Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্তঃ ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা বলে একটি কথা কথিত আছ। একসময় ওয়েস্ট ইন্ডিসের ফাস্ট বোলার চার্লি গ্রিফিথের বাউন্সার মাথায় লেগে তৎকালীন অধিনায়ক নরি কন্ট্রাক্টরের মাথার খুলির একটি অংশ উড়ে যায়। তাঁকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করার পরে প্রথম রক্ত দিতে আসেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক স্যার ফ্রাঙ্ক ওরেল। এর বহু বছর পরে ওরেলের মৃত্যুর পরে কলকাতায় তাঁর স্মৃতিতে রক্তদান দিবস পালন করা হলে প্রথম রক্ত দেন কন্ট্রাক্টর।
আজকের পেশাদারি ক্রিকেটে বইয়ে লেখা ভদ্রলোক পাওয়া কঠিন। আজ প্রতিটি দল জিততে চায়। এই জয়ের জন্য খেলোয়াড়রা মাঠে ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে যান। অবিশ্যি তার জন্য সব ক্রিকেটারই ভদ্রতা পালন করেন না এমনটা নিশ্চয় বলা যাবে না। তবে দু'তিন দশকের মধ্যে রাহুল দ্রাবিড় সম্বন্ধে দৃঢ়ভাবে বলা যায় তিনি আদ্যন্ত ভদ্রলোক ছিলেন। খেলার সময়ে তো বটেই কোচ হিসাবেও। সৌরভ-রাহুল একসাথে টেস্ট ম্যাচ শুরু করলেও সচিন নেতৃত্ব ছেড়ে দিলে সৌরভকে ভারতের অধিনায়ক করা হয়। সৌরভের অধীনে রাহুল ৫ বছরের বেশি ম্যাচ খেলেছেন এবং জীবনের সেরা খেলা তখনই দেখা গিয়েছে। বহু ম্যাচ রাহুল একার দায়িত্বে ভারতকে জিতিয়েছেন। দলের সবচাইতে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার হওয়া সত্ত্বেও সচিনের ব্যাটিংয়ের কাছে পিছনের সারিতে রয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর অধিনায়কত্বে ভারত খুব খারাপ সময় কাটিয়েছে, তাই নিজ দায়িত্বে নেতৃত্ব ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করেননি। এক সময় এক প্রকার তাঁকে বিদায় দিতে বোর্ড উঠে পরে লাগলে তিনি নিজেই খেলা ছেড়ে দেন এবং বিশেষ কোনও ম্যাচ খেলার দরকারও বোধ করেননি।
সম্প্রতি তিনি ভারতের কোচ হয়েছিলেন বন্ধু সৌরভের অনুরোধে। ভারত যথেষ্ট ভালো পারফর্ম করে সম্প্রতি এশিয়া কাপ জিতেছে। বিশ্বকাপ না পেলেও ভারতই এখন বিশ্বের সেরা দল। সেই তিনি ভারতের কোচিং ছেড়ে দিলেন। এবারে উচ্চ শিক্ষিত রাহুল দ্রাবিড় কি করবেন? এতদিন গ্ল্যামার জগতে থেকে এবারে নিশ্চয় নতুন করে কর্পোরেট দুনিয়াতে চাকরি করবেন না। নাহ তেমনটির দরকার হবে না। তাঁর পাশে দাঁড়ালেন কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। এবারে সঞ্জীবের আইপিএল দল লখনউ সুপার জায়ান্টের মেন্টর হলেন রাহুল। ফের মাঠেই নামবেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দলের কোচিংয়ে ফেরাতে চান রাহুল দ্রাবিড়কে।