
মনি ভট্টাচার্য: অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) রাজ্য রাজনীতির (Politics) একটা বৃহৎ কাণ্ডারির নাম? বৃহৎ বিশেষণ কি বাড়াবাড়ি লিখছি? আমি ভুল লিখছি কিনা সেটা আপনারা, পাঠকরা বিচার করবেন। কিন্তু তৃণমূলের (TMC) কাছে, অনুব্রত মণ্ডল যে একজন রাজ্য রাজনীতির বৃহৎ চরিত্র, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে স্বয়ং শাসক দল তৃণমূল। না হলে কি দীর্ঘ ৮ মাস গ্রেফতারির পরেও তিহার জেলে থেকেও জেলা সভাপতি থাকা যায়? সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য রাজনীতি-সহ গোটা দেশে এমন কোনো নজির নেই। কোন নেতা জেলে থেকে সামলেছেন সংগঠন, বিশেষ করে শাসক দলের জেলা সভাপতির মতো পদ? শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকের পর তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে অনুব্রতই যে বীরভূমে জেলা সভাপতি থাকবেন সে কথা জানিয়ে দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
অনুব্রত মণ্ডল কোনও বিধায়ক নয়, কোনও সাংসদ নয়, কোনও মন্ত্রী নয়। অথচ অনুব্রত মণ্ডলের নামে নাকি একই গ্লাসে জল খেয়েছে, ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তা, দলীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এমন অভিযোগ বারবার করছে বিরোধী শিবির। কারণ একটাই, মাননীয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভরসা যোগ্য ভাই তিনি, কেষ্ট মণ্ডল। একটু খোঁজ নিলেই জানা যাবে, অনুব্রতর রাজনৈতিক গুরু প্রদ্যুৎ গুহ, যিনি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একদা আপ্ত সহায়ক ছিলেন।
প্রদ্যুৎ বাবুর হাতে ধরেই রাজনীতির পাশাপাশি বামেদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অনুব্রত। নানুর-সহ বীরভূমে বামেদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসময়ের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। তারপর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। বছর পাঁচেকের মধ্যে বদলে যায় অনেক চিত্র। সে বদলে যাওয়া চিত্র তো এখন সবার চোখের সামনেই। যত বেশি কেন্দ্রীয় সংস্থা সক্রিয়, তত বেশি করে ছাড়ানো হচ্ছে পিঁয়াজের খোসা।
এই বাংলার সাড়ে ১০ কোটি মানুষের এমন কেউ কি আছেন যে অনুব্রত মণ্ডলকে চেনেনা না। এমনকি তাঁর গুনের কীর্তি পৌঁছেছে দিল্লিতেও। কান পাতলে এই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ২০২২ সালে ১১ অগাস্টে গরু পাচার মামলায় সিবিআই কেষ্টকে গ্রেফতার করে। বারবার বিভিন্ন অজুহাতে সিবিআইয়ের জেরা এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ ছিল, সে কারণেই বীরভূমের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি অনুব্রতকে বাড়ি গিয়েই গ্রেফতার করে সিবিআই। সময় গড়িয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে সক্রিয় সিবিআই-ইডি। কিন্তু আজও যেন না থেকেও বীরভূমের আছেন তিনি।
যদিও পঞ্চায়েত ভোটের স্বার্থে ওই জেলায় 'অবজারভার' স্বরুপ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম ও পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। এই তিন জনের কেউই জেলার নেতৃত্ব নয়। এদিকে কাজল শেখকেও চুপ থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করার বিষয়, শত শত অভিযোগ থাকার পরেও, প্রায় ১৬ পক্ষ জেলে কাটানোর পর আজও অনুব্রত বীরভূমের 'দোর্দণ্ডপ্রতাপ' জেলা সভাপতি। যিনি কিনা সম্প্রতি ইডিকে জানিয়েছেন, আমার সঙ্গে দল আছে। সেই প্রতিদান কি দল ফিরিয়ে দিল রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকে? প্রশ্ন আসছে সাধারণের মনে।
তাই যদি হয়, এতে কি আমাদের আপত্তি থাকার কথা? না, একেবারেই নয়। কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর সত্যিই জানতে ইচ্ছে করে? কুন্তল ঘোষ হুগলি জেলার যুব তৃণমূলের নেতা ছিলেন, শান্তনু বন্দোপাধ্যায় হুগলির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন শাসক দলের মহাসচিব। অনুব্রতর পাশাপাশি অন্য একটি মামলা অর্থাৎ শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন উল্লিখিত এই তিন জন। অথচ তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি কেবল তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিল কেন?
বীরভূম কী এমন জেলা? যে জেলার সভাপতি এত ক্ষমতাবান! রাঙামাটির এই জেলা থেকে গরু পাচারে অভিযুক্ত হিসেবে একাধিক ব্যক্তি এখন গারদের পিছনে। বিরোধীরা বলেন, 'এই জেলায় আবার নাকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে উন্নয়ন।' এখন গরু পাচার, উন্নয়ন এবং দীর্ঘদিন জেলে থাকার পরও অনুব্রতর জেলা সভাপতি থেকে যাওয়া, বিষয়গুলিকে একসঙ্গে আঁকুন। রাজনীতির একটা বৃহৎ চেহারাই পাবেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে অনুব্রত রাজ্য রাজনীতির একটা বৃহৎ নাম, বিষয়টা পোয়েটিক জাস্টিস নয় কি?
সম্ভাবনা সত্যি করেই লোকসভায় খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ। মানহানির মামলায় সুরাতের এক আদালতের রায় সামনে আসতেই জল্পনা শুরু হয়। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের কোপে পড়বেন কি কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি। সেই জল্পনাকে সত্যি করেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে লোকসভার সচিবালয়। আর এই খবর চাউর হতেই কেন্দ্র তথা বিজেপির সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। ট্যুইটে তাঁর খোঁচা, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর নতুন ভারতে বিরোধী দলের নেতারা বিজেপির মুখ্য টার্গেট! ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাস নিয়েও বিজেপি নেতারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। আর শুধুমাত্রে বক্তব্যের কারণে বিরোধী নেতার পদ খারিজ হয়। সাংবিধানিক গণতন্ত্রের আরও একটা নিকৃষ্টতম ঘটনার সাক্ষী হলাম আজ।'
In PM Modi’s New India, Opposition leaders have become the prime target of BJP!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 24, 2023
While BJP leaders with criminal antecedents are inducted into the cabinet, Opposition leaders are disqualified for their speeches.
Today, we have witnessed a new low for our constitutional democracy
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই খোঁচার মধ্যেই শুক্রবার ট্যুইটে সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধীও। তিনি লেখেন, 'আমি দেশের আওয়াজের জন্য লড়াই করছি। প্রতিটি মূল্য চোকাতে প্রস্তুত।' ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সরব সিপিএম, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলোও।
मैं भारत की आवाज़ के लिए लड़ रहा हूं।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) March 24, 2023
मैं हर कीमत चुकाने को तैयार हूं।
প্রসূন গুপ্ত: সময়টি সম্ভবত ২০১৯, কোনও একটি সভায় নিজের ভাষণে রাহুল গান্ধী বলেন যে, 'সব চোরেদের নাম কেন মোদী মোদী মোদী?' আক্রমণের কেন্দ্রে কে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি? এর আগেও গান্ধী পরিবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তি আক্রমণ করেছে। 'চৌকিদার চোর হ্যায়' স্লোগান তুলে হাওয়া গরম করতে চেয়েছেন রাহুল গান্ধী। একইভাবে সোনিয়া গান্ধী 'মৌত কি সওদাগর' বলে খোঁচা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। এটা কি পরোক্ষে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ নয়? প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি শিবির।
যদিও এই আক্রমণে হিতে বিপরীত হয়েছিল। বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি। মাঝখান থেকে ২০১৯-র ভোটে আমেঠি থেকে রাহুল হেরে যান। সকলেই বলেছিল, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ রাহুলের ভুল ছিল। কিন্তু ২০১৯-র করা মন্তব্যে এবার ফ্যাসাদে সোনিয়া-তনয়। মানহানির মামলায় তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করে জেলের সাজা শুনিয়েছে আদালত। যদিও এক মাসের জন্য এই সাজা কার্যকর না করার নির্দেশ রয়েছে।
কিন্তু সংশোধিত জনপ্রতিনিধিত্ব আইন তাঁর বিপরীতে গিয়েছে। দু'বছরের জন্য জেলের সাজা মাথার উপর খাঁড়ার মতো ঝোলায় খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ। এমনই বিজ্ঞপ্তি শুক্রবার জারি করেছে লোকসভার সচিবালয়। এই সংশোধিত জন প্রতিনিধিত্ব আইন নিয়ে এই রাহুলই এক দশক আগে সরব হয়েছিলেন। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁর অর্ডিন্যান্সের পেপার ছিঁড়ে ফেলার দৃশ্য এখনও অনেকের মনে সজাগ।
তবে আলোচনা প্রবল, আইনি পথে হেঁটে সংসদের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত কি রাহুলের পক্ষে যাবে? মোদী সরকারের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে কাজে লাগিয়ে কি পালের হাওয়া নিজের দিকে টানতে পারবেন সোনিয়া তনয়। কারণ এই মুহূর্তে আদানি-কাণ্ডে সংসদে জেপিসি চেয়ে এককাট্টা বিজেপি-বিরোধী শিবির। নেতৃত্বে কংগ্রেস। পর্যবেক্ষকরা বলছেন রাহুলে উদ্যোগে হওয়া ভারত জোড়ো আন্দোলন কিছুটা হলেও কংগ্রেসের রক্তক্ষরণ বন্ধ করেছে। এই আবহে আইনি মতে রাহুলের সাংসদপদ খারিজকে রাজনৈতিকরন করতে পারবে হাত শিবির? খারগে, থারুর, জয়রাম রমেশরা শুনতে পাচ্ছেন?
যদিও একটি অংশ দাবি করছে, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে 'জাতীয় হিরো' হয়ে যেতে পারেন সোনিয়া তনয়। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের প্রবল বিরোধী আপ পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল রাহুলের পাশে। প্রতিবাদ এসেছে প্রায় প্রতিটি বিরোধী দলের থেকে বাকি মমতা। তিনিও কি মূল স্রোতের বাইরে থাকবেন? অন্তত একটা ট্যুইট করে গান্ধী পরিবারের পাশে থাকবেন?
চাকরির দাবিতে (Job Agitation) অনশনকারীরা বঞ্চিত। আখেরে সেটাই কি স্বীকার করলেন মদন মিত্র (Madan Mitra)? লাইভ ভিডিওতে তৃণমূলের ছেলেদের চাকরি দেব বলেছিলেন, কিন্তু ক্ষমা চাইলেন চাকরির দাবিতে অনশনকারীদের কাছে? কিন্তু কেন? তবে কি মদন মিত্র মেনে নিলেন শিক্ষা নিয়োগে দুর্নীতির কথা? তিনি অনশনকারীদের উদ্দেশে বললেন, 'আমি যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করার কথা বলিনি।' তবে মোটের উপর কি দাঁড়ালো? অনশনকারী প্রার্থীরা যোগ্য, আর সেটা তিনি জানেন?
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ভিডিও করে ক্ষমা চাইলেন মদন মিত্র। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাজনীতির রঙিন চরিত্র মদন মিত্র। ফেসবুকে তিনি লাইভ ভিডিওতে বলেন,'ক্ষমতা পেলে আমি তৃণমূলের ছেলেদেরই চাকরি দেব।' এই বক্তব্যের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পুরনো একটি বক্তব্যও তুলে আনেন বিরোধীরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'এই তো রাজ্যের চিত্র, মমতাকে অনুসরণ করে ব্রাত্য, ব্রাত্যকে অনুসরণ করে মদন। ' ক্ষমা চেয়ে ভিডিও বানান তিনি, বৃহস্পতিবার মদন ভিডিওতে বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের ছেলেরা ভয় পেয়ে যাচ্ছে, দল করি বলে আমার চাকরি পাওয়া অপরাধ।' তিনি এই ভিডিওতে বলেন, 'অনশনকারীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলছি, আমার কথায় ভুল বুঝবেন না, আমি যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করার কথা বলিনি।'
তিনি বৃহস্পতিবার আদালতের কাছে মানবিক হওয়ার আর্জি জানান। তিনি বলেন, 'দোষী ছাড়া পেয়ে যাক আপত্তি নেই, নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়। কামারহাটিতে কিন্তু অনেক নির্দোষ ছেলেও চাকরি পেয়েছে। যারা টাকা দেয়নি যারা পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছিল তাদের যেন কোন ক্ষতি না হয়। তাদের পরিবারের চোখের জল শুকিয়ে আসছে।'
প্রসূন গুপ্তঃ পঞ্চায়েত ভোটের আগে সমস্ত বাংলার দলগুলো নিজেদের অস্ত্রগুলো বের করবে তা আর নতুন কথা কী? তবে এই অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা বা শারীরিক নির্যাতন করা নয়, স্ট্রাটেজি দিয়ে বিরোধীদের ভোঁতা করাটাই লক্ষ্য। তবে বেদনার বিষয় ইদানিং এই স্ট্রাটেজি বড়ই অশালীন হয়ে যাচ্ছে। এটা বাস্তব যুদ্ধ ও প্রেমে কোনও বাঁধা থাকেনা কৃত্তিম অস্ত্র ব্যবহারে। ভোটটিও যুদ্ধই বটে।
সম্প্রতি সাগরদিঘি কেন্দ্রে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়লাভ করেছে কংগ্রেস-বাম জোট। ভোট কমেছে বিজেপিরও। তবে ভোটের আগেই বিরোধী নেতার কণ্ঠে যে ভাষণ শোনা গিয়েছিলো, তাতে তৃণমূলকে হারিয়ে দেওয়ার বিশেষ পরিকল্পনার কথাও ছিল। ফলে তিন বিরোধী ভোট যে বায়রন বিশ্বাসের বাক্সে পড়েছে তা এখন পরিষ্কার। এরপরেই বিতর্ক বায়রনের ভাইরাল হওয়া এক অডিও থেকে।
ভোটে জিতে শপথ নেওয়ার আগেই বায়রন নাকি সঞ্জয় জৈন নামক এক তৃণমূল নেতাকে টেলিফোনে হুমকি দিয়েছেন। যদিও ওই অডিও সিএন পোর্টাল যাচাই করেনি। বায়রনের হুমকি অডিও যা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তা অত্যন্ত কদর্য এবং অশ্লীল।একজন নতুন বিধায়ক, যাঁর এর আগে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সামান্য এবং মূলত বিড়ি ব্যবসায়ী। তিনি বিধায়ক হয়েই এতো কুৎসিত ভাষা ব্যবহার করলেন কেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
বুধবার বায়রন বিধানসভায় গিয়ে শপথ নেন। আগে ও পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে এই প্রশ্নই উড়ে আসে তাঁর দিকে। শান্তভাবে তিনি কিন্তু এমন কথা বলেননি, এমন কোনও যুক্তি দেননি। বরং বলেছেন যে কোর্টে দরকার হলে উত্তর দেবেন। জল্পনা এখানেই। তবে কি বায়রন নন আসলে এটি জোটের একটি খেলা যা বায়রনকে সামনে রাখা হয়েছে।
বায়রন কি শাঁখের করাত? তাই তো দাঁড়াচ্ছে। এটি নিয়ে তৃণমূল যদি বেশি কোর্ট কাছারি করে তবে ফের সংখ্যালঘু সেন্টিমেন্ট তাঁর দিকে হেলে পড়বে। যেমনটি হয়েছিল নওশাদ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে। আবার যদি প্রতিবাদ না করে তৃণমূল চুপ করে থাকে তবে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সমর্থকরা ভেঙে পড়বে শক্তি বৃদ্ধি হবে কংগ্রেসের। কাজেই উভয় সংকট। এই কারণেই কি মুখপাত্র কুনাল ঘোষ একটা আইনের কথা বললেন? সময় কিন্তু অপেক্ষা করবে না।
প্রসূন গুপ্ত: নরেন্দ্র মোদী হাসছেন। সম্প্রতি রাহুল গান্ধী কেরালা থেকে কাশ্মীর অবধি পদযাত্রা করলেন। রাহুল যে এলাকার উপর দিয়ে হেঁটেছেন, নিঃসন্দেহে প্রচুর ভিড় হয়েছিল। কপালে ভাঁজ পড়েছিল বিজেপি দলের। তারা ভেবেছিল কংগ্রেস প্রচুর মাইলেজ পেয়ে গেল এই সম্প্রীতি যাত্রায়। বাস্তবিকই ভাবা সম্ভব। প্রায় দুটি অধ্যায়ে ক্ষমতার শীর্ষে চলে গিয়েছিল মোদী বাহিনী। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি থেকে যথার্থই সমস্যায় আম জনতা। কিন্তু পট বদলে গেল সাম্প্রতিক তিন রাজ্যর নির্বাচনের ফলাফলে। ত্রিপুরায় ফের ক্ষমতায় বিজেপি এবং অন্য দুই রাজ্যের জোট সরকারে তারাই। প্রচারে ছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী।
অমিত শাহ হাসছেন। অদ্ভুত বিষয় এত পদযাত্রার পরেও কংগ্রেসের পাশে দেশের বিরোধীরা সবাই নেই। রয়েছে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা, লালু যাদবের দল, ডিএমকে, এনসিপি, শিবসেনা (উদ্ধব) ইত্যাদি। অন্যদিকে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের পক্ষে এসপি, আপ, তৃণমূল ইত্যাদি। কাজেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে যে তার পূর্ব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির জালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। ফলে দল সামলাবে না জোট করবে তাই নিয়েই দিশেহারা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি জানে যত ভাগ হবে, ততই সুবিধা বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার। অমিতের রাজনৈতিক চাল খুব বেশি ভোটযুদ্ধে দরকার হবে না বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
এদিকে নাড্ডাও হাসছেন। বিজেপি রেজিমেন্টেড দল এবং অবশ্যই আরএসএসের একটি ভূমিকা আছে। ইদানিং কালের ভোটে নাড্ডার রাজ্য হিমাচল প্রদেশ বিজেপির কাছ থেকে কংগ্রেসের হাতে গিয়েছে। দলের কাছে বেশ চাপে ছিলেন জেপি নাড্ডা। এবার ফের হিন্দি বলয়ে ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে লাভ বিজেপির। নাড্ডা নিশ্চয় চান তাঁর নেতৃত্বে ফের দিল্লির মসনদে আসুক বিজেপি। তাই নাড্ডা নিশ্চিন্ত ফের হয়তো সর্বভারতীয় সভাপতির পদে ফিরতে পারবেন। বিষয়টি পরিষ্কার করে সংঘ পরিবারকে জানাতে ভোলেননি নাড্ডাজি।
ভোটের এক বছর আগেই কয়েক কদম এগিয়ে থাকার জন্য আপাতত বিজেপি নেতৃত্বের মুখের হাসি চওড়া।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রথমবার ফেসবুক (Facebook) লাইভে মুখ খুললেন রাজ্য রাজনীতির অন্যতম রঙিন মানুষ মদন মিত্র (Madan mitra)। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক লাইভ করেন তিনি। ফেসবুক লাইভে বামকে সরাসরি আক্রমণ করেন কামারহাটি (Kamarhati) বিধানসভার বিধায়ক মদন মিত্র। মদনের এই লাইভ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এমনিতেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইডির সক্রিয়তায় জেলে রয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। ফলত তা নিয়েই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভ করে তিনি বলেন, 'বাম আমলের ৩৪ বছরে আমাদের অর্থাৎ তৃণমূলের কোনও ছেলে চাকরি পায়নি। কয়েক কোটি বেকার রেখেছে সিপিআইএম। সিপিআইএম চলে গিয়েছে। বেকার কি চিরকাল বেকার থাকবে?' এছাড়া ওই লাইভ তিনি আরও বলেন যে, 'নিয়ম, প্রক্রিয়া সঠিক রেখে যদি চাকরি দেওয়া হয়, সেটা অন্যায় নয়। আমি সুযোগ পেলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের আবার চাকরি দেব। ৩৪ বছর ধরে সিপিএম নিজেদের ছেলেদের চাকরি দিয়ে এসেছে। কেন্দ্রে তো বিজেপি একতরফা চাকরি দিচ্ছে।'
এই লাইভের পরেই শুরু হয় বিতর্ক। সম্প্রতি একটি সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, 'আমার কোটার চাকরি আমি তৃণমূলের ছেলেদেরই দেব। যাঁরা মাঠে যান, দেওয়াল লেখেন, আমার হয়ে ভোট চান, চাকরি তাঁরাই পাবেন।' ব্রাত্য বসুর এই মন্তব্যের পর শুরু হয়েছিল জোর বিতর্ক। এবার ব্রাত্যর পথেই হাঁটলেন মদন মিত্র।
দেখে নিন সেই ভাইরাল ভিডিওঃ
যদিও এ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সিপিআইএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী। বুধবার তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'মদন মিত্র একটু পিছিয়ে থাকছেন টিআরপিতে, তাই তিনি ফেসবুক লাইভ করে পর্দায় আসার চেষ্টা করছেন। তিনি তো ব্রাত্যর পথেই হাঁটছেন এ আর নতুন কী?' এছাড়া তিনি আরও বলেন, 'ব্রাত্য বসুকেও বা দোষ দেবেন কেন। মুখ্যমন্ত্রীই তো বলেছিলেন বেশ করেছি। ওনার পথেই ব্রাত্য, ব্রাত্যর পথেই মদন।' তিনি বুধবার শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন, 'ওঁদের আবার নীতি কী? এসবের মানে যে যত বেশি টাকা দিতে পারবে, সে চাকরি পাবে।'
বিশেষ সংবাদদাতা: আশিবার রহমান রবিবার তাদের টিসিসিএফ-এর বাৎসরিক অনুষ্ঠান পালন করলো। মজার বিষয় কে এই আশিবার অথবা টিসিসিএফ? এরা কারা? অনুষ্ঠানটি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে করা হয়েছে অথচ তৃণমূল নেতৃত্ব হয়তো এই গ্রুপ বা আশিবারকে চেনেই না, তবে এরা কারা? যেকোনও রাজনৈতিক দলের নিজস্ব আইটি বা সোশাল মিডিয়া সেল থাকে। এ ব্যাপারে ভারতে পয়লা নম্বরে রয়েছে বিজেপি এবং এরপরেই রয়েছে সিপিএম। বিজেপির আইটি সেল যথেষ্ট শক্তিশালী। সম্পূর্ণ টিমটি চালায় তাদের নিজস্ব আইটি সেল। ভালো-মন্দ সব বিষয় তারা ফেসবুকে পোস্ট করে। দ্রুত ভাইরাল হয় সেসব পোস্ট।
প্রধানমন্ত্রী নিজেও নিয়মিত সোশ্যাল নেটওয়ার্কে থাকেন। ভোটের সময়ে এই আইটি সেলের জোরালো প্রচারে ভর করে বিশেষ সুবিধা পায় গেরুয়া শিবির। এরপরেই সিপিএম, তাদেরও নিজস্ব টিম রয়েছে। মাঝেমধ্যে মজাদার পোস্ট কিংবা কার্টুন যেকোনও দর্শককে আকর্ষিত করে। তৃণমূলের অন্তত লক্ষাধিক ছেলেমেয়েরা দলের হয়ে পোস্ট করলেও কোথাও সংগঠনের অভাবে সেগুলি জনপ্রিয় হয় খুব কম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইটি সেল নিয়ে নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করলেও এখনও পর্যন্ত সংগঠিত হতে পারেনি এই সেল। কারণ অবশ্যই এই আইটি সেলা ছাড়াও বেসরকারি ভাবে অজস্র গ্রুপ আছে। অন্তত কয়েকশো অথচ তাদের একছাদের তলায় আনা যায়নি। এছাড়া ওই একদল নানা পোস্ট করে নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের পয়সায়।
এতগুলো গ্রুপের খবর দলের কাছেই কোনও বার্তা নেই। অথচ এই গ্রুপগুলির সদস্যদের অনেকেই ভোটের সময়ে পোস্টার মারে, ভোটার স্লিপ বিলি করে, বুথে বসে, বিনিময়ে কিছুই চায় না তারা। সরকারি চাকরির বিতর্কে এদের কারও নাম আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
এরা পাগলের মতো দলকে ভালোবেসে কাজ করে এবং সোশ্যাল নেটে পোস্ট দেয়, এরকমই আলোচিত গ্রুপটি। নিজেরা পয়সা চাঁদা তুলে নানা অনুষ্ঠান করে। এদের অধিকাংশই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বেকার। রবিবার এরকমই এই অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে এক সঙ্গে চলতে হবে, লড়তে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খাটতে হবে ইত্যাদি, উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোন। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, বিধায়ক ড.রানা চ্যাটার্জী এবং অবশ্যই তৃণমূলের মুখপাত্র এবং আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখলেন। কিন্তু এক ছাতার তলায় আসার বিষয়টি আলোচিত হলেও, তা কবে বা কীভাবে পর্দার আড়ালেই রইলো।
শহিদ মিনার ডিএ আন্দোলন (DA Agitation) মঞ্চে শেখ আবদুল সালামের হাতে আক্রান্ত বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি (MLA Naushad Sidiqqui)। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত সালাম তৃণমূলকর্মী এবং হাওড়ার বাসিন্দা। শনিবার সকাল থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গ দিচ্ছেন আইএসএফ বিধায়ক। জামিনের পর মুক্ত হয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াবেন। সেই মোতাবেক এদিন সকালে শহিদ মিনার মঞ্চে (Sahid Minar) হাজির হয়েছিলেন। বেলার দিকে তিনি যখন আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন, তখন টুপি পরা এক ব্যক্তি তাঁর সামনে চলে আসেন। তাঁর হাতে একটি হেলমেটও ছিল।
সেই ব্যক্তি নৌশাদকে প্রশ্ন করেন, 'আপনি সংখ্যালঘুদের জন্য কী করছেন?' বিধায়ক জবাব দেন, 'শুধু সংখ্যালঘু কেন, সংখ্যাগুরুদের জন্যও করবো।' এই জবাব শুনে নিজের জামা তুলে একটি ব্যান্ডেজ দেখান সেই ব্যক্তি। তারপরেই নৌশাদকে ধাক্কা দেন ওই টুপি পরা ব্যক্তি। এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই ব্যক্তির দিকে ছুটে যান ডিএ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।
যদিও নৌশাদ তখন সেই ব্যক্তির গায়ে হাত দিতে অন্যদের বারণ করেন। 'এটা একটা নাটক ওকে কিছু করো না' বলে চিৎকার করতে থাকেন আইএসএফ বিধায়ক। তারপরেও কয়েকজন মিলে অভিযুক্তকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিসের হাতে তুলে দেন। জানা গিয়েছে, বিধায়ককে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই ব্যক্তিকে। সংবাদমাধ্যমকে আইএসএফ বিধায়ক জানান, 'এই ঘটনার তদন্ত করবে পুলিস। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কারা ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, পুলিস দেখবে।' তৃণমূল এই ঘটনা সমর্থন করে না বলে জানান দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রবল সমালোচনায় সরব বিরোধী শিবির।
প্রসূন গুপ্ত: শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী অনেকগুলি কড়া বার্তা দিয়েছেন। আগামী পঞ্চায়েত বা লোকসভা নির্বাচনে যে তিনিই প্রচার বা জেলার দায়িত্ব দেখবেন তা পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে অনেক নেতাকেই। কারা পঞ্চায়েতে টিকিট পাবেন তাও ঠিক করবেন 'দিদি'। বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যবেক্ষক নামক পদ তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই দায়িত্ব ফের বকলমে ফিরিয়ে আনলেন মমতা। দায়িত্ব পেলেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতারাই। যেমন ববি হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব, মলয় ঘটক প্রমুখরা। যাঁরা এর আগেও নানা জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন।
অন্যদিকে কাজে মন দেওয়ার কথাও শুনতে হয়েছে নব্য তৃণমূলের সায়নী ঘোষকে। এই ব্যবস্থার ফলে দলে নতুন অল্প বয়সী কর্মীরা, যারা অভিষেককে নেতা হিসাবে কাজ করেন তারা কি কিছুটা চিন্তায়? হয়তো ভাবতে পারে ফের কি পুরাতনদের প্রতি আস্থা দিদির? কিন্তু ঘাসফুলের একটি সূত্র বলছে, বিষয়টি একেবারে তা নয়। দায়িত্বে কিছু নিশ্চয় রদবদল হয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে অভিষেকে ভরসা নেই মমতার।
তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে জানিয়েছেন, নতুনরা কাজ করুন এখনই ভোট যুদ্ধে যাওয়ার দরকার নেই বলেই খবর প্রচার মাধ্যমে। মমতা চিরকাল নতুন কর্মীদের উপর আস্থা রাখেন, তিনি বিভিন্ন সভায় তা জানিয়েছেন। তিনি জানান, যে কেউ যদি মনে করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে কী হবে বা দল চলবে কী ভাবে? তাদের কাছে স্পষ্ট বক্তব্য, কেউই চিরকালীন নয়। ইন্দিরা-রাজীবের মৃত্যুর পর কি কংগ্রেস উঠে গিয়েছে?
অন্যদিকে আগামী ২৯ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় সভা করবেন এরপর শুরু করবেন জেলা সফর। এপ্রিলের গোড়া থেকেই অভিষেকের সফর শুরু হবে। যত দূর জানা যাচ্ছে, তিনি আলিপুরদুয়ার থেকে তাঁর সফর শুরু করবেন। মনে রাখতে হবে এই জেলায় গত বিধানসভা নির্বাচনে কোনও আসন নেই তৃণমূলের। একমাত্র বিজেপি দল ভেঙে বেড়িয়ে আসা সুমন কাঞ্জিলাল ব্যতিক্রম। বার্তা কি তবে পরিষ্কার, অভিষেকই দলের সংগঠন দেখবেন।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠক কালীঘাটে (Kalighat Meet)। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে হওয়া এই বৈঠকে একাধিক সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাংগঠনিক স্তরে একাধিক রদবদল ঘোষণা হয়েছে এই বৈঠকে। শাসক দলের এই উদ্যোগকে আবার কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিজেপি (BJP)। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, 'বাংলার বর্তমান সামাজিক অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসের বৈঠক, তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক, মুখ্যমন্ত্রীর তিন দিন করে জেলা পরিদর্শন, এগুলো মানুষের কাছে কার্যত অর্থহীন।'
তাঁর খোঁচা, 'রাজ্যের পরিস্থিতি কী, আইনশৃঙ্খলা কোথায় দাঁড়িয়ে, সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে তৃণমূল রাজ্যকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর মানুষ জানে। আর সেভাবে কারও উৎসাহ নেই। সেখানে আমরা অন্য দলের সংগঠন নিয়ে কেন ভাববো।'
শুক্রবার বীরভূমের সাংগঠনিক দায়িত্বে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এদিন ঘোষণা করেছে শাসক দল। এই সাংগঠনিক রদবদলকেও খোঁচা দিয়েছে পদ্ম শিবির। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'বীরভূমের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট নিয়ে তৃণমূল তৃণমূলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ, খুন। সব নেতা সেখানেই গিয়ে, তাঁদের কোনও কেরামতি চলেনি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণার পরেও, কেষ্টকে বীর ঘোষণা করে দেওয়ার পরেও, বীরভূম সফরের পরেও তৃণমূল নেতাদের এক ছাতার তলায় আনতে পারেননি। ভবিষ্যতেও পারবে না। কারণ ওখানে কোনও রাজনৈতিক দলের মতো তৃণমূল চলে না।'
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা আন্দোলন (DA Agitation), নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড, স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে লাগাতার ধর্না আন্দোলন। পাশাপাশি সাগরদিঘির (Sagardighi Bye Poll) ফল এবং একের পর এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) জেল যাত্রা। এই আবহে সামনেই কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। আর তাই অনুব্রত-হীন বীরভূমের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। যেহেতু বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই দলের ত্রুটি-বিচ্যুতি ঢাকতে তৃণমূলকে এবার বাড়তি সময় দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বৈঠকে (Kalighat Meeting) এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, জেলা ধরে ধরে প্রতি শুক্রবার হবে সাংগঠনিক বৈঠক। এদিন দলের সুপ্রিমো একাধিক দায়িত্ব ভাগ করে দেন। আগামি পঞ্চায়েত ভোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের বৈঠকে যুব সংগঠন শক্তিশালী না করতে পাড়ার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। এদিন সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, মালা রায় এবং বিধায়ক অতীন ঘোষ, পরেশ পালকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন মমতা। পুরনো ফরম্যাট মেনে জেলাভিত্তিক পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব এদিন ভাগ করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলা দেখার দায়িত্বে গৌতম দেব। কোচবিহার জেলা বিশেষভাবে দেখার জন্য পার্থপ্রতিম রায়, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং উদয়ন গুহকে নির্দেশ। সাগরদিঘি ভোটের প্রভাব তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলে। তরুণ মোশারফ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতির দায়িত্ব। উত্তর দিনাজপুর মালদা-মুর্শিদাবাদ দেখার দায়িত্বে দুই সংখ্যালঘু মুখ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও মোশারফ হোসেন।
বিশেষ দায়িত্বে রয়েছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। দক্ষিণ দিনাজপুর দেখবেন তাপস রায়, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়ার দায়িত্বে মলয় ঘটক। মানস ভুঁইয়া দেখবেন দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা। জানা গিয়েছে, ফিরহাদ হাকিম দেখবেন হাওড়া-হুগলি, উত্তর দিনাজপুর আর বীরভূম দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। বর্ধমান, দার্জিলিংয়ের সঙ্গে নদীয়া জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে অরূপ বিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান , এঁরা কেউ অবজারভার নয়। এঁদের উপর সংগঠন দেখার দায়িত্ব।
প্রসূন গুপ্ত: শুক্রবার কালীঘাটে নিজের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ সভা ডেকেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেক বিধায়ক, সাংসদ ও বিশিষ্ট নেতাদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বক্তা ছিলেন। আশা করা গিয়েছিল তিনি হয়তো বিশেষ বার্তা দেবেন, হলো তাই। তাঁর বিশেষ বার্তার মধ্যে অন্যতম, রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পের প্রচার যাতে প্রতি ঘরে পৌঁছয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
মমতা সাগরদিঘি থেকে পঞ্চায়েত হয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তথা দলের ভাবমূর্তি নিয়েই কথা বলেছেন বলেই সূত্রের খবর। তিনি পরিষ্কার জানান, 'প্রতি মাসে তিনি জেলা ধরে ধরে পর্যালোচনা বৈঠক করবেন। জেলার সর্বস্তরের সমস্যা দেখবেন নিজেই। দলের মধ্যে কোনও বেচাল সহ্য করা হবে না।'
তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব ইমেজ আজকেও স্বচ্ছ, তিনি অতি সাধারণ জীবনযাত্রা করেন। তাঁর সততার ভাবমূর্তি আজকেও অটুট, কাজেই তিনি চান সকলের মধ্যে সেই পরিবেশ আসুক। অন্যথায় দল থেকে বেড়িয়ে যেতে পারেন। এই বার্তাও ঠারেঠোরে দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো।
তিনি জানান, 'আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে হবে একসঙ্গে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানা হবে না।' তিনি পরোক্ষে নাকি জানান, 'সাগরদিঘি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোট বিচার করা যায় না। আজকেও সংখ্যালঘু ভোটাররা তাঁর সঙ্গেই আছে। তাঁর কাছে ধর্মের কোনও ভেদাভেদ নেই। তিনি যেমন সংখ্যালঘু উন্নয়নে কাজ করছেন সেভাবেই চালিয়ে যাবেন। সংখ্যালঘু বন্ধুরা যদি বিদেশযাত্রা করতে চান তবে তারও ব্যবস্থা করা হবে। সমস্যা হলে তিনি বিষয়টা নিজেই দেখবেন।'
এছাড়া সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তিনি সম দূরত্ব বজায় রাখবেন বিজেপি ও কংগ্রেস থেকে। তিনি মনে করেন, বিজেপি চাইছে রাহুল বিরোধী মুখ হোক এতে পদ্মশিবিরের সুবিধা। তবে তিনি এও জানান, 'যে যে রাজ্যে যে দল অধিক শক্তিশালী তিনি তাদেরই সহযোগিতা করবেন।' এবিষয়ে তাঁর সঙ্গে এসপি নেতা অখিলেশ যাদবের কথা চলছে। অন্যান্য দলের কথাও উল্লেখ করেন যথা বিজু জনতা দল। ২৩ মার্চ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ার কথা। অর্থাৎ কোথাও ভোটের আগে দলের ব্যাটন নিজের হাতেই রাখলেন মমতা।
শুক্রবার কালীঘাটে (Kalighat Meeting) দলের একাধিক শীর্ষ নেতা ও সাংগঠনিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহের মধ্যেই এই বৈঠক রাজনৈতিক মহলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সাগরদিঘী উপনির্বাচনে পরাজয়-সহ দুর্নীতি-কাণ্ডে দলের একাধিক নেতার নাম জড়ানো। রাজ্য রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে থাকা এই ইস্যুতে আলোচনার পাশাপাশি ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের ভূমিকা স্থির করে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বে এই বৈঠক।
সম্ভাব্য কীকী বিষয় উঠে আসতে পারে বৈঠকে?
১) সাগরদিঘী উপনির্বাচনের হার পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দলের ক্ষতি করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই লাগাতার মানুষের কাছে পরিষেবা ও রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দল রয়েছে তা বোঝানোর কথা বলা হবে।
২) সংখ্যালঘু এলাকায় ভোটের ফল খারাপ হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা। এটা দেখার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক দলের সংখ্যালঘু মুখকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল পঞ্চায়েতের কাজেও একাধিক সংখ্যালঘু নেতাকে সামনের সারিতে দেখা যেতে পারে।
৩) পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কড়া হচ্ছে দল। প্রার্থী বাছাইয়ে দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত তা জানিয়ে দেওয়া হবে আরও একবার। পুরনো কারা ভোটে লড়ার সুযোগ পাবেন সেক্ষেত্রে মাপকাঠি হবে তাদের পারফরম্যান্স। গত ভোটে ও ওই পঞ্চায়েতের কাজে।
৪) পঞ্চায়েত ভোটে দল কোনও অশান্তি মেনে নেবে না৷ অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রশাসন যে এবার কঠোর ভূমিকা পালন করবে তা আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হবে।
৫) দুর্নীতি প্রশ্নে দলের অবস্থান জিরো টলারেন্স। যে বা যারা এই কাজে যুক্ত থাকবেন দল তাঁদের পাশে থাকবে না।
৬) দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি থেকে মানুষের চাহিদা কী তা জেনেছে দল। একইসঙ্গে কোথায় কোথায় সমস্যা তাও জেনেছে দল। এই অবস্থায় সেই কাজ শেষ করতে এখন থেকেই ঝাঁপাবে দল। দলের কেউ তাতে বাধা দিলে কড়া শাস্তির নিদান।
৭) এছাড়া একাধিক প্রচারমূলক কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
৮) জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিজেপি বিরোধিতায় সরব হবে তৃণমূল। তবে সংসদের ভিতরে ও বাইরে সাধারণ মানুষের অসুবিধাকে তুলে ধরতে চায় শাসক দল।
৯) কংগ্রেস নিয়ে ছুৎমার্গ না থাকলেও, সাগরদিঘির 'অশুভ' জোটকে প্রচারে রাখতে চায় বাংলার শাসক দল। সেক্ষেত্রে নিজ নিজ শক্তিশালী জায়গায় ফর্মূলায় জোর।
১০) গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের মতো রাজ্যে ভালো ফল না হলেও সংগঠনের কাজ থেকে পিছিয়ে আসবে না তৃণমূল কংগ্রেস।
সর্বোপরি পঞ্চায়েত ভোটকে অ্যাসিড টেস্ট ধরে নিয়ে লাগাতার মানুষের সমস্যাকে ইস্যু করে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নেওয়া হতে পারে এই বৈঠক থেকে।, এমনটাই ঘাসফুল সূত্রে খবর।
মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (Contempt of Court) মামলা দায়ের করতে চেয়ে হাইকোর্টে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Bhattacharya)। হাইকোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করুক, এমনটাই আবেদন বিকাশবাবুর। এই মর্মে বিচারপতি টি শিবাজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই আইনজীবী। তাঁর আবেদন হলফনামা আকারে জমা করতে নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের। সেই মামলা গ্রহণ হবে কিনা বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেবে আদালত বলেই সূত্রের খবর। মঙ্গলবার আলিপুর জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যর কয়েকটি অংশে আপত্তি তুলে আদালতের দ্বারস্থ বিকাশরঞ্জন।
সেই মন্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ এই আইনজীবীর। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ-কাণ্ডে চাকরিহারাদের পাশে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম মন্তব্য, 'যাঁদের চাকরি গিয়েছে আইনি পথে তাঁদের চাকরি ফেরানো হোক। দরকারে আবার ওদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। আদালত যেভাবে বলবে সরকার সেভাবেই ব্যবস্থা করবে।' এখানেই আপত্তি তোলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তার প্রশ্ন, 'মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদে থেকে কীভাবে এই ধরনের মন্তব্য বা আবেদন করা যায়?'
পাশাপাশি তাঁর বক্তব্যের শেষদিকে জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি প্রধান বিচারপতিকে সামনে পেলাম না। সুব্রত দা-কে পেলাম, আমি শুধু বললাম এটা আমার মনের ভাবনা।' এই মন্তব্যর বিরোধিতায় সরব বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এবারে হলফনামা আকারে বিকাশবাবুর আবেদন জমা পড়ার পর আদৌ এই মামলা গ্রহণ হবে কিনা, তার জন্য অপেক্ষা কয়েক ঘণ্টার।