অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি (arrest) ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। তদন্ত হলে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে সাপ বেরোবে। তদন্ত (investigation) হওয়া প্রয়োজন। এ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নিজের দরকারে ব্যবহার করেছেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
অন্যদিকে, যদি কেউ ভুল বা অন্যায় করে থাকে, দল তার পাশে থাকবে না। দলের তরফে এমন স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি অর্জুন সিংয়ের। পাশাপাশি তিনি বলেন , আই আইনের পথে চলবে।
প্রসঙ্গত, গরুপাচার মামলায় নিজের গড়েই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। সূত্রের খবর, শারীরিক পরীক্ষার পর আজ আসানসোল আদালতে তোলা হতে পারে তাঁকে। এদিন সকালে সিবিআইয়ের বিশাল টিম বোলপুরে গিয়ে তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে। কিছুক্ষণ পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য, দশবার তাঁকে সিবিআই তলব করেছিল। কিন্তু চিকিত্সার অজুহাতে তিনি ৯ বারই হাজিরা এড়িয়েছেন। সকাল ৯.৪৫ মিনিট নাগাদ সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একটি দল তাঁর বাড়িতে (house) প্রবেশ করে। সূত্রের খবর, তাঁকে হাজিরা এড়ানো প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ (interrogation) করেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হয় বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির চারদিক ঘিরে ফেলা হয়। বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বীরভুমের তৃণমূল জেলা সভাপতি বাড়িতেই ছিলেন বলে খবর। তাঁর বাড়ির চারপাশে অগণিত মানুষের জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।
নেতামন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় বিরোধীদের তরফে কাঠগড়ায় তৃণমূলের ১৯ নেতামন্ত্রী (TMC Leaders)। এবার সেই আক্রমণ ভোঁতা করতে পাল্টা আসরে রাজ্যের শাসক দল। এই জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্ট (Pil in High court) রায়ের অর্ধেক অংশ তুলে ধরা হচ্ছে প্রচার মাধ্যমে। পুরো কোর্ট অর্ডারে উল্লেখ আছে, বাম-কংগ্রেস (Left-Congress) নেতাদের নামও। যাদের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়েও পর্যবেক্ষণ রয়েছে হাইকোর্টের। আর সেই তালিকায় নাম আছে সূর্যকান্ত মিশ্র, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক ভট্টাচার্য এবং অধীর চৌধুরীর মতো বিরোধী দলের নেতারা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই দাবি করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
যদিও তৃণমূলের তরফে তোলা এই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, অধীর চৌধুরীরা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা পার্টিকে বেতনের টাকা দিই, তার বিনিময়ে পার্টি আমাদের একটা লেভি দেয়। আমাদের ব্যক্তিগত কোনও রোজগার নেই। আর ওরা একটা সিআইডি তদন্ত করুক, তাতেই বেড়িয়ে যাবে আমার কত সম্পত্তি বেড়েছে। ব্রাত্য বসু একদম নতুন ওর অনেক আয়ের উৎস।'
তিনি জানান, তৃণমূল মানে সবাই চোর। পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোর। বাম জমানার অপর এক মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের জবাব, 'কোর্ট কি এই নামগুলো বলেছে? তাহলে চোরেদের পার্টি কী অভিযোগ করল, তার জবাব কেন দেব? সিপিএম পার্টি সেই ধাতুতে গড়া নয়।'
তৃণমূলের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএম-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আরও আক্রমণাত্মক ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে আরও যা নাম আছে কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত প্রধান আরও যারা নেতা আছে ওদের তাঁদের নাম দেব। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়লাম ব্রাত্য বসুকে। সূর্যকান্ত মিশ্র, জ্যোতি বসু এঁদের নাম নিচ্ছেন, ওরা কোর্টে গিয়ে হলফনামা দিয়ে সিপিএম নেতাদের সম্পত্তি খুঁজতে ইডিকে পার্টি করুন। সাহস আছে, ইডিকে পার্টি করার? কিন্তু মিথ্যাচার করবেন না। রায়ে ওদের ১৯ জনের নাম আছে, রায় আর পিটিশনের তফাৎ বুঝতে হবে।'
যদিও এই বিষয় বিচারাধীন বলে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি বিজেপি।
'আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো'। নিজের দলের বিধায়ক সম্পর্কে এমনই মন্তব্য তৃণমুল পঞ্চায়েত প্রধানের। যা নিয়ে হাসিঠাট্টা যেমন শুরু হয়েছে, তেমনি অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। মঙ্গলবার বিশ্ব আদিবাসী দিবস (World Tribal Day) উপলক্ষে স্থানীয় আদিবাসী সমাজের মানুষদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ফুটবল ময়দানে। অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়েছিল ভালোই। আদিবাসী সমাজের সংস্কৃতি, কৃষ্টি তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন তৃণমুল নেতা এবং জনপ্রতিনিধি। তার মধ্যে একজন প্রধান হেমব্রম। তিনি জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পাশাপাশি রায়পুর চা বাগানের শ্রমিক নেতাও। রায়পুর চা বাগান দীর্ঘদিন ধরে অচল। অনুষ্ঠান মঞ্চে সেই অচল বাগান নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এলাকার বিধায়কের (MLA) সম্পর্কে ক্ষোভ উগরে দেন প্রধান (Panchayet Pradhan) হেমব্রম। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো" তিনি নিজের ঘরই সামলাতে পারেন না, বাইরে কী সামলাবেন? তাঁর কাছ থেকে কিছু আশা করি না"।
নাম না করলেও স্পষ্ট যে, প্রধান হেমব্রমের তীর রাজগঞ্জ ব্লকের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের দিকে। তাঁর এই বক্তব্যের পর মঞ্চে উপস্থিত দলীয় নেতারা অস্বস্তিতে পড়ে যান। আবার অনেককে চুপিসারে হাসাহাসি করতেও দেখা যায়।
এদিকে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন মন্তব্যে অস্বস্তি পড়েছে জেলা তৃণমুল। খগেশ্বর রায় চারবারের বিধায়ক। পাশাপাশি, তিনি জেলা তৃণমুলের চেয়ারম্যান। জেলার শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের। এই বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিধায়ক জানিয়েছেন, এই বিষয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, তাঁরাই ব্যবস্থা নেবেন। জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এদিকে, ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তীব্র কটাক্ষ শানিয়েছেন বিজেপি নেতা শ্যাম প্রসাদ।
প্রসঙ্গত, বিধায়ক খগেশ্বর রায় মাঝেমধ্যেই শিরোনামে উঠে আসেন। কখনও বিতর্কিত মন্তব্য বা আচরণ করে, আবার কখনও পারিবারিক কারণে। যদিও বিধায়ক সবসময়ই দাবি করে এসেছেন, এসব তাঁকে বদনাম করার চক্রান্ত।
পাঁচ বছরে নেতা-মন্ত্রীদের ব্যাপক সম্পত্তিবৃদ্ধি (Asset) কীভাবে? এই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় ইডিকে (ED) যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এই নেতা-মন্ত্রীদের তালিকায় নাম রয়েছে শুধু তৃণমূলের (TMC) ১৯ জনের। এই প্রচার ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। বিরোধীদের আক্রমণের মুখে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক-সহ ওই ১৯ জন। এবার বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করতে আসরে শাসক শিবির। বুধবার বিধানসভায় একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, অরূপ রায়, শিউলি সাহা প্রমুখ। তাঁদের অভিযোগ, আদালতের রায়ের একটা অংশ তুলে ধরা হচ্ছে। বাকিটা সামনে আসছে না। বুধবার মহামান্য প্রধান বিচারপতির সেই রায়ের কপি আপলোড করেছে। সেই কপি দেখেই এই সাংবাদিক বৈঠক। তাঁদের দাবি, 'সম্পত্তিবৃদ্ধির নিরিখে শুধু শাসক দল নয়, বাম, কংগ্রেস নেতাদের নাম রয়েছে আদালতের কপিতে।'
এই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'চক্রান্ত করে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমি লজ্জিত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন। এই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিনতাম না। কিন্তু, তার মানে এই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে সবাই চোর। আমি ছোটবেলা থেকে ব্যবসা করছি, সেই টাকা দিয়ে মানুষের কাজ করেছি এবং তার থেকেই ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেছি। অনেকে রোজগারের টাকায় করে, আমি ব্যবসা করে করেছি। এতে অন্যায়ের কী আছে? মানুষের কাজ করার স্বার্থে আমরা কাজ করেছি। তারপরও ব্যক্তিগতভাবে চক্রান্ত করা হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে।'
তিনি জানান, একটা জনস্বার্থ মামলা হয়েছে ২০১৭ সালে। আমাদের সম্পত্তি নাকি খুব বেড়ে গিয়েছে। আমরা কোনও ফ্যাক্ট লুকিয়েছি? তাহলে তো আয়কর দফতর ধরতে পারতো। অদ্ভুত লাগে এই মামলায় কোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়ে অর্ধসত্য প্রকাশিত হচ্ছে।
সূর্যকান্তবাবুকে বলছি। জ্যোতি বসু আসার আগে চন্দন বসুর নাম শুনিনি। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। অমিত শাহর ছেলে জয় সাহা আছেন।
ব্যবসা করছেন, সম্পত্তি বেড়েছে। আমি সুজনবাবুকে বলি, সিপিএম-এর ছেলেদের জিজ্ঞাসা করুন চেতলায় আমার নামে কোনও অভিযোগ আছে কি না? শুধু তৃণমূলের নেতাদের নাম নেবেন। আর কারও নাম নেবেন না, সেটা ঠিক নয়।
এই জনস্বার্থ মামলায় সম্পত্তিবৃদ্ধির তালিকায় নাম এসেছে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও। এদিন তিনিও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক বৈঠকে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'কোর্ট পর্যবেক্ষণের একটা অংশ তোলা হচ্ছে। পুরো কোর্টের রায় আমরা তুলে ধরছি। নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে যে মামলা, সেই তালিকায় নাম রয়েছে অধীর চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য,
কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, আবু হেনা, ফণীভূষণ মাহাতো, ধীরেন বাগদি, তরুণকান্তি ঘোষ,
চন্দন সাহা, নেপাল মাহাতদের। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল প্রত্যেকের নাম আছে। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেস টানা আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করে যাচ্ছে। এটা ভুল এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনীতিবিদ মানে সমাজের কাছে ভিলেন, মানুষের শত্রু, এমন উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে। এর শেষ কোথায়?'
ব্রাত্য বসু জানান, আমরা দলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবো। ২০১৬ সালে বিরোধীদের এমন কোনও প্রার্থী নেই, যিনি ২০২১-এ জিতেছেন। এঁরা যদি আবার ২০২৬-এ লড়েন, সে সময় তাঁদের সম্পত্তি খতিয়ে দেখা হোক। আমরা নজর রাখবো।
রাজ্যের অপর এক মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, 'এই মামলাতে আয়কর দফতরের একটা ফাঁক আছে। আমাদের এখন যা সম্পত্তি আছে, তার মূল্য দিনের পর দিন বাড়বে।
রাষ্ট্রপতি হোক বা কেন্দ্রীয় সংস্থা, প্রত্যেককে বিজেপি ব্যবহার করছে।
এখানেই থামেননি তৃণমূল ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিমরা। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এসব নিয়ে কুৎসা করব না, আবার গান্ধীগিরিও করব না। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের বা এবিভিপির (TMCP-ABVP Clash) সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় দূর্গাপুর (Durgapur) সরকারি মহাবিদ্যালয়ের সামনে। পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিস (police) বাহিনী। জানা গিয়েছে দু'পক্ষের সংঘর্ষে জখম (injured) বেশ কয়েকজন। দুই পক্ষকে শান্ত করতে পুলিসকে ধমক দিতেও দেখা গিয়েছে। স্লোগান পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত দূর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয় চত্বর। অভিযোগ, ভাঙচুর করা হয়েছে এবিভিপির পতাকা লাগানো একটি টোটো (toto) গাড়িতে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে শুধু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) নয়, আরও বড় রাঘব বোয়াল রয়েছে দুর্নীতির অন্তরালে। তাই সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে, এই দাবিতে "চোর ধরো জেল ভরো" প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপির ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ।
দূর্গাপুরের গভর্নমেন্ট কলেজের সামনে থেকে শুরু হয় একটি পদযাত্রা। আর এই কর্মসূচিকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল কলেজের সামনে। অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা বাঁধা দেয় এই মিছিল করতে। দু-এক কথা হতে হতে দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। কলেজের সামনেই লাঠি, রড নিয়ে শুরু হয়ে যায় দু'পক্ষের সংঘর্ষ। ঘটনায় দু'পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মাথা ফেটে গিয়েছে দুই এবিভিপি সমর্থকের। পাল্টা জখম হয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই কর্মী। বলা চলে কার্যত কলেজ চত্বর হয়ে উঠেছিল রণক্ষেত্র।
এবিভিপির অভিযোগ,'টিএমসিপির সমর্থকরা পিছু ধাওয়া করে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের বাইক ৱ্যালিতে থাকা কর্মীদের। ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দূর্গাপুরের গভর্নমেন্ট কলেজ চত্বরে। ছুটে আসে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের বিশাল বাহিনী। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্সও। ছুটে আসেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিসের এসিপি (দূর্গাপুর জোন) তথাগত পাণ্ডের সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের। কলেজের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয় সাধারণ পড়ুয়াদের। এর মধ্যেই কোনওভাবে তৃণমূলের সন্ত্রাস মেনে নেওয়া যাবে না, এই দাবিতে কলেজ গেটের একটু দূরে বিক্ষোভ শুরু করে দেন এবিভিপি কর্মী-সমর্থকরা।
এরপর নিউটাউনশিপ থানার পুলিস পরিস্থিতি কোনওমতে সামাল দেয়। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানায় এবিভিপি। অহেতুক অশান্তি তৈরি করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, অভিযোগ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ কর্মী সমর্থকদের। তাঁদের বেশ কয়েকজন কর্মীও দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি বলে জানান তাঁরা। তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা শুভজ্যোতি মজুমদার।
তিনি বলেন, কলেজে পরীক্ষা চলছে মাইক বাজাতে বারণ করা হয়েছিল ওদের। কিন্তু বিনা কারণে প্রথম তাঁদেরকে আক্রমণ করা হয়। এতে বাড়ে অশান্তি। গোটা ঘটনায় টানটান উত্তেজনা ছিল কলেজ চত্বরে। বিশাল পুলিস বাহিনী এখনও মোতায়েন রয়েছে ঘটনাস্থলে।
দক্ষিণ দমদমে (South Dumdum) তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম করে এবার পড়লো পোস্টার (poster)। সেই পোস্টারে লেখা টেটে (TET) চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণা বরুণ নন্দী দূর হাটো। কিন্তু কেন পড়ল এই পোস্টার? কী আসল ঘটনা?
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের লালবাগান (Laalbagan) এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ নন্দীর নামে তাঁর ওয়ার্ড অফিস এবং ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে পোস্টার, পোস্টারে লেখা আছে টেটে চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপে অভিযুক্ত বরুণ নন্দী দুর হটো। এর আগেও দেখা গিয়েছিল বরুণ নন্দীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিলেন বেশ কিছু মানুষজন চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎ করার। তারপর ফের একই পোস্টার তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই পোস্টার বরুণ নন্দীর ওয়ার্ড অফিস এবং বিস্তীর্ণ এলাকায় ফেলল এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
যদিও তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ নন্দী এই বিষয়ে জানান, "কী পোস্টার পড়েছে আমি জানিনা, জিনিসটা পুরোপুরি মিথ্যা যে বা যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তাঁদের বিরুদ্ধে আমিও প্রচুর অভিযোগ করতে পারি। গৌতম সাহা মণ্ডল আগে টিভিতে যে মন্তব্য করেছিল আমি তাঁর সুস্থতা কামনা করে বলি, তাঁর একটা ক্ষোভ আমার বিরুদ্ধে থাকবেই। ২০১৫ সালে দলের টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু প্রথম কথা তিনি কোন দল করে এখনও বুঝতে পারলাম না। এর আগে আমার বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে হেরেছে। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আমার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। গৌতম সাহা মণ্ডল এখন বিজেপি করছে তিনি এই সমস্ত কিছু করছেন এবং আমি মানহানির মামলা করেছে।
যদিও এ বিষয়ে বিজেপি নেতা বিমল শংকর নন্দ জানান, তৃণমূল নেতারা নিজেরা ঠোগী। তাই সব কিছুতে তাঁরা ষড়যন্ত্র দেখে। আর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তিনি বিগত ৭-৮ দিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে তিনি কী করে পোস্টার মারবেন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ আর সন্ধ্যাতে মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়ে রাজ ভবনে দরবার নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar)। মঙ্গলবার এভাবেই ঘটনাবহুল হয়ে থাকল বিহারের রাজনীতি (Bihar Politics)। এদিন এনডিএ-র সঙ্গ ছাড়তে বিকেলে রাজ ভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগপত্র দেন নীতীশ কুমার। এনডিএ (NDA) ছাড়ার কারণও তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান। এরপরেই সটান চলে যান লালুপ্রসাদের বাড়ি। লালু-পত্নী রাবড়ি দেবীর সঙ্গে কথা বলেন সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে নীতীশ প্রস্তাব দেন, 'আসুন নতুন করে শুরু করি।'
এরপরেই লালু-রাবড়ি দেবীর দুই পুত্র তেজস্বী এবং তেজপ্রতাপ যাদবকে নিয়ে ফের রাজ ভবনে যান নীতীশ কুমার। এবার দাবি করেন মহা জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চান তিনি। সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণের পর সেই দাবি মেনে নিয়েছেন বিহারের রাজ্যপাল। বুধবারই মহাজোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতীশ কুমার। আর তাঁর ডেপুটি হিসেবে শপথ নেবেন তেজস্বী যাদব। এখনও পর্যন্ত এই সূচি ঠিক রয়েছে। যা ট্যুইট করে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল বা আরজেডি। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বুধবার শপথ নিলে মোটা ৬ বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিহারের মসনদে বসবেন নীতীশ কুমার।
জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশ কুমারে আস্থা রেখেছে বিহারের বিজেপি-বিরোধী সব দল। তাঁকে আরজেডি, কংগ্রেস ছাড়াও সমর্থন করছে জিতেনরাম মাঝির হাম পার্টি। বাইরে থেকে সমর্থন জানাবে বামেরাও। এমনটাই সূত্রের খবর।
এদিন সন্ধ্যায় রাজ ভবন থেকে বেড়িয়ে নীতীশ বলেন, '১৬৪ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে আমাদের। প্রত্যেক বিধায়ক সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। ৭ দলের সমর্থন রয়েছে আমাদের সঙ্গে। প্রত্যেকে মিলে বিহারের সেবা এবং মানুষের উন্নয়নে কাজ করব। আমি বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। সাম্প্রতিক যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশব্যাপী, তার প্রেক্ষিতে জেডিইউয়ের লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসি। তাঁরাই এনডিএ ছাড়ার কথা বলেছেন।'
মঙ্গলবার বিজেপিকে তোপ দেগে লালু পুত্র তেজস্বী বলেন, 'বিজেপি বিভেদের রাজনীতি বিহারে চলবে না। এই রাজ্যে বিজেপি এখন একা। সব রাজনৈতিক দল আমাদের পিছনে। বিজেপি যেখানেই শরিক হিসেবে শাসক জোটে আছে, সেখানেই বড় শরিককে ভাঙার চেষ্টা করেছে। মহারাষ্ট্র, পঞ্জাবে একই চিত্র। আমরা এখানে সবাই নীতীশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করেছি।'
এদিকে, নীতীশ কুমারকে বিশ্বাসঘাতক খোঁচা দিয়েছে বিজেপি। বিহার বিজেপির প্রধান সঞ্জয় জয়সওয়াল বলেন, 'আমরা দু’দল ২০২০-এর নির্বাচনে এনডিএর অংশ হিসেবে একসঙ্গে ভোটে লড়েছিলাম। মানুষ এই জোটে ভরসা রেখে ভোট দিয়েছিলেন। জেডিইউ আমাদের চেয়ে কম আসন পাওয়া সত্ত্বেও নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলাম। তারপর আজ যা হল, তাকে বিহারের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কী বলা যায়!'
মন্ত্রী হয়ে কোচবিহারে (Cooch Behar) ফিরে আলাদা রাজ্য নিয়ে বিজেপিকে (BJP) আক্রমণ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। মঙ্গলবার মন্ত্রী হয়ে পদাতিক এক্সপ্রেসে চেপে নিউ কোচবিহার স্টেশনে নামেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক (TMC Leader)।
এদিন নিউ কোচবিহার স্টেশনে তাঁকে সম্বর্ধনা জানাতে প্রচুর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-নেতাদের ভিড় হয়। সেই সম্বর্ধনা মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদয়ন গুহ বলেন, '২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী নিজে বহুবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন। এখানে উত্তরবঙ্গে বহু কাজ হয়েছে এবং হবে। উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত, আগামীদিনে এই কথা কারও মুখে আসবে না। এই কথা বলে যারা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের দাবি করে তাঁদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে সমাজ থেকে আলাদা করে দিতে হবে।'
তিনি জানান, রাতারাতি সব হবে না। সবার সঙ্গে কথা বলে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি আগে করতে হবে। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এই মঞ্চ থেকে উদয়ন গুহ বলেন, 'কেউ দাদা ধরে পঞ্চায়েত টিকিট পাবে না। জোর করে কেউ পঞ্চায়েত প্রধান হবে না।'
এই মঞ্চ থেকে এদিন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, 'দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই।' বুথে কর্মীদের এক হওয়ার বার্তা দেন তিনি। পাশপাশি তিনি বলেন, 'বর্তমান রাজ্যে ইডি-সিবিআই বলে একটা প্যানিক চলছে। তাই যারা বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী, তাদের ইডি সিবিআই মামলায় এক থেকে দেড় বছর জেল খাটার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।'
তবে এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুর চড়িয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা সুকুমার রায়ও। কী বললেন তিনি?
২০২৬-র আগেই কি বাংলায় মমতা সরকারের (Mamata Government) পতন? মঙ্গলবার সেই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। এদিন তিনি জানান, ডিসেম্বরে কার্যত থাকবে না তৃণমূল সরকার। আর ২৪ শে একসঙ্গে ভোট হবে, দেখতে থাকুন।
যদিও রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল (TMC)। শাসক দলের রাজ্য সহ-সাধারণ সম্পাদক জয়প্রকাশ মজুমদারের খোঁচা, 'হয় শুভেন্দু অধিকারী জ্যোতিষী, নয়তো বড় কোনও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। যেখানে গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে পরিকল্পনা করছে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়া। এছাড়া আর সম্ভব নয়। ভারতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে প্রচুর সংখ্যাধিক্য নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠন করেছেন।' একই সুর শোনা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কণ্ঠে। তিনি বলেন, 'উনি হয়তো জ্যোতিষী। তাহলে বিহারে পাঠাতে পারতো। উনি সামলে দিত সরকার বদল। আমাদের মনে উনি বিজেপির একমাত্র পরামর্শদাতা।'
ইতিমধ্যে গত ছয় মাসে একাধিকবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে সরব হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। যদিও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদারদের গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের আগে অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডার কাছে দরবার করে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ে এবং দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যে চলা ইডি তদন্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
বিরোধী দলনেতা মাঝেমধ্যেই ইঙ্গিত দেন মহারাষ্ট্রের মসনদে পালাবদল হয়েছে। এরপর একে কে রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলাতেও পালাবদল হবে। যদিও প্রতিবারই সেই দাবি নস্যাত করেছে রাজ্যের শাসক দল। তাঁর এদিনের দাবিকেও খোঁচার সুরে বিঁধেছে তৃণমূল।
অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বাড়িতে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি এবং সিপিএম (BJP, CPM) একযোগে কটাক্ষ করেছে বীরভূমের (Birbhum TMC) তৃণমূল সভাপতিকে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'ব্যাগ গুছোতে দেওয়ার দরকার নেই। এক কাপড়ে তুলে আনুক সিবিআই। এর আগে ৮-৯ বার ডেকেছিল, উনি হাজিরা এড়িয়েছেন।'
আক্রমণাত্মক সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তিনি জানান, চাকরির বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন। বালি, পাথর পাচার করে টাকা নিয়েছেন। শ্রীঘরে যেতে তো হবেই। একসময়ের দাপট। বিরোধীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দাও, পুলিসের গায়ে বোমা মারো। সিবিআইয়ের উচিৎ কোমরে দড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়া।
জানা গিয়েছে, অনুব্রতের দীর্ঘ দিন ধরে অর্শের সমস্যা রয়েছে। ফিশচুলার চিকিৎসা করাতে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন। এদিন এসবের চিকিৎসা করাতে কেষ্টর বাড়িতেই গিয়েছে মেডিক্যাল টিম। অন্যদিকে হাসপাতালে শয়ে শয়ে সাধারণ মানুষের পরিষেবা পাওয়ার অপেক্ষায়। এখানেই প্রভাবশালী তত্ত্বের প্রশ্ন তুলে তৈরি হল রাজনৈতিক বিতর্ক। তবে কি নিজের গড়ে গিয়ে তিনি শক্তি প্রদর্শন করলেন? যার জন্যই চিকিত্সকের দল তাঁর বাড়িতে বাধ্য হয়ে সটান উপস্থিত হলেন?
প্রসূন গুপ্ত: শেষ পর্যন্ত বিজেপি-জেডিইউ জোট ভেঙেই গেলো। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী গত ২৪ ঘণ্টায় হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পদ্ম সঙ্গ ছাড়ছেন তিনি। গত সপ্তাহে হওয়া নীতি আয়োগের বৈঠকে নীতীশ কুমার ছিলেন অনুপস্থিত। গুঞ্জন সম্প্রতি নাকি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ফোন করেছেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। এমনকি, গত কয়েক দিন ধরে কেন্দ্রীয় বিজেপি আশংকা করেছে হঠাৎই বিদ্রোহী হয়েছেন নীতীশ কুমার। যে কোনও মুহূর্তে ছাড়তে পারেন জোট। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই বুধবার বিকেলে রাজ ভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি। যেমনটা তিনি ২০১৭ সালে করেছিলেন আরজেডি কংগ্রেসের সঙ্গে। সেবার হঠাৎই বিহারের তৎকালীন শাসক বিজেপি বিরোধী জোট ছেড়ে নীতীশ ধরেছিলেন পদ্মের হাত। এবারও সেই মাঝপথে ডিগবাজি দেশের একদা রেলমন্ত্রীর।
মঙ্গলবার বিকেলে একাই রাজ ভবনে যান নীতীশ কুমার। সেখান থেকে যান লালু প্রসাদ যাদবের বাড়িতে। সেখানেই আরজেডি, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার মহাবৈঠক। এদিন মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা প্রসঙ্গে নীতীশ কুমার জানান, দলের সাংসদ-বিধায়কদের সম্মতি নিয়েই এই ইস্তফা এবং এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্ত। বিজেপির সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল।
যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, 'বিজেপির মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন নীতীশ কুমার। সূত্রের খবর, বিহারে ২০২০-তে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিজেপির সমর্থনে নীতীশ নেতৃত্বধীন জোটে নাকি মস্ত চাপে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নাকি নামেই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আসলে প্রশাসন-সহ মন্ত্রিসভার চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল বড় শরিক বিজেপি। ইদানিং কেন্দ্রের কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছিলেন না নীতীশ। যাননি রাষ্ট্রপতির শপথ অনুষ্ঠানে। তিনি যেমন মোদির থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন তেমনই সখ্যতা বাড়ছিল লালু প্রসাদের আরজেডির সঙ্গে। তলে তলে নাকি যোগাযোগ চলেছে কংগ্রেসের সঙ্গেও। শোনা গিয়েছে, বিহারের পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী সোনিয়া এবং লালুপুত্র তেজস্বীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন এবং নতুন জোটের বার্তা দেন। অন্যদিকে লালুপ্রসাদ যাদব এই মুহূর্তে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি। তিনি সেখান থেকেই পুত্র তেজস্বীকে নীতীশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলেছিলেন। সম্প্রতি ঈদের এক অনুষ্ঠানে তেজস্বীর নিমন্ত্রনে নীতীশ উপস্থিত হয়েছিলেন। উলট পুরাণের শুরু সম্ভবত সেখান থেকেই, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
শোনা গিয়েছে, নীতীশ এই জোটে বিরক্ত তো ছিলেনই পাশাপাশি সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে উদ্ধবের মন্ত্রিসভার পতন ও শিবসেনার ভাঙনে নাকি অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি। তখনই নাকি তিনি চূড়ান্ত ভাবে স্থির করেন যে বিজেপির হাত ছাড়বেন। কিন্তু বিজেপি বিরোধীদের নিয়ে যদি নীতীশের নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভায় গঠিত হয়, সেখানে কারা থাকবেন? শোনা গিয়েছে আরজেডির ৭৯, জেডিইউএর ৪৫ এবং কংগ্রেসের ১৯ জনকে নিয়েই মন্ত্রিসভা হবে। এখানে সমর্থন করবে বামেরা তাদের ১৬টি আসন নিয়ে। তাহলে একদিকে বিজেপি ৭৭, অন্যদিকে ১৬০-এর বেশি বিধায়ক সুতরাং রামধনু মন্ত্রিসভা এবারে ফের বিহারে হয়তো হতে চলেছে।