
সৌমেন সুর: মানুষ যখন প্রকৃতিকে বশ করে নিজের কাজে লাগিয়েছে তখনই অজান্তে বিপদকে ডেকে এনেছে সে। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরন করেছে। মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে জয়ী হলেও প্রকৃতি হার মেনে নেয়নি। তার অভিশাপ পৃথিবীকে নিতে হয় বা হজম করতে হয়। সভ্যতা যত এগিয়েছে, মানুষ তত সমৃদ্ধ হয়েছে, অনুভব করেছে কার্যকারন অলৌকিক ঘটনা নয়, তখন থেকেই মানুষ প্রকৃতিকে জয় করার জন্য বুদ্ধি প্রয়োগ করেছে। ফলে রেজাল্ট হয়েছে উল্টো। অভিশাপকে বরন করেছে মানুষ। সৃষ্টি এবং বিনাশ প্রকৃতির নিয়ম। সৃষ্টির পাশে অবস্থান করে ধ্বংস। ধরা যাক, ধ্বংস না হয়ে যদি শুধু সৃষ্টিই হতো, তাহলে দেখা যেতো সৃষ্টির মধ্যে চরম বিশৃংখলা। মানুষসহ প্রাণীর সংখ্যা পৃথিবীর তিনভাগের একভাগ স্থল পূর্ণ হয়ে যেতো। তখন কোথায় থাকতো সেসব মানুষ আর প্রাণী! তাই সৃষ্টিকে রক্ষার জন্যই প্রকৃতি ব্যলেন্স করে নেয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, অনাবৃষ্টির জন্য দায়ী মানুষের বন কেটে বসত তৈরি করার পরিকল্পনা। বন্যার জন্য দায়ী নদীর বুকে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর প্রবাহকে অযথা আটকে রাখা। এরফলে হঠাত্ হঠাত্ বন্যায় ঘর বাড়ি, শস্যক্ষেত্র এবং শ'য়ে শ'য়ে মানুষের প্রাণ ভেসে যায়। এমনকী ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, সুনামি এসবের জন্য দায়ী মানুষের সৃষ্টি বিশ্ব উষ্ণায়ন। প্রকৃতি যে কখন বিরূপ চরিত্র ধারন করবে সেটা কেই বলতে পারে না। প্রকৃতির ভয়ংকর রূপের মধ্যে আগ্নেয়গিরি, তুষারপাত, অতিবৃষ্টি, প্লাবন, উল্কাপাত, বজ্রপাত যেন এক একটা রূপ। প্রকৃতির এই রূপগুলি ধ্বংসকারী হলেও সবচেয়ে বিনাশকারী রূপ হলো ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস, অগ্নুত্পাত প্রভৃতি।
যাই হোক, মানুষ খেয়াল খুশিমতো প্রকৃতিকে তাচ্ছিল্য করে নিজের স্বার্থকে রূপায়ন করে, তাতে আজ হয়তো জিতলেন কিন্তু ভবিষ্যতে প্রকৃতির সর্বনাশী রূপে আপনার স্বপ্ন ব্যর্থ হবেই। প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে যে মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছে, অদূর ভবিষ্যতে সেই সভ্যতা টিকে থাকবে--সে গ্যারাণ্টি কোথায়!