সৌমেন সুর: ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার মেয়েদের বাড়ির সদর দরজার বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। তাঁরা পর্দাসীন ছিল। তবু শত শত নারী তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিল স্বাধীনতার নিরিখে। নিজেদের নাম, যশ, মোহ ত্যাগ করে স্বাধীনতার সংগ্রামে জড়িয়েছিলেন বহু নারী। তৎকালীন সমাজে কোণঠাসা হয়ে থাকা মেয়েরা নিজের নিজের জায়গা থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের কাজ করেছেন গোপনে বা প্রকাশ্যে। কেউ সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, কেউ প্রাণ দিয়েছেন, কেউ বা ব্রিটিশ পুলিসের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে নিজের প্রাণকে আত্মহুতি দিয়েছে দেশমাতৃকার চরণে।
আজ এমনই একজন দেশপ্রেমী নারীর কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করব, যার নাম আমরা অনেকেই জানি না। মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা হলেন সত্যবতী। বিধবা এই অসহায় মহিলাকে কিছু স্বার্থপর মানুষ কার্যসিদ্ধির জন্য তাঁকে দেহপসারিণী করে তুলেছিল। এই বিভীষিকাময় জীবন মেনে নিলেও সত্যবতীর মন পড়েছিল পরাধিন দেশকে কীভাবে শৃঙ্খলমুক্ত করা যায়। তাঁর ঘরে নিত্য আসা এক গ্রাহক পুলিস অফিসারের থেকে তথ্য নিয়ে পাচার করেন বিপ্লবীদের ম্যাসেঞ্জারকে। প্রত্যেকবার পুলিস পৌছনোর আগেই ডেরা থেকে পালিয়ে যায় বিপ্লবীরা।
এদিকে শুধু গোপন খবর দিয়ে সত্যবতী ক্ষান্ত থাকেননি। তিনি আইন অমান্য আন্দোলনে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। ১৯৩২-র ১১ ফেব্রুয়ারি তেরপেখিয়া বাজারে মদের দোকানের সামনে পিকেটিং করার সময় পুলিসের লাঠির ঘায়ে গুরুতর আহত হয়ে জ্ঞান হারান। (চলবে)
তথ্যঋণ: সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়