাপন করতে পারেন। বগুড়া থেকে বাসে রানীবাঁধ গিয়ে ছোট গাড়িতে করে পতিসর দেখে নেওয়া। ফেরার পথে নওগাঁয় অবস্থান করলে পাহাড়পুর দেখে নিতে পারেন। তারপর নওগাঁ বা বগুড়া থেকে সরাসরি বাসে কুষ্টিয়া হয়ে যশোর।

এই জার্নিটা যারা রবীন্দ্রপ্রেমী, তাদের সুবিধার্থে লিখে জানালাম। একবার পৌঁছলে আপনার মনের দরজায় কবি কড়া নাড়বেই, এ আমি হলফ করে বলতে পারি। ভ্রমনপিপাসু যারা তাদের পক্ষে রবীন্দ্রনাথকে কাছে পাবেনই। শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসরে রবীন্দ্রনাথের বহু সমৃতি জড়িয়ে আছে। এই স্থানে পৌঁছালেই আপনার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

                                                                                                                                                                                                               তথ্যঋণ-নিখিল দাস।

6 months ago
Konkan Railway: ভারতীয় রেলের হয়েও নিজস্বতা বজায় করে চলেছে কোঙ্কণ রেল

কোঙ্কণ রেল নামটা শোনা থাকলেও অনেকেই হয়তো জানেন না যে এটি কোথায় বা এটা কি ভারতীয় রেলের কিনা?

আজ আমরা জানব সেরমই কিছু অজানা তথ্য। কোঙ্কন রেল হল ভারতীয় রেলের ১৯ তম জোন । যার সদর দফতর হল মুম্বই-এর বেলাপুর। ভারতের কোঙ্কন উপকূলে তার উপকূলীয় শহর, শহর এবং গ্রামগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য একটিও রেল যোগাযোগ নেই।


এমনকি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারত শাসনকারী ব্রিটিশরাও এই পথে রেলপথ নির্মাণ করেনি। প্রথম প্রস্তাবটি ১৯২০ সালে জরিপ করা হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে এই অঞ্চলে রেলওয়ের উন্নয়নের জন্য সমীক্ষা করা হয়েছিল । ১৯৯৮ সালের ২৬ শে জানুয়ারি  মহারাস্ট্রের রোহা থেকে কর্ণাটক রাজ্যের থকুর স্টেশন পর্যন্ত চলাচল শুরু হয়।


মোট ৭৫৬.২৫ কিমি এই যাত্রাপথ। মহারাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে এর দৈর্ঘ্য ৩৬১ কিলোমিটার (২২৪ মাইল), কর্ণাটক হয়ে ২৩৯ কিলোমিটার (১৪৯ মাইল) এবং গোয়ার মধ্য দিয়ে ১৫৬.২৫ কিলোমিটার (৯৭.০৯ মাইল) ।  রোহা থেকে  থকুর পর্যন্ত বিস্তৃত সমগ্র .৭৪১ কিলোমিটার পথটি ২০২২ সালের মার্চ মাসে বিদ্যুতায়িত হয়েছে । সমগ্র রেলপথটিতে ৯১ টি টানেল ও প্রায় ১৮০০ উপর রেল ব্রিজ রয়েছে।  ১৯তম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যা গোয়া ও মুম্বইয়ের  মধ্যে চলাচল করে এই পথ দিয়েই যাতায়াত করে। 

উক্সি এবং ভোকে স্টেশনের মধ্যে অবস্থিত কোঙ্কন রেলওয়েতে অবস্থিত কার্বুদে টানেল , ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল। কার্বুদে টানেল হল কোঙ্কন রেললাইনের দীর্ঘতম টানেল। এই পথে মালবাহী ট্রাক রেলে করে পরিবহন করা হয় যা RORO( Roll On/ Roll Off) নামে পরিচিত ।


এই পরিবহন মহারাষ্ট্রের কোলাড থেকে গোয়ার ভারমা পর্যন্ত চলে। এই ট্র্যাকেই অ্যান্টি

কলিশন সিস্টেম চালু করা হয়। বর্তমানে যে সকল ট্রেন চলাচল করে এই পথে তার মধ্যে অন্যতম

ট্রেন নং ১২৪৩২/১২৪৩১ হযরত নিজামুদ্দিন – তিরুবনন্তপুরম সেন্ট্রাল – হযরত নিজামুদ্দিন রাজধন এক্সপ্রেস (ত্রি-সাপ্তাহিক) ...

ট্রেন নং ১২১৩৩/১২১৩৪ মুম্বই সিএসটি – ম্যাঙ্গালুরু জং – মুম্বাই সিএসটি এক্সপ্রেস (দৈনিক) ট্রেন নং ১২১৩৩ মুম্বই সিএসটি – ম্যাঙ্গালুরু জং এক্সপ্রেস। ...

ট্রেন নম্বর ১৬৩৩৩/১৬৩৩৪ ভেরাভাল - তিরুবনন্তপুরম - ভেরাভাল এক্সপ্রেস (সাপ্তাহিক)



6 months ago