
যত দিন যাচ্ছে শুভমন গিলের (Shubhman Gill) প্রেম জীবন নিয়ে ততই চর্চা বাড়ছে। খেলার (Cricket) ময়দানে যেমন চার ছয় হাকাচ্ছেন, ঠিক তেমন ভাবেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও যে বর্ণময়, সেই ধারণা অনেকের মনেই। সামাজিক মাধ্যমে শুভমনের মহিলা ভক্ত অনেক, তাঁকে প্রকাশ্যে দেখতে পেলেই যেন মহিলারা ধেয়ে যান তাঁর দিকে। ব্যক্তিগত জীবনে গিল কাকে ডেট করছেন তা জানতে আগ্রহী ভক্তকূল। এবার তাঁর সঙ্গে নাম জড়াল আরও এক ষ্টার কিডের।
তবে এই প্রথম নয়, গুঞ্জন ছিল শচীন তেন্ডুলকার কন্যা সারাকে ডেট করছেন শুভমন। একই রেস্তোরাঁয়, একই দিনে, অপরিবর্তিত রেস্তোরাঁ পরিবেশে তাঁদের দুজনের ছবি নিয়ে চর্চা হয়ে গিয়েছে কয়েক দফা। অন্যদিকে সইফ আলি খান ও অমৃতা সিং-এর কন্যা সারার সঙ্গে তাঁর প্রেমের গুজব রটে। এক নেটিজেন তাঁদের রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে বসে থাকতে দেখে সেই মুহূর্তের ভিডিও করেন।নিমেষেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিও। এক ইন্টারভিউতে শুভমনকে, অভিনেত্রী সারার সঙ্গে প্রেম করছেন কিনা জিজ্ঞেস করাতে তিনি উত্তরে বলেন, 'হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না। ' তাঁর এই উত্তরে জল্পনার পলে হাওয়া লাগে। এবার আবারও তাঁকে নিয়ে নতুন জল্পনা।
এবার পরিচালক বিধু চোপড়ার মেয়ে জুনি চোপড়া শুভমনকে নিয়ে লিখলেন। সম্প্রতি এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শুভমন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জুনি। দুটি পুরস্কার পান শুভমন। এই ট্রফি দুটি হাতে ছবি পোস্ট করে জুনি লেখেন, 'অভিনন্দন শুভমন এই ট্রফিগুলি জেতার জন্য। ধন্যবাদ আমাকে এই ট্রফিগুলি ধরতে দেওয়ার জন্য। ভালোবাসি, গর্বিত।' শুভমনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নেটিজেনরাও। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা কি কেবলই বন্ধু ! নাকি শুভমনের মনের নাগাল পেয়েছেন জুনি?
প্রাক্তন ক্রিকেটার ও রাজনীতিক নভজোৎ সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu) বর্তমানে জেলে। এমন সময়েই ক্যান্সার ধরা পড়ল তাঁর স্ত্রীর। প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সার নয়, একেবারে স্টেজ টু ক্যান্সারে (Cancer) আক্রান্ত সিধুর স্ত্রী নভজোৎ কৌর (Navjot Kaur)। এতদিন পাশে ছিলেন স্বামীর। কিন্তু মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনি। হতাশ হৃদয়ে স্বামীর উদ্দেশে টুইটারে লিখলেন নিজের মনের কথা। সেই চর্চায় এখন সামাজিক মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত ৩৪ বছর আগের একটি পথ দুর্ঘটনার মামলায় সিধুকে এক বছরের জেলের সাজা দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে পাতিয়ালা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি তিনি। সিধুর স্ত্রী টুইট করে লেখেন, 'সে এমন এক অপরাধের জন্য জেলে রয়েছেন, যে অপরাধ সে করেইনি। যারা জড়িত রয়েছে তাঁদের ক্ষমা করো। প্রত্যেকদিন তোমার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছি, তোমার থেকেও বেশি কষ্ট পেয়ে। বরাবরের মতোই তোমার কষ্ট দূর করতে চাইছি, তোমার কষ্টের ভাগীদার হয়ে।'
নভজোৎ কৌর আরও হৃদয়বিদারক লেখা লেখেন তাঁর মারণ রোগের কথা লিখে। তিনি লিখেছেন, ' তোমার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম, দেখলাম বারংবার ন্যায় তোমাকে প্রত্যাখ্যান করছে। সত্য ক্ষমতাশালী কিন্তু তা বারংবার তোমার পরীক্ষা নিচ্ছে। কলিযুগ। মাফ করো, তোমার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারলাম না। আজ ছুরি চলবে আমার উপর। কাউকে দোষ দেওয়ার নেই, কারণ সবই ঈশ্বরের পরিকল্পনা। যথাযথ।'
অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে আইসিসির ওডিআই তালিকায় শীর্ষস্থান হারালো ভারত। ভারতকে ২-১ ব্যাবধানে হারিয়ে সিরিজ জয় করে অস্ট্রেলিয়া। তারপরেই বদল হয় আইসিসির তালিকা। যেখানে ভারতকে শীর্ষস্থান থেকে সরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে রাখা হয়েছে, তালিকায় ভারত বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
চেন্নাইয়ে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পরেই নতুন ক্রমতালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। তাদের পয়েন্ট ৩৯৬৫। রেটিং পয়েন্ট ১১৩। সমান রেটিং পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত। যদিও রোহিতদের পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়ার থেকে অনেকটাই বেশি (৫২৯৪)। তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। তাদের পয়েন্ট ৩২২৯। রেটিং পয়েন্ট ১১১। চার নম্বরে থাকা ইংল্যান্ডেরও রেটিং পয়েন্ট ১১১। জস বাটলারদের পয়েন্ট ৩৯৯৮। এই তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে পাকিস্তান। বাবর আজ়মদের পয়েন্ট ২৬৪৯। তাদের রেটিং পয়েন্ট ১০৬।
চেন্নাইয়ে তৃতীয় ম্যাচে সিরিজ়ের মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। সেখানে প্রথমে ব্যাট করে ২৬৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিল ভারত। অর্ধশতরান করেন বিরাট কোহলি। হার্দিক করেন ৪০ রান। কিন্তু অসি স্পিনারদের দাপটে ২৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ২১ রানে ম্যাচ ও সেই সঙ্গে সিরিজ় জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এই সিরিজে সূর্যকুমার যাদব তিনটে ইনিংসেই শুন্য রানে আউট হয়েছেন।
প্রসূন গুপ্ত: অবশেষে ভারত সেরা মোহনবাগান। স্বাভাবিকভাবেই এটা বাংলার আবেগ। আজকাল দুই প্রধানের কর্মকর্তারা হয়তো ট্রফির পিছনে দৌড়ন না। একেবারেই ইউরোপিয়ান ফুটবল ক্লাবের মতো মানসিকতা (যা অবশ্যই পেশাদারি)। আজ আর লোকাল লিগ বা আইএফএ শিল্ড বা ডুরান্ড কিংবা ভারতের অন্য ট্রফির দিকে নজর নেই ক্লাব কর্তাদের। আইএসএল আসার পর যেন ওটাই একমাত্র মোক্ষধর্ম। আজকের দিনে ক্লাবকে ভালোবেসে দিনের পর দিন একই ক্লাবে খেলে যাওয়ার রেওয়াজ নেই।
চিরকাল মোহনবাগানে খেলা বাঙাল চুনি গোস্বামী বা সুব্রত ভট্টাচার্য অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলে খেলা খাস ঘটি শান্ত মিত্র বা প্রশান্ত সিনহার মতো ক্লাব প্রেম কোথায়? ফেলো টাকা পায়ে বল, সংস্কৃতি হারিয়ে গিয়েছে। সোমবার মোহনবাগান তাঁবুতে ট্রফি এসে পৌঁছলে যে উচ্ছ্বাস সমর্থকদের মধ্যে পাওয়া গেল তা এক সময়ে দেখা যেত ৫০ থেকে ৯০ দশকে। তারপর কোথাও কী হারিয়ে গেল? ইস্টবেঙ্গল ৬০-এর দশক থেকে ২০১০ অবধি মাত্র একটিই বছর ট্রফি শূন্য ছিল। ১৯৭৯-এ, অথচ ওই বছর ইস্টবেঙ্গল সারা ভারত থেকে সেরা খেলোয়াড়দের ক্লাবে সই করিয়েছিল। নিশীথ ঘোষ, তিনি জানতে পেরেছিলেন নাকি সুরজিৎ সেনগুপ্তর নেতৃত্বে বাঙালি খেলোয়াড়রা দলের মধ্যে গ্রুপবাজি করছে।
সে বছর প্রবল ক্ষোভের মধ্যে পড়েছিলেন নিশীথবাবু। ১৯৮০-তে দল ভেঙে গেল সুরজিৎ সেনগুপ্ত, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়-সহ প্রায় এক ডজন বাঙালি খেলোয়াড় এবং অন্য রাজ্যের খেলোয়াড়রা ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চলে যান। নিশীথবাবু পিকে ব্যানার্জিকে কোচ করে নিয়ে আসেন। প্রদীপবাবুর হাতে রাইট ব্যাক টমাস ম্যাথুজ এবং স্টপার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ছাড়া কেউই তেমন ছিল না। পরে হাবিব, সুধীর কর্মকাররা দলে এলেন এবং তিন বিদেশী নিয়ে আসলেন পিকে।
মজিদ বাস্কর,জামশেদ নাসিরি এবং খাবাজি। ওই বছর দুটি ট্রফি জয় করল ইস্টবেঙ্গল এবং কোনও দেশীয় টিমের কাছে হারে ক্লাব সেই বছর। এরপর থেকে প্রতি বছর শুধু ট্রফি আর ট্রফি। আর আজ দীর্ঘদিন এই ইস্টবেঙ্গলে কোনও ট্রফি নেই। তাপ-উত্তাপও নেই কর্মকর্তাদের। নিয়মিত প্রধান ক্রীড়া শত্রু মোহনবাগানের কাছে হারছে আর শুনতে হচ্ছে যত বার ডার্বি ততবার হারবি।
মোহনবাগান আইএসএল জয়ের (ISL Champion) পর শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ক্লাব ডেভেলপ ফান্ডে এবং সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমি দেখলাম বাংলারাও অনেক ছেলে এগিয়ে এসেছে। ভারতের হয়েও খেলেছেন এখানেও খেলছেন এবং তাঁদের জীবনে একরাশ স্বপ্ন। বুকভরা স্বপ্ন। আমরা সবাই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, মোহনবাগান (Mohan Bagan Club) একটা করে জিতছে। ইস্টবেঙ্গল বেচারা এবছর দল তৈরি করতে পারেনি ঠিক করে। আমি ওদের দোষ দিচ্ছি না।'
তিনি জানান, 'কারণ হচ্ছে ওরা টিমটা ভালো করে তৈরি করতে পারেনি। কারণ ওদের আর্থিক অসুবিধা ছিল। কিন্তু মোহনবাগান যে খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছে, সেটা হচ্ছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার তো টাকার অভাব নেই। আর ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের কর্ণধার, বাড়তি সাহায্য করে ক্লাবটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মোহনবাগান সুপার চ্যাম্পিয়ন, সুপার জায়ান্ট।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি অরূপকে বলেছিলাম সঞ্জীবের সঙ্গে কথা বলো। এই ATK শুনতে ভালো লাগে না। মোহনবাগান মোহনবাগান। তার ইতিহাস গোর্খাদের বিরুদ্ধে খালি পায়ে লড়াই করে এই মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নাম গোষ্ঠ পাল, আমরা যেন ভুলে না যাই। আমার মনে আছে আমি তখন বেশ ছোট, আর আমার মা খুব খেলা দেখতেন। আমি কার সাপোর্টার বলবো না। আমি সবার সাপোর্টার।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'কিন্তু আমার মা মোহনবাগানের খেলা হলেই কালীবাড়িতে পুজো দিতে যেতেন। আর আমার দাদা মোহনবাগানের সাপোর্টার তবে এখন নিজেই ইস্টবেঙ্গলে আছে। ওর বাড়ি প্রায় ভেঙেই যাচ্ছিল, সারাক্ষণ শুধু ফুটবল ফুটবল ফুটবল। এই করে ওর বৌ একদিন আমায় বলল, ওকে আমি ডিভোর্সই দিয়ে দিব। আমি বললাম কেন? বললো বাড়িতে সময় দেয় না সারাক্ষণ ফুটবল করে বেড়াই। এই করে জীবনটাও কাটিয়ে দিয়েছে। আমাদের পাড়ায় ছোট্টো একটা ক্লাব আছে মিলন সংঘ ক্লাব। সুপার লিগে খেলে। আমি একদিন ইতিহাস বাছতে গিয়ে খবর পেলাম আমার বাবা নাকি স্বাধীনতার আগে ওই ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আজও বাবার নামেই রেকর্ড আছে। এই জন্য আমাদের পরিবার এমনিতেই ফুটবলের সঙ্গে আন্তরিকভাবে যুক্ত।'
তাই তিনি আরও বলেন, 'আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, স্বপ্ন আমিও দেখি। যেদিন ফাইনাল খেলা সেদিন ভোরবেলা আমি দেখছি মোহনবাগান জিতে গিয়েছে। আমি বাড়িতে বললাম তখনও খেলাই শুরু হয়নি। তার মানে মাথায় একটা ক্লিক করছে, বাংলা এত দূর এসেও পিছিয়ে যাবে। এটা কখনও হয় না। এবং এটা আমি অরূপকে ম্যাসেজ করে জানিয়েও দিয়েছিলাম। যাতে চিন্তা করিস না বাংলা আজ ভারত সেরা, আমরা গর্বিত। আমরা কথায় কথায় বলি, what bengal thinks today, India thinks tomorrow- মোহনবাগানই এই পথটা আমাদের দেখিয়েছে। সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল প্রমাণ করে দিয়েছে মোহনবাগান ক্লাব।'
এটা শুধু মোহনবাগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা ভারত সেরা। আগামী দিনে চাই আপনারা বিশ্বসেরা হোন। একদিন মোহনবাগান কেন ব্রাজিলের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন ইতালির সঙ্গে খেলবে না, খেলতে হবে এবং বিশ্বজয় করতে হবে। বাংলাকে নেগলেক্ট করলে হবে না। বাংলা করে দেখাতে পারে। বাংলা জয় করতে পারে। একদিন আপনারা বিশ্বজয় করবেন। সেইদিন মনে রাখবেন এই ছোট্টো কথাটা আমি বলে গিয়েছিলাম কারণ আমি মনে করি সারা পৃথিবী একদিন আপনাদের দরজায় আসবে। এভাবেই মোহনবাগান সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আমি সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য এবং মোহনবাগান ক্লাবকে ডেভলপ করতে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে যাচ্ছি। আপনারা আরও ভালো খেলুন, আমাদের গর্ব আপনারা। এই মন্তব্য এদিন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'খেলা হয়েছে, খেলা হবে, আবার খেলা হবে। আবার জিততে হবে। বিশ্বজয় করতে হবে, আমি বিশ্বকাপ নিয়ে আসতে চাই।'
স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের নেতৃত্বে ব্যর্থ দল (Eastbengal)। সে জন্যই হয়ত পরিবর্তন হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কোচ। কিন্তু সেই দৌড়ে কে এগিয়ে? প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরমহল-সহ ভক্তমহলে। স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের কোচিংয়ে আইএসএলে (Isl) ভাল ফল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। সেই জায়গা দখলের লড়াইয়ে কে এগিয়ে? নাম উঠছে জোসেফ গোম্বাউয়ের। লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন ক্লাব, বার্সেলোনার যুব দলের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। আইএসএলেও কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে জোসেপের। ওড়িশা এফসির কোচ ছিলেন তিনি। এ বারের প্রতিযোগিতা শেষে ওড়িশার দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি।
পরপর দু'বছর ভালো ফল না করতে পেরে ভারতের প্রাক্তন কোচ স্টিভন কনস্ট্যানটাইনকে কোচ করে আনে ইস্টবেঙ্গল। তাতে অবশ্য পরিস্থিতি বদলায়নি ইস্টবেঙ্গলের। এবছরও ইস্টবেঙ্গল নবম স্থানে লীগ শেষ করে। তারপরেই কোচ বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই দলের তরফে খবর। সেই দৌড়ে এখনও অবধি এগিয়ে মেসির প্রাক্তন প্রশিক্ষক জোসেপ গোম্বাউ। এখন কতদিনে ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কোচ হিসেবে চুক্তি সই করবেন গোম্বাউ সেটাই দেখার!
দশ উইকেটে ভারতকে (India) হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরালো অস্ট্রেলিয়া (Australia)। রবিবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে স্টার্কের দাপটে ভারত শেষ হয়ে যায় ১১৭ রানে। যদিও বাঁহাতি পেসারে দাপট মানতে চাননি ভারত অধিয়ানক রোহিত (Rohit sharma) শর্মা। রবিবার বিরাট কোহলির উইকেট ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ৫ উইকেটই নিয়েছেন ক্যাঙ্গারু বাহিনীর এই বাঁহাতি পেসার।
রবিবার ম্যাচের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত অধিয়ানক রোহিত শর্মা বলেন, 'আমরা ডান হাত, না বাঁ হাত সেটা দেখি না। উইকেট হারানোটাই চিন্তার। সেটার দিকে নজর দেব আমরা। কী ভাবে আউট হচ্ছি, কী করতে হবে, সেই সব নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। পেসারদের বিরুদ্ধে আরও ভালওো ভাবে তৈরি হয়ে নামতে হবে। কিছু জিনিস ঠিকঠাক না হলে সেটা নিয়ে নানা ভাবনা আসে। আমাদের জন্য আজ কোনও কিছুই ঠিক করে কাজ করেনি। '
রবিবারের ম্যাচে সেরা হন অস্ট্রেলীয় পেসার স্টার্ক। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন বিরাট কোহলি। রবিবার ভারতের হারের পর সিরিজ় ১-১। শেষ ম্যাচ ২২ মার্চ চেন্নাইয়ে। সেই ম্যাচের গুরুত্ব বেড়ে গেল। সিরিজ় কে জিতবে তা ঠিক হবে ওই ম্যাচে।
প্রসূন গুপ্ত: অবশেষে আইএসএল (ISL) ট্রফি জয় করলো শতাব্দী প্রাচীন মোহনবাগান দল। থুড়ি এটিকে মোহনবাগান (Mohunbagan)। যদিও শনিবার রাতেই উল্লাসিত দলের কর্নধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা দলের এটিকে নামটিকে বিদায় দিলেন, এবার থেকে নতুন মোড়কে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস। কিন্তু সাহেবদের ১৯১১-তে পরাজিত করা মোহনবাগান সমর্থকরা চায়, স্বাধীনতার লড়াইয়ে প্রথম ক্রীড়া দল স্বনামেই বিরাজমান হোক।
আরব সাগরের তীরে কাজু আর ফেনির গন্ধে ম-ম করা অথবা চিরকালের বাঁধা না মানা বাঙালির রোমান্টিকতা খোঁজা গোয়া কিন্তু বঙ্গবাসীকে বেড়াতে যাওয়ার বোনাস দিল আইএসএল ট্রফি। পমফ্রেট ফ্রাইয়ে শনিবার রাতে উপস্থিত বাঙালি আনন্দ করতে পারেনি। মন পড়ে রয়েছে মানিকতলা বা মালদা বাজারের গলদা চিংড়ির দিকে। রবিবার বোধহয় ধর্মতলার নিউ মার্কেটে কুঁচো চিংড়িও পাওয়া যাবে না।
আজ টুটু বোস বা মন্ত্রী অরূপ রায়ের বাড়ির লাঞ্চের মেনু কী জানতে উৎসুক ঘটি-বাঙাল সবাই। আজ আর ঘটি বাঙালের ঝগড়া নেই। আমরা পারছি না তা বলে বাংলায় ট্রফি আসবে না তা মোটেই চাই না, বলেই ফেললেন বাঙাল মন্ত্রী ইস্টবেঙ্গলের গোড়া সমর্থক পার্থ ভৌমিক। দিলীপ ঘোষকে খুশি মনেই ট্রফি জয়ের শুভেচ্ছা জানাবেন কি গর্বিত কাঠ বাঙাল রূপা গাঙ্গুলি?
বহুদিন বাংলায় ট্রফি নেই। আজকাল আর আই লিগ, আইএফএ শিল্ড বা ডুরান্ড ইত্যাদি ট্রফির দিকে নজরই নেই কলকাতার দুই প্রধানের। এখন তো আর জ্যোতিষ গুহ বা ধীরেন দেরা ক্লাব চালান না বা ওই ঐতিহ্য রাখাও সম্ভব নয়। ওসব অতীত মূল্যহীন। এটা ফেল কড়ি মাখো তেলের যুগ। কোটি কোটি টাকা ঢালো দল গড়ো। কে বাঙাল কে ঘটি কিছু আসে যায় না। যদি এমন হয় যে, গোটা দলটিতেই অবাঙালি বা বিদেশী দরকার তো কোই পরোয়া নেহি। দলের নামের আগে বা পরে যদি স্পনসরের নাম বসাতে হয় তবে তাই সই। হচ্ছেও তাই। আজকের বাজারে ট্রফি নিয়ে কেউ পাত্তা দেয় না। দুই দলের সুস্থ শত্রুতাটিও বিদায় নিয়েছে। টার্গেট একটিই আইএসএল ট্রফিতে কটা জয় জরুরী তাই ভাবো।
কিন্তু মালিকরা কি ভাবল তা নিয়ে কী আসে যায়। আজও দুই ক্লাবে খ্যাপা দর্শকের প্রাচুর্য, তারা জয় চায় ট্রফি চায়, তা ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-৩ হোক না কেন।
সেই জয়ই পেল মোহনবাগান। মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা রাতেই এসে গেল কর্মকর্তাদের কাছে। এল শুভেচ্ছা ইস্টবেঙ্গল সহ বিভিন্ন ক্লাব থেকে। শুভেচ্ছা তো চিরকালীন কিন্তু ওপার থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একটা গর্বের জায়গা ছিল ইস্টবেঙ্গল, কিন্তু তার হতশ্রী অবস্থা দেখে ওপার থেকে আসা মানুষগুলো ভাবে কবে আর স্বনির্ভর হবো।
আইএসএল (isl) জয়ের পরেই মোহনবাগানের নাম পরিবর্তনের বড় ঘোষণা ক্লাব মালিক গোয়েঙ্কার (goenka) । শনিবারই পেলান্টিতে ৪-৩ গোলে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য আইএসএল জিতে নেয় এটিকে মোহনবাগান। এর পরেই মোহনবাগান ক্লাব মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ঘোষণা করে দলের নাম পরিবর্তনের কথা। শনিবার তিনি জানান, আইপিএলে তাঁর দল লখনউয়ের আদলে মোহনবাগানের আগে জুড়বে ' সুপারজায়ান্ট' অর্থাৎ মোহনবাগানের নামের শুরু থেকে সরে গেল ‘এটিকে’। পরের মরসুম থেকে দলের নতুন নাম হচ্ছে ‘মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস’। শনিবার মোহনবাগান জেতার পরে সঞ্জীব বলেন, ‘বাগান সমর্থকরা মোহনবাগানের নামের সামনে থেকে এটিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছিলেন। এটাই মোহনবাগান সদস্য ও সমর্থকেদের আমার উপহার।’
ফুলটাইম হওয়ার পর দুপক্ষেরই গোল সংখ্যা ছিল ২-২, পরে পেলান্টিতে ৪-৩ গোলে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে দেয় এটিকে মোহনবাগান। মোহনবাগান এর আগে তিন বার জাতীয় লিগ এবং দু’বার আই লিগ জিতেছিল। এটিকের সঙ্গে জুটি বাঁধার পর এই প্রথম আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান। মোট ছ’বার ভারতসেরা হল সবুজ-মেরুন। প্রথম বার তারা জাতীয় লিগ জিতেছিল ১৯৯৮ সালে। ২০০০ এবং ২০০২ সালেও জাতীয় লিগ জেতে মোহনবাগান। জাতীয় লিগের নাম পাল্টে আই লিগ হওয়ার পর বেশ অনেক বছর অপেক্ষা করতে হয় সবুজ- মেরুনকে। ২০১৫ সালে ট্রফি জিতেছিল তারা। এ বারের লিগে মোহনবাগান শেষ করে তিন নম্বরে। ২০ ম্যাচে তারা পেয়েছে ৩৪ পয়েন্ট। লিগে ইস্টবেঙ্গলকেও দু’বার হারায় সবুজ-মেরুন।
প্রসূন গুপ্ত: সুনীল গাভাসকারকে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব হিসাবেই সম্মান করা হয়। করা হবেই বা না কেন, তাঁর আমলে তিনি ছিলেন বিশ্বসেরা ওপেনার। স্বয়ং স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস থেকে ইমরান খানের মতো বিশ্বসেরার বলেছেন যে তাদের আমলের সেরা ব্যাটার সানি গাভাসকার। সানি শুধু ক্রিকেটের মাঠেই পড়ে থাকেননি, তিনি দুর্দান্ত ভাষ্যকার এবং নানা টক শো-এর প্রধান মুখ। তাঁর ফ্লিক বা স্ট্রেট ড্রাইভের মতোই যেকোনও তর্কে সেরা বক্তা হতেই পারেন সানি গাভাসকার।
গাভাসকার অত্যন্ত বুদ্ধিমান, তিনি চিরকাল অন্য ক্রিকেটারদের তাঁর থেকে সেরা বলেছেন। যেমন কপিল দেব বা গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ। কিন্তু ক্রিকেটে ত্রুটি দেখলে তিনি কাউকে ছেড়ে কথা বলেন না। সৌরভ দল থেকে বাদ পড়লে তিনি সমালোচনা করেন, আবার বিরাট কোহলি ফর্ম হারালে তাঁকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েন না। ইদানিং তাঁর শহরের রোহিত শর্মার ফর্ম নিয়ে তিনি চিন্তিত। তিনি বলেছেন, বর্তমান অবস্থায় নতুন অধিনায়ক খোঁজার সময় এসেছে। অবশ্য তিনি সাদা বলের কথা বলেছেন অর্থাৎ ৫০ ও টি-২০-র নতুন অধিনায়ক।
বর্তমানে রোহিতের বয়স প্রায় ৩৬। এই বয়সে গাভাসকার খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সানি মনে করেন আগামী বিশ্বকাপ, যা কিনা ভারতে হতে চলেছে, ওই বিশ্বকাপ অবধি রোহিত অধিনায়ক থাকুন তারপর আসুন নতুন অধিনায়ক। ইদানিং ভারতীয় দলে এতো অধিনায়ক বদল হয়েছে, যা প্রায় রেকর্ড। এমন এক অধিনায়ক আসুক যিনি সব ধরণের ক্রিকেট পরিচালনা করতে পারবেন। কিন্তু তেমন ক্রিকেটার কোথায়?
কেএল রাহুল ভালোই খেলছিলেন কিন্তু এখন ফর্মহীন। গাভাসকার হয়তো চাইছেন রোহিত আরও দু-এক বছর টেস্টের অধিনায়ক থাকুন। কিন্তু তিনি বলেই ফেলেছেন যে ওয়ান ডে বা টি ২০-র অধিনায়ক করা হোক হার্দিক প্যাটেলকে। হার্দিক অলরাউন্ডার এবং ভালো ফিল্ডার। দল পরিচালনায় পটু তা আইপিএলে দেখা গিয়েছে। কাজেই হার্দিকের জন্যই হাত তুলেছেন সানি গাভাসকার।
প্রসূন গুপ্ত: আহমেদাবাদ টেস্ট ড্র, এই ভবিষ্যৎবাণী এই মুহূর্তে ছোট বাচ্চাও করে দিতে পারবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষ টেস্ট অমীমাংসিত শেষ করেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত। নেপথ্যে বরুণ দেবের কৃপাদৃষ্টি। বিশ্বের এক গোলার্ধে রোদের তেজ যখন শরীরে নেওয়া দায়, তখন অপর গোলার্ধে প্রবল বৃষ্টি। কথা হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের। এই টেস্টে কিউইদের বাগে পেয়েও ম্যাচ পকেটে পুড়তে পারেনি শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টির কারণে প্রায় ৪ ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকায় অ্যাডভান্টেজ পায় কিউইরা। আর সেই অ্যাডভান্টেজকে কাজে লাগিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজদের পরাস্ত করেন কেন উইলিয়ামসনরা।
আর শ্রীলঙ্কার কপাল পুড়লেও শিকে ছিঁড়ল ভারতের। আহমেদাবাদ টেস্ট শুরুর আগে ভবিষ্যৎবাণী ছিল জেতা অবশ্যম্ভাবী ভারতীয় দলের। কারণ জিতলেই জুন মাসে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে লন্ডনে উড়ে যাবেন রোহিত, বিরাট, শুভমন গিলরা।
ইতিমধ্যে পয়েন্টের নিরিখে অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে চলে গিয়েছে। দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হিসেবে দৌড়ে ছিল শ্রীলঙ্কা অথবা ভারত। ইন্ডিয়া এই টেস্ট জিতলেই সরাসরি ফাইনালে চলে যেত। হারলে সমস্যা ছিল নিশ্চিত, কিন্তু ড্র করলে তাকিয়ে থাকতে হতো নিউজিল্যান্ডের দিকে। সেই তিন নম্বর সম্ভাবনাই সত্যি করে লন্ডনের বিমানের টিকিট পাকা রাহুল দ্রাবিড়ের দলের।
এবার প্রশ্ন হলো এই গাভাসকার-বর্ডার টেস্ট সিরিজ থেকে প্রাপ্তি কী? প্রথমত বলতেই হয়, জেদাজেদিতে আগের তিন টেস্টে এমন উইকেটে হয়েছে যাকে ক্রিকেটের পরিভাষায় বলে আন্ডার প্রিপেয়ার্ড উইকেট। ঝুরঝুরে উইকেট, যেখানে আগের টেস্টগুলি তিনদিনের মধ্যে শেষ হয়েছে। ব্যাট হাতে ক্রিকেটাররা রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে। ব্যাটিংয়ের পরিবেশ ছিল না। প্রথম দিন থেকেই দুরন্ত ঘূর্ণির এই লেগেছে পাকের মতো স্পিনারদের বল ব্যাটারদের কাহিল করেছে।
প্রাপ্তি একমাত্র প্রথম টেস্টে অধিনায়ক রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি। কিন্তু ইন্দোর টেস্টের পিচ তৃতীয় টেস্টে বুমেরাং হয়েছে ভারতের। নির্মম ভাবে পরাজিত হতে হয়েছিল রোহিতদের। দুই দলই দল গঠন করেছিল স্পিনার নিয়ে। কে কবে শুনেছে অস্ট্রেলিয়া তিন স্পিনার নিয়ে খেলছে!
শেষ টেস্টে ওই স্ট্র্যাটেজি থেকে সরে আসে ভারত। আহমেদাবাদ টেস্টের জন্য পিচ একেবারে ব্যাটারদের উপযুক্ত করে খেলতে নামে ভারত। ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত ফল করে দুই দল। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়ার উসমান খোওয়াজা ও ক্যামেরন গ্রিনের সেঞ্চুরি-সহ অস্ট্রেলিয়ার ৪৮০ রান করে। প্রথম ইনিংস ভারতের শেষ হয় ৫৭১ রানে। ওপেনার শুভমান গিল দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন, সবাইকে ছাপিয়ে ৩ বছর বাদে টেস্টে বিরাটও সেঞ্চুরি করেন। ভিকে-র অসাধারণ ১৮৬-র এক ইনিংসের উপর ভর করে খেলে ভারতের ইনিংস ৫৭১-এ শেষ হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে পিচে সময় কাটায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ২-১-এ সিরিজ জিতে ট্রফি যায় ভারতের ঝুলিতে।
ইন্দোর টেস্টের ঘূর্ণি উইকেটের পালা চুকিয়ে আমদাবাদে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট। ফলে যত দিন গড়াচ্ছে কমছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া চতুর্থ টেস্টে ফলাফলের আশা। শনিবার এই টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে ভারতের প্রথম ইনিংসের রান ৩ উইকেটে ২৮৯। শতরান শুভমান গিলের, পাল্লা দিয়ে অর্ধ সেঞ্চুরি বিরাট কোহলির। এই টেস্টে দ্বিতীয় শতরান করলেন শুভমন। প্রায় ১৪ মাস পর টেস্টে অর্ধশতরান কোহলির। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ ৪৮০ রানে।
ক্রিকেট লিখিয়েরা বলছেন, ব্যাটাররা ভুল না করলে আমদাবাদের ২২ গজে তাঁদের আউট করা প্রায় অসম্ভব। ভারতীয় বোলারদের মতো অস্ট্রেলিয়ার বোলারদেরও উইকেটের জন্য সারা দিন মাথা খুঁড়তে হয়েছে। ম্যাচের তৃতীয় দিনে স্টিভ স্মিথদের প্রাপ্তি মাত্র ৩ উইকেট। অন্যদিকে ভারতের প্রাপ্তি ২৫৩ রান। সাদা বলের ক্রিকেটে আগেই রানে ফিরেছেন ভিকে। এবার লাল বলের ক্রিকেটে রান পেলেন কিং কোহলি। দিনের শেষে তিনি অপরাজিত ৫৯ রানে। শুরুতে একটু সাবধানে খেললেও সময়ে সঙ্গে সঙ্গে সাবলীল লেগেছে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে।
এদিকে, কেএল রাহুলের প্রথম একাদশে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ করে নজরকারা শুভমনের শতরান। ইন্দোর টেস্টে রান পাননি এই তরুণ ক্রিকেটার। তবে আমদাবাদে খেলেছেন নিখুঁত ইনিংস। তাঁর ১২৮ রানের ইনিংসে ছিল পরিণত টেস্ট ওপেনারের ছাপ। তাঁর ২৩৫ বলের ইনিংসে রয়েছে ১২টি চার এবং ১টি ছয়।
প্রসূন গুপ্ত: বৃহস্পতিবার থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুরু চতুর্থ তথা শেষ টেস্ট। আহমেদাবাদের এই টেস্টে ভারতকে জিততেই হবে। ইতিমধ্যে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যোগ্যতা অর্জন করেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারত যদি এই টেস্ট জিততে পারে তবে ১২ পয়েন্ট পেয়ে লর্ডসে যেতে পারবে। অবশ্য ড্র করলে ৪ পয়েন্ট পেয়ে একটা ক্ষীণ আশায় তাকিয়ে থাকবে নিউজিল্যান্ডের দিকে। আহমেদাবাদের প্রবল গরমে খেলা শুরু হয়েছে। অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপাতত মধ্যহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত ২ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ অস্ট্রেলিয়া (এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)। ক্রিজে রয়েছেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। প্রথম দিনের খেলা শেষ হতে হাতে এখনও ৩৭ ওভার।
এ তো খেলার মাঠের কথা। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার আগে অনেক বিতর্ক হয়েছে আহমেদাবাদ টেস্টকে ঘিরে। আগের তিন টেস্ট নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে শেষ হয়ে যাওয়ায় একাধিক প্রশ্ন তুলেছে আইসিসি। তাদের প্রশ্ন, বিশেষ করে গত ইন্দোর টেস্টকে ঘিরে। সেই টেস্ট একেবারে ব্যাটেরদের বদ্ধভূমি ছিল। ঝুরঝুরে পিচ, ব্যাট নাকি করা যায়নি প্রথম দিন থেকে। বাস্তবিক যে, যেকোনও ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ তার নিজের মতো উইকেট তৈরি করতে পারে। কিন্তু তা বলে এই রকম ঘূর্ণি পিচ নিয়ে প্রশ্ন বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থার।
কোচ দ্রাবিড় যদিও জানিয়েছেন, এসব পিচে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা সেঞ্চুরি-সহ ৩০০র বেশি রান করেছেন। বিরাট কোহলির রানও ২০০-র বেশি, তবে প্রশ্ন উঠছে কেন। এই বিতর্ক যদিও ঢাকা দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু বিস্ফোরক মন্তব্য করেন প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। এবার তিনি রয়েছেন কমেন্ট্রি বক্সে।
শাস্ত্রী, ইন্দোর টেস্টে ভারত বিপাকে পড়ার পর ধারাভাষ্যে বলেছেন, অতিরিক্ত আত্মতুষ্টি এসে গিয়েছিল নাকি রোহিত বাহিনীর। এটাই নাকি টেস্টে হারার কারণ।এই কথায়, শাস্ত্রীর পাল্টা রোহিত জানান, পরপর দুটি টেস্ট জেতার পর নিজেদের আত্মবিশ্বাস আসতেই পারে। যারা বলে (পড়ুন রবি শাস্ত্রী) আত্মতুষ্টি, তাদের কথা "জঞ্জাল", এভাবেই রোহিত শর্মা শাস্ত্রীকে ডাস্টবিনে ফেলেছেন। আপাতত খেলায় মন ভারতের। পিচ স্পিনের হলেও প্রথম থেকেই সাহায্য পাওয়া যাবে কম। সেকারণে ভারতীয় দল সেরা ফাস্ট বোলার শামিকে ফিরিয়ে এনেছে। বাংলার পেসার কিন্তু দ্রুত একটি উইকেট পেয়েছেন। এবার নজরে বাকি চার দিন।
প্রসূন গুপ্ত: তিনটি টেস্ট ভারতের মাটিতে হয়ে গেলো অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। গত দুই শতাব্দী ধরে বলতেই হবে ক্রিকেট বিশ্বে অজিরাই সেরা। কিন্তু এহেন অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে টক্কর তো ভারত দিয়েছে। বছর দুয়েক আগে ভাঙাচোরা দল নিয়ে তাদের মাটিতে সিরিজ জয় করেছিল সফরকারী ভারত। এবারও ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৩টি টেস্টের মধ্যে দুটিতে পরাজিত করে অবশেষে পরাজিত হতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। অজিদের নতুন টেস্ট অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ।
কোনও টেস্টই আড়াই বা তিন দিনের বেশি গড়ায়নি বিদঘুটে ঘূর্ণি পিচের কল্যাণে। এমন উইকেট বা পিচ করা হয়েছে যে স্পিনারদের বল লাট্টুর মতো ঘুরেছে। দুই দলের কেউই সুবিধা করতে পারেনি। ক্রিকেট বিশ্বে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে এ কেমন উইকেট?
এই ঘূর্ণি পিচ যে এর আগে কখনও হয়নি তা নয়, কিন্তু অনেকের মতে এ যেন ধানক্ষেতের মতো উর্বর মাঠ। প্রথম বল থেকেই বল ঘুরছে। এই নিয়ে অবশ্য রবি শাস্ত্রী প্রমুখদের বক্তব্য, অস্ট্রেলিয়ায় গেলে কি ওরা স্পোর্টিং পিচ দেবে? সেখানে তো সবুজ পিচ ফাস্ট বোলারদের চারণভূমি!
কিন্তু এটা মোটেই সঠিক যুক্তি নয়। ফাস্ট বোলারদের পিচে গাভাস্কার থেকে তেন্ডুলকররা অজস্র রান করেছেন। উইকেট পেয়েছেন কপিল দেব থেকে আজকের শামিরা। বাস্তবিক অর্থে আজকে ভারতের হাতেও সত্যিকারের ফাস্ট বোলার রয়েছে অন্তত এক ডজন। যাদের মধ্যে হাফ ডজন নিয়মিত টেস্ট বা ওয়ান ডে খেলছেন। নিশ্চয় ভারত স্পিনিং ট্র্যাক করতেই পারে, কিন্তু তাই বলে এমন উইকেট যেখানে খেলা তিন দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়!
বুমেরাং হয়েছে গত ইন্দোরের টেস্ট। অস্ট্রেলিয়া এবারের সফরে ৪ স্পিনার নিয়ে এদেশে এসেছিল, আজ তাঁরাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এমনটি দাঁড়িয়েছে যারা আগে টস জিতবে বা পিচ দেখে ব্যাট করবে, তারাই ম্যাচের সিকন্দর হবেন।
কামিন্স দেশে ফিরে যাওয়ার দায়িত্বে এসেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। তিনি দেখিয়ে দিলেন ভারতের মাটিতে এবং স্পিনিং ট্র্যাকে কীভাবে জিততে হয়। চতুর্থ টেস্ট আহমেদাবাদে ৯ মার্চ থেকে। এর আগে হোলি উৎসব কাজেই হালকা মেজাজে রয়েছেন খেলোয়াড়রা। চতুর্থ টেস্টে জিতলে বিশ্ব টেস্ট ক্রিকেটের ফাইনালে যেতে পারবে ভারত। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই ফাইনালে চলে গিয়েছে। রোহিত শর্মা ভাবছেন কী?
আগের দুই টেষ্টের মতোই তৃতীয় টেস্টেও ইন্দোরে ঘূর্ণি পিচ করেছিল ভারত। আগের দুই টেস্টে ভারতের কাছে দুরমুশ হয়েছিল প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। দিল্লির টেষ্টের পরেই কামিন্স দেশে ফিরে যান মায়ের অসুস্থতার জন্য। অনেকেই বলেছেন, অসুস্থ হওয়াটা নাকি বাহানামাত্র, আসলে ভারতে এসে সবকটি টেস্ট হেরে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার দায়ভার নিতে চায়নি কামিন্স। অবশ্য তা একদিকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ভালোই হয়েছে, নেতৃত্বে ফিরেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ।
স্মিথকে কোনও একটি দোষের জন্য শাস্তিস্বরূপ নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। এটা বাস্তব স্মিথ কিন্তু যেমন ভালো ব্যাটার তেমনই ভালো অধিনায়ক। কামিন্স ফিরে আসাতে ভালোই হল স্মিথের পক্ষে। ভারতের উইকেট সম্বন্ধে ভালো ধারণা রয়েছে তাঁর। আইপিএলে অধিনায়কও হয়েছেন। ভারতের পিচ বা উইকেট নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যে, এ কোন ধরণের উইকেট যেখানে ব্যাট ধরতেই পারছেন না।
দুই দলের খেলোয়াড়রা। আইসিসি-তে অভিযোগ দেওয়ার কোথাও হয়েছে। ভারতের বক্তব্য এবিষয়ে পরিষ্কার যে, অস্ট্রেলিয়ায় গেলে গ্রিন টপ উইকেট দেওয়া হয় যেখানে গোলার মতো ফাস্ট বোলাররা বল করে, সেখানে ভারতে উইকেট স্পিনারের উপযুক্ত হবে এটাই তো স্বাভাবিক। যদিও ভারতে বিশ্বসেরা ফাস্ট বোলার রয়েছে। কিন্তু ওই বল খেলে অভ্যস্ত অজিরা, কাজেই তাদের বিপাকে ফেলার উপায় স্পিনিং ট্র্যাক।
বুধবার ইন্দোরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মার দল মাত্র ১০৯ রানে সবাই আউট হয়ে যায়। বেশি রান করেন বিরাট কোহলি মাত্র ২২। অস্ট্রেলিয়া এবার ভারতে ৪ জন স্পিনার নিয়ে এসেছিল। ম্যাথু কুনেমান ৫ উইকেট, নাথান লায়ন পান ৩ উইকেট এবং টড মার্কি একটি। এরপর ব্যাট করতে নেমে কিন্তু এক উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ভারতের রানকে টপকে যায়।
কিন্তু তারপরেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন জাদেজা। তিনি পরপর ৩ উইকেট এবং সর্বোপরি ৪ উইকেট দখল করেন। আপাতত অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে ১৫৪। সেরা ব্যাটাররা সবাই আউট। কিন্তু কোনওভাবে যদি প্রথম ইনিংসে ১০০ বা তার বেশি রানের লিড নিতে পারে অজিরা তবে ভারত চাপে পড়বে। কাল এই টেস্টের দ্বিতীয় দিন।