কালীই ব্রহ্ম, ব্রহ্মই কালী। একই ব্রহ্ম, যখন তিনি নিষ্ক্রিয়- সৃষ্টি। স্থিতি, প্রলয় এই পর্বে কোনও কাজ করছেন না। এই কথা যখন ভাবি, তখন তাঁকে ব্রহ্ম বলে কই। যখন তিনি এইসব কার্য করেন, তখন তাঁকে কালী বলি, শক্তি বলি। একই ব্যক্তি, নাম রূপ ভেদ। তিনি নানাভাবে লীলা করছেন। তিনিই মহাকালী, নিত্যকালী, শ্মশানকালী, রক্ষাকালী, শ্যামাকালী। মহাকালী নিত্যকালীর কথা তন্ত্রে আছে। যখন সৃষ্টি হয়নি, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ পৃথিবী ছিল না- নিবিড় আঁধারে মগ্ন, তখন কেবল মা নিরাকার মহাকালী। মহাকালের সঙ্গে বিরাজ করছিলেন মা।
মহামায়া মহাকালীর সৃষ্টিচক্র চলছে মহাকালকে সঙ্গে নিয়ে। জীবনের পিছনে মৃত্যু, সৃষ্টির পিছনে ধ্বংস, সবই বিপরীতার্থক ভাবে এই সৃষ্টিতে কাজ করে চলেছে সৃষ্টি-স্থিতি-বিনাশিনী- মা কালীর নির্দেশে। যেমন হাসি কান্না, পাপ পুন্য, সাধু অসাধু, সুখী দুঃখী একের ছায়া অপরে, একটিকে ছেড়ে অন্যটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেমন আলোর অপরদিকে অন্ধকার আছেই, তাই মৃত্যুময় জগৎ সংসারের শ্মশানপুরীতে যিনি জেগে থাকেন তিনিই জীবের চৈতন্যদায়িনী মা কালী-অভয়া।
(তথ্যঋণ স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ)