সৌমেন সুর: আজ অদ্ভুত একটা ছবি চোখের সামনে কদর্যভাবে ফুটে ওঠে। যে যার চেয়ার সামলে রাখার জন্য যত রকম প্রক্রিয়া আছে কাজে লাগাচ্ছে। সাধারণ মানুষের কথা ভাবার দরকার নেই, আমার অস্তিত্ব টিকে থাক এটাই বড় কথা। আজ সারা দেশে একটা ঘৃণ্য চক্রের জন্য মানুষের নাভিশ্বাস উঠে চলেছে। এ যেন এমনই 'অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ।' জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে আমাদের দেশ, ঠিক চীনের পরেই। ১৪০ কোটি সংখ্যাটা বাড়তে বাড়তে একটা আতঙ্কময় বিভীষিকার পথে এগিয়ে চলেছে। মানুষের সংখ্যা বাড়লে জনসংখ্যা ও খাদ্যের যোগানের ভারসাম্য নষ্ট হয়। অনিবার্যভাবেই খাদ্যাভাব,অপুষ্টি, দুর্ভিক্ষ মহামারী ইত্যাদি দেখা দেয়। দারিদ্র্যের কবলে পড়ে ছটফট করে মানুষ। চাকরির বাজার ভেঙে পড়ে, যাকে বলে মন্দার বাজার। বেকারের সংখ্যা বাড়ে, প্রতিযোগিতার রেষারেষি তীব্র হয়। মূল্যরোধে চিড় ধরে। সামাজিক অপরাধের মাত্রা বাড়ে। একটা আতঙ্কময় জীবন যাত্রা।
যে কোন উন্নয়নশীল দেশে অর্থনীতি ও জনসংখ্যা পরস্পরের হাত ধরাধরি করে চলে। দুজনের সঙ্গে সখ্যতা দারুন, উৎপাদন ও বন্টন এই দুটোই অর্থনীতির প্রধান বিষয়। এই দুটোই জনসংখ্যা কে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে। আজ জনসংখ্যা দুনিয়া জুড়ে মহাসমস্যা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সমস্যা আরও বেশি। উন্নতিশীল দেশের সমস্যা সেখানে তুলনায় অনেক কম। ভারতের পরিস্থিতি আরো অগ্নিগর্ভ। বর্তমানে ১৪০ কোটি অতিক্রম করে গেছে বোধহয়! এই হারে জনবৃদ্ধি চলতে থাকলে ভারতের অর্থনীতি বিধ্বস্ত হবে। ভারতের ঐতিহ্য সংস্কৃতির উপর নেমে আসবে অভিশাপ। জনবৃদ্ধি হওয়ায় মাথাপিছু জমির পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। বায়ুতে অক্সিজেন কমছে আর কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অরণ্য ধ্বংস হচ্ছে, অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, নানা রোগে জনজীবন আক্রান্ত হচ্ছে, আর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। আর কালবিলম্ব না করে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করার জন্য জাতিধর্মনির্বিশেষে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কঠোরভাবে প্রয়োজন। নয়া দৃষ্টিকোণ থেকে বাস্তবমুখী নয়া অর্থনীতির রূপায়ন। রুপায়ন না করলে দেশকে দাসত্ব স্বীকার করতে হবে অন্যের কাছে।