সৌমেন সুর: দেখতে দেখতে পেশাদার থিয়েটারে রাজনীতির বিষয়ের অতিসক্রিয়তা ইংরেজ সরকার ভাল চোখে নিতে পারেনি। তারা বুঝতে পেরেছিল, থিয়েটারের মধ্যে দিয়ে মানুষের গণচেতনা প্রসার লাভ করছে। ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে। ইংরেজ সরকারের তরফ থেকে প্রবল চাপ আসতে থাকল- থিয়েটারে রাজনীতির কথা থাকবে না। বন্ধ করা হলো এই থিয়েটার। সেইসময় পেশাদার থিয়েটার জগৎ ইংরেজদের এই হুলিয়া মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।
তৈরি হয়তে শুরু করল পৌরাণিক নাটক। নাট্যকার গিরীশ ঘোষ একের পর এক পৌরাণিক নাটক লিখলেন। অন্যদিকে সুকৌশলে নাটকের মধ্যে স্বদেশপ্রেম-এর কথা ঢুকিয়ে দেওয়া শুরু হল। পেশাদার থিয়েটার সাড়ম্বরে সেটা উপস্থাপন করতে থাকল। এর মধ্যে বাংলায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন শুরু হলে থিয়েটার নতুন রূপে প্রাণ ফিরে পায়। বাঙালির মনে যে রাজনৈতিক সচেতনতা কাজ করছিল, তাকে নতুনভাবে রূপ দেওয়া হলো ঐতিহাসিক নাটকে। সেইসময়ে বারাঙ্গনাদের নিয়ে থিয়েটারে অভিনয় করানো খুব একটা সহজ ছিল না। সেদিন বহু মানুষ থিয়েটারকে ঘৃণার চোখে দেখতেন, অবশ্য বিপরীত মনস্ক মানুষের সংখ্যাও কম ছিল না।
স্বয়ং মাইকেল মধুসূদন, বেঙ্গল থিয়েটারের কর্ণধার শরৎচন্দ্র ঘোষকে বলেছিলেন, "তোমরা স্ত্রী লোক লইয়া থিয়েটার খোলো। আমি তোমাদের জন্য নাটক লিখিয়া দেবো।" তারপর তো ইতিহাস। (চলবে)