Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

কালীপূজা

Kalika: আজ জগৎ মাতার শুভ আগমন, তিনি মহাশক্তির এক বরণীয় রূপ, জানুন দেবী কালীকাকে

সৌমেন সুর: কোজাগরী পূর্ণিমার সন্ধ্যায় পরাশক্তি ধনদায়িনি মহালক্ষ্মীর পদ সঞ্চার প্রতি গৃহস্থের আঙিনায়। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় সেই একই মায়ের অর্চনা করবো অন্য নামে, ভিন্নরূপে, ধ্যানান্তরে। আজ যে জগৎ মাতার শুভ আগমন, তিনি মহাশক্তির এক বরণীয় রূপ, মহাকালের শক্তিমূর্তি আদ্যাশক্তি, চতুর্ভুজা, দিগবসনা, সুখপ্রদায়িনী ও বরাভয়দায়িনী। সৌন্দর্য, মাধুর্য এবং গাম্ভীর্যের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে দেবী কালিকার বর্ণিত ধ্যানমন্ত্রে।

'কালিকা বঙ্গদেশে চ' এই শাস্ত্রবাক্য শত শত বৎসর ধরে। পরম শ্রদ্ধায়, বড় আন্তরিকতায় ও গভীর ভক্তিতে এই বঙ্গভূমিতে এই পরম জননী কালিকারূপিণী মহাদেবী নিত্য সেবিতা ও পূজিতা। প্রচলিত কথা আছে 'যেখানে বাঙালি বাড়ি, সেখানে আছে কালীবাড়ি।' সৃষ্টিস্থিতিকারিনী কালরূপা মুক্তিদাত্রী দেবী কালিকার উপাসনাই হল কালের হাত থেকে নিষ্কৃতির একমাত্র উপায়। 

শ্যামা মায়ের মূর্তিতে সারল্য ও কাঠিন্যের এক অপূর্ব সমাবেশ। তাই মহাকালী নৃমুণ্ডমালিনী ও করালবদনা ভয়ঙ্করা, আবার সেইসঙ্গে তিনি বরাভয় করা। একদিকে সৃজন, অপরদিকে নিধন। দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালন। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছেন, 'কালী কি কালো?' দূর থেকে কালো, জানতে পারলে কালো নয়। সমুদ্রের জল দূর থেকে নীল, কাছে গিয়ে দেখো আর হাতে তুলে দ্যাখো-- রঙ নেই। ব্রহ্মশক্তি এই বিশ্বমাতা বিবসনা। দেশকালে ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে আদৌ আবদ্ধ নয় তিনি বলেই দিগম্বরী। এই অভয়া মা ত্রিনয়ণ দিয়ে তাঁর করুণা ধারা বর্ষণ করেন তাঁর সন্তানকে সত্য, শিব ও সুন্দরকে প্রত্যক্ষ করান।

আমাদের আর্যঋষিরা বলেন, সৃষ্টির মধ্যেই সৃজন, পালন, সংহার বিদ্যমান। সেই করুণাময়ী পরমেশ্বরী মা কালী সৃষ্টি, স্থিতি, লয় করছেন। একদিকে সংহার, অন্যদিকে তিনি অভয় বরদা। একহাতে ভীতি প্রদর্শন অপর হাতে সন্তানকে কোলে ধারণ। এই নিয়েই মা। মা আমাদের করুণাময়ী, মঙ্গলময়ী, জয় মা ওঁ তৎসাৎ।

2 years ago
Kalipuja: মাইথনে জাগ্রত মা কল্যাণেশ্বরী মন্দির, দীপান্বিতা অমাবস্যায় পুজো দিতে ভক্তদের ঢল

ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমান্ত (Jharkhand-Bangla border) সংলগ্ন মাইথনে (Maithon) রয়েছে জাগ্রত মা কল্যাণেশ্বরীর মন্দির (Kalyaneshwari temple)। দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের কাছে পুজো দিতে অসংখ্য ভক্তের ভিড় জমে। করোনার (Covid-19) দুই বছর পর এবার কালীপুজোয় ভক্ত সমাগম প্রত্যেকবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কথিত আছে মা কল্যাণেশ্বরী ভক্তদের সকল দুঃখ-বেদনা দূর করেন।

বাংলার অন্দরে হ্যাংলা পাহাড়ে ৫০০ বছরের প্রাচীন কল্যাণেশ্বরী মাতার মন্দির। এদিন বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের ভক্তরা তাঁদের মনোবাসনা  নিয়ে মায়ের দর্শনে পৌঁছে যান মন্দিরে।জনশ্রুতি রয়েছে, কুষাণদের তাড়া খেয়ে ৩ শতকে হরিগুপ্ত পালিয়ে এসে রাজ্য গড়েন হ্যাংলা পাহাড়ে। মন্দিরও গড়েন তিনি। তবে, এখনকার মন্দিরটি পঞ্চকোটের রাজার তৈরি। অতীতে নরবলির প্রথা ছিল দেবীর থানে। দেবীর কৃত্রিম গুহামন্দির। গুহার দ্বার রুদ্ধ থাকে। গুহামুখে অষ্ট ধাতুর মূর্তি দেবীর। আর অন্দরে সোনার তৈরি দেবীর মূল মূর্তি রয়েছে।

মন্দিরের উত্তরে স্রোতস্বিনী চালনার পাড়ে দেবী কল্যাণেশ্বরী (শ্যামা) রয়েছেন শাঁখা পরে।  স্মারক রূপে মন্দির হয়েছে সেখানেও। পায়ের ছাপও রয়েছে পাষাণ বেদিতে দেবীর। আর মন্দির চত্বরেই রয়েছে চতুর্দশ শিব মন্দির। শীতলা মায়ের থানে মনস্কামনা পূরণে ঢিল বাঁধার প্রথাও আছে। শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির তৈরি হয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের প্রবেশপথে। যাতায়াতের জন্য আসানসোল, দুর্গাপুর এবং ধানবাদ থেকে এই উপাসনালয় পর্যন্ত নিয়মিত বাস পরিষেবা পাওয়া যায়।

মন্দিরের পুরোহিতরা জানান যে, দেবনাথ দেবহরিয়া এখানে কঠোর সাধনা করেছিলেন। তার পরে মা তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন। পুরোহিতরা বলেন, দর্শনের পর দেবনাথ দেবহারিয়াও মাকে একটি শঙ্খদান করেছিলেন। মাকে দেখেই সাধক দেবনাথ এখানে প্রতিষ্ঠা করেন। মা জগতের কল্যাণ করেন, তাই মন্দিরের নাম হয় কল্যাণেশ্বরী। সাধক গুহার ভিতরে অষ্টধাতু মায়ের মূর্তি স্থাপন করেছেন।

মন্দিরের পুরোহিত আরও জানান, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তাঁদের ইচ্ছা নিয়ে এখানে আসেন।  যে নিম গাছের নিচে সাধক দেবনাথ সাধনা করেছিলেন।  ভক্তরা সেই নিম গাছে পাথর বেঁধে মায়ের কাছে তাঁদের মঙ্গল কামনা করেন।  মনোকামনা পূরণের পর ভক্তরা আবার প্রথমে মায়ের দর্শন করে।  তারপর নিম গাছে বাঁধা পাথরটি খুলে নদী জলে ফেলে দেন।

2 years ago
Kali: মহামায়া মহাকালীর সৃষ্টিচক্র চলছে মহাকালকে সঙ্গে নিয়ে, কালীই ব্রহ্ম, ব্রহ্মই কালী

কালীই ব্রহ্ম, ব্রহ্মই কালী। একই ব্রহ্ম, যখন তিনি নিষ্ক্রিয়- সৃষ্টি। স্থিতি, প্রলয় এই পর্বে কোনও কাজ করছেন না। এই কথা যখন ভাবি, তখন তাঁকে ব্রহ্ম বলে কই। যখন তিনি এইসব কার্য করেন, তখন তাঁকে কালী বলি, শক্তি বলি। একই ব্যক্তি, নাম রূপ ভেদ। তিনি নানাভাবে লীলা করছেন। তিনিই মহাকালী, নিত্যকালী, শ্মশানকালী, রক্ষাকালী, শ্যামাকালী। মহাকালী নিত্যকালীর কথা তন্ত্রে আছে। যখন সৃষ্টি হয়নি, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ পৃথিবী ছিল না- নিবিড় আঁধারে মগ্ন, তখন কেবল মা নিরাকার মহাকালী। মহাকালের সঙ্গে বিরাজ করছিলেন মা।

মহামায়া মহাকালীর সৃষ্টিচক্র চলছে মহাকালকে সঙ্গে নিয়ে। জীবনের পিছনে মৃত্যু, সৃষ্টির পিছনে ধ্বংস, সবই বিপরীতার্থক ভাবে এই সৃষ্টিতে কাজ করে চলেছে সৃষ্টি-স্থিতি-বিনাশিনী- মা কালীর নির্দেশে। যেমন হাসি কান্না, পাপ পুন্য, সাধু অসাধু, সুখী দুঃখী একের ছায়া অপরে, একটিকে ছেড়ে অন্যটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেমন আলোর অপরদিকে অন্ধকার আছেই, তাই মৃত্যুময় জগৎ সংসারের শ্মশানপুরীতে যিনি জেগে থাকেন তিনিই জীবের চৈতন্যদায়িনী মা কালী-অভয়া।

(তথ্যঋণ স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ) 

2 years ago


Fire Crackers: কালীপুজোয় বাজারমুখী ক্রেতারা, তারাবাতি, রংমশালে ব্যবসায় 'বাজি'মাৎ

হাতে আর মাত্র একদিন। তারপরেই আলোর উৎসবে সেজে উঠবে গোটা দেশ। সারা ভারতের দিওয়ালি পালনের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলায় উদযাপিত হয় কালীপুজো। মহাশক্তির আরাধনায় মত্ত হবে আম বাঙালি, সেই সঙ্গে আতসবাজির মজায় ভাসবে বাঙালি। গত দুই বছর ছিল করোনা কাল। আর সেই কারণে ভালোমতো উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি কেউই। তবে এবার সব বাধা প্রায় কাটিয়ে ফের উজ্জ্বল আলোর রোশনাই। শ্যামা মায়ের বন্দনা তো রাতভর রয়েছেই। কিন্তু বরাবরই দীপান্বিতা উৎসবে যা সকলের সবথেকে বড় আকর্ষণের বিষয় তা হল বাজি। কিন্তু টানা দুই বছর পুজোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের কড়া নির্দেশিকা ছিল, বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে ছিল নিষেধাজ্ঞাও। তাই ব্যবসায়ীদের পকেট ছিল প্রায় শূন্য। তবে এবার আবার সময় হয়েছেন ভাগ্যলক্ষ্মী, তাই ফের বাজারমুখী ক্রেতার দল।

তারাবাতি, রংমশাল, চরকি, রকেটের মত চিরাচরিত সাবেক বাজির সঙ্গে এখন নাম জুড়েছে হরেক রকম হালফিলের বাজিরও। তার মধ্যে মূলত প্রধান বাহারি আসমান গোলা। সেই সঙ্গে ফানুসের চাহিদাও থাকে খুবই বেশি। তার উপর টানা দু'বছর এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত আপামর মানুষ। তাই ফের এই বছর নিউ নর্মালে ফিরতেই বাজি কেনার উৎসাহ রয়েছে দ্বিগুন। 

বাংলার বাজি বাজার বা বাজি তৈরির কারখানার কথা উঠলেই সকলের আগে নাম আসে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুর চম্পাহাটি হারালের বাজি বাজারের। এবারও তার কোনও রকম ব্যতিক্রম নেই। করোনার জেরে দু'বছর ঠিক মতো ব্যবসা হয়নি। কিন্তু এবছর খুদে থেকে বড় সকলেই কেনাকাটা করতে হাজির। বাজি বাজারে কেমন ভিড় হচ্ছে, কতটা লাভ করছেন বাজি ব্যবসায়ীরা? তা জানালেন তাঁরাই। 

'এবারে বাজির চাহিদা প্রচুর! দোকানে কোনও বাজি পড়ে থাকবে না' বলেই আশাবাদী বিক্রেতা গৌরাঙ্গ মণ্ডল।

তবে প্রশাসনের ক্ষেত্রে জারি হয়েছে কড়া নির্দেশিকা, যেখানে বলা হয়েছে কোনও রকমের শব্দবাজি ফাটানো চলবে না। এমনকি বেআইনি ভাবে শব্দ বাজি বানানো, মজুত ও বিক্রির অভিযোগে ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কিছু অসাধু ব্যক্তিকে। তাই পুলিশের তীক্ষ্ণ নজর থাকছে বারুইপুর চম্পাহাটি হারালের বাজি বাজারে। তবে সবরকম নির্দেশিকাকে মাথায় রেখেই পসার সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেদার চলছে বিকিকিনিও। এই বছর দূষণের কথা মাথায় রেখে বাজারে আনা হয়েছে পরিবেশবান্ধব গ্রিন ক্র্যাকার। বড় থেকে ছোট, সব দোকানেই কমবেশি এই বাজি মিলবে বলে জানা গিয়েছে। তবে সব শেষে সুরক্ষিত ভাবে কালীপুজো পালন করুন সকলেই, এমনটাই অনুরোধ করছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

2 years ago
Diwali: রাবণ বধ করে সীতাকে নিয়ে রামের অযোধ্যা ফেরা! জানেন কি দীপাবলির সঙ্গে এই কাহিনী জড়িয়ে?

প্রসূন গুপ্ত: বাঙালির প্রধান উৎসব অবশ্যই দুর্গাপুজো। সারা বছর এই বাংলায় মানুষ অপেক্ষা করে শারদীয়া দুর্গাপুজোর জন্য। যদিও ভারতের বিভিন্ন শহরে দুর্গাপুজো করে থাকে প্রবাসী বাঙালিরা। কিন্তু ত্রিপুরা ছাড়া বাকি প্রদেশের শহরগুলিতে ঘুরলে পুজোর আমেজ সেভাবে পাওয়া যায় না। ভারতীয় হিন্দুদের সারা ভারত জুড়ে যে উৎসব, তা দীপাবলি। এ রাজ্যে কার্তিক অমাবস্যায় কালীপুজো হয়ে থাকলেও, অন্য রাজ্যে দীপাবলি আসলে লক্ষ্মীপুজো। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলা যায় মহালক্ষ্মী পুজো।

পুরাণে আছে, রামচন্দ্র রাবনকে হত্যা করে যখন অযোধ্যা ফিরছিলেন, তখন তাঁর পাদুকা নিয়ে দেশ চালানো ভরতের কাছে খবর আসে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, স্ত্রী সীতা-সহ অযোধ্যায় ফিরছেন। এবং অমাবস্যার পা দেবেন অযোধ্যায়। ভরত কর্মীদের আদেশ দিলেন, আমাবস্যায় রাজা ও রানী ফিরছেন, কিন্তু সে সময় নিকষ অন্ধকার। অতএব রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানো হোক। আলোকিত হোক পুরো অযোধ্যা। সেই মোতাবেক আলোকময় করা হয়, এর নামই দীপাবলি। যদিও আমাদের হাজারো মত রয়েছে। কিন্তু এই মতকেও অস্বীকার করা যায় না।

এই দীপাবলির উৎসব কিন্তু অবাঙালিদের কাছে তিন দিনের প্রথমটি ধনতেরাস, যা কিনা কুবেরের পুজো। কুবের ধনরত্নের দেবতা অর্থাৎ সেখানেও লক্ষ্মীর ভূমিকা রয়েছে ,রয়েছে গণেশের ভূমিকা। কাজেই ওই দিনে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো হয়ে থাকে। কথিত আছে এই দিনে লোহা ব্যতীত মানুষ যদি অন্য কোনও ধাতু কেনে তবে নাকি তার উন্নতি অবধারিত। ধনতেরাসের পরদিন ছোট দীপাবলি বা ছোটে দিওয়ালি। এই দিন নাকি দেবী কালিকার আশীর্বাদে কৃষ্ণ নরকাসুরকে হত্যা করেছিলেন। ফলে এই দিনে অনেকে কৃষ্ণের পুজো করে। অবশ্যই গনেশ এবং লক্ষ্মী, আর শেষদিন আমাবস্যায় দিওয়ালি। অর্থাৎ কালীপুজো এবং লক্ষ্মী পুজো। দীপাবলি কিন্তু সারা ভারতে তিনদিন পালিত হয়। আজকাল বাঙালিরাও এই মতের সঙ্গে চলছে।

2 years ago


মহানায়াক উত্তম কুমার আজীবন যুক্ত ছিলেন কলকাতার রবিন হুডের পুজোয়

পুজোর প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে কেষ্টর নামে ফাটাকেষ্ট নাম রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, তার ডাকনামের সাথে ফাটা যোগ করা হয়েছিল (ডাকনাম) কেস্টো। ফাটা, একটি বাংলা শব্দ, যার অর্থ  বিভক্ত বা ফাটল। যদিও কেউ কেউ বলছেন, তার মুখে গুটিবসন্তের দাগ ছিল। তাই তার বন্ধুরা তাকে ফাটা কেষ্ট বলে ডাকতো।

বর্তমানে, নব যুবক সংঘের ব্যানারে পূজা অনুষ্ঠিত হয়, তবে এটি ফাটাকেষ্ট কালী পূজা হিসাবে বেশি জনপ্রিয়। পুজো সংক্রান্ত অনেক মজার গল্প আছে। 70-এর দশকে কলকাতা ছিল নকশাল আস্তানা। সে সময় কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত নকশালদের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই দেন। নকশাল আন্দোলন দমনের পর ফাটাকেষ্ট পূজা আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফাটাকেস্টো ছিল এলাকার রবিন হুড। কলেজ স্ট্রিটের কাছে সরু সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে অবস্থিত, এই প্রাচীন কালী পূজা তার জাঁকজমক ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। চোখ-ধাঁধানো গহনার টুকরোয় সজ্জিত, দেবী দৈবত্ব এবং মহিমার প্রতীক হিসাবে লম্বা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

বছরের পর বছর ধরে, মা কালীর ঐতিহ্যবাহী মূর্তি, চন্দননগরের রঙিন আলো এবং প্যান্ডেলের কাঠামো অপরিবর্তিত রয়েছে। পূজাটি প্যান্ডেলের একই কাঠামোতে আটকে আছে - একটি মন্দিরের প্রতিরূপ, এবং চন্দননগর শহরের সাধারণ অভিনব আলো থেকে বিচ্যুত হয়নি।

একবার চন্দননগর থেকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত মা কালীর বিসর্জন শোভাযাত্রাটি শহরের আলোচনার বিষয় ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে এবং কমিটি শোভাযাত্রার অনুষ্ঠানকে কমিয়ে দিয়েছে।

অতীতে, অনেক সেলিব্রেটি ফাটাকেষ্ট কালী পূজা উদ্বোধন করেছেন। এমনকি বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন, দেব আনন্দ এবং রানি মুখোপাধ্যায় এই পূজায় যোগ দিয়েছিলেন।

আশা ভোঁসলে, আরডি বর্মন, রাজেশ খান্না, হেমা মালিনী, বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা, মহাভারতের পূর্ণ দল, বাপ্পি লাহিড়ী এবং আরও অনেকের মতো সেলেব্রিটিরা এই পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন। বাংলার সুপারস্টার উত্তম কুমার আজীবন পূজার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং প্রতি বছর পূজায় যোগ দিতেন।


2 years ago
বড় মা পুজোর মূলমন্ত্র: ধর্ম হোক যার যার, বড় মা সবার

বর্তমানে নৈহাটির "বড়মা"  বিখ্যাত রাজ্য তথা দেশজুড়ে, ২১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ঘন কৃষ্ণবর্ণ প্রতিমা স্বর্ণলঙ্কারে ভূষিতা, বড় মা পুজোর মূলমন্ত্র হল "ধর্ম হোক যার যার, বড় মা সবার" , যে যার  আশা বিশ্বাস নিয়ে বড়মার কাছে আসে পূজা দিতে। মায়ের ভক্তরা মানত করেন ও দন্ডি কাটেন, মনের ইচ্ছা পূরন হলেই ভক্তরা আবার মাকে অলঙ্কার গড়িয়ে দেন

উল্লেখ্য, ৯৪ বছর আগে ভবেশ চৌধুরী এবং তার সঙ্গীরা নবদ্বীপ গিয়েছিলেন রাস উৎসব এর দর্শন করতে, সেই স্থানে গিয়ে তিনি রাধাগোবিন্দর বিশাল মূর্তি দেখে তাঁর ও মনের ইচ্ছে জাগে সেও  একটি বড় কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করবেন।  এখন গোটা রাজ্য তথা রাজ্যের বাইরে থেকেও বড়মার টানে আসেন অনেক ভক্ত এবং তাদের দানের পয়সায় পুজোর আয়োজন করা হয়।  দক্ষিণা কালী রূপে পূজিত হয় মা, তাই বলি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই এখানে।


প্রাচীন রীতি মেনে কোজাগরী পূর্ণিমায় নৈহাটির ঐতিহ্যবাহী বড়মা পুজোর কাঠামো পুজো করা হয় । পুজোর দিন সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে পুজো দেওয়ার জন্য পাশাপাশি গঙ্গাবক্ষ থেকে মানতকারী ভক্তরা দণ্ডি কেটে পুজো দেন। বেলা বাড়তেই পুলিশি পাহারায় মা কে অলঙ্কার পরানো শুরু হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে কিছুটা এই পুজোয় , এখন অনলাইনে পুজো দেখা যায় ঘরে বসে। 

প্রচুর ভক্তের জনসমাগম হয় পুজো দেওয়ার জন্য। সারা রাতই প্রায় চলে পুজো। পরের দিন সকালে সমস্ত প্রসাদ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। 


ভোগ রান্না করা হয় বড়মা নিবাসে, বড়মার পুজোর সমস্ত রান্না করা হয় গাওয়া ঘি দিয়ে, তাছাড়া ১১ টা অমাবশ্যার রাতে মাকে পুজো করা হয় যেখানে ৭০০ কেজির ভোগ রান্না করা হয়।  প্রতিবার পুজোর সময় পাওয়া শাড়ী বিলি করা হয় দুঃস্থদের মধ্যে এবং বেনারসি শাড়ী থাকলে সেটি গরীব অবিবাহিত মেয়েদের জন্যে দেওয়া হয়। বড়মার কাছে দেওয়া ফল ও ফুল বিতরণ করা হয় হাসপাতালের মানুষদের মধ্যে।


, সর্বোপরি বিসর্জনের দিন মায়ের পরিহিত গহনা খুলে ফুলের অলঙ্কার পরানো হয়। হাতে একটি বৃহৎ মিষ্টান্ন ও এক হাতে ঘট ঝোলানো হয়। এই ভাবে মায়ের কাঠামো ধীরে ধীরে গঙ্গা বক্ষের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কথিত আছে বড় মা বিসর্জনের আগে নৈহাটিতে কোনো ঠাকুর বিসর্জন হয়না। রাস্তার দু ধারে অগণিত ভক্তের সমাগম , চলে বাতাসালুট। কারোর চোখে অস্রু ধারা , কারোর আবার করজোড়ে একটাই প্রার্থনা "আবার এসো মা"। 


ভিডিও কৃতজ্ঞতা ঃ নৈহাটি বড় কালী পূজা সমিতি

2 years ago
কালীপূজার ইতিকথা- দীপান্বিতা অমাবস্যার সময় কেন কালীপুজো করা হয়?

মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষ শেষ হয় এবং সূচনা হয় দেবীপক্ষের। মহালয়ার দিনে পিতৃপুরুষদের তর্পণ করার প্রথা প্রচলিত আছে। পিতৃপক্ষের সময় বিদেহী আত্মারা জল গ্রহণের জন্য মর্ত্যে আসেন। তার পর থেকে দীপাবলি পর্যন্ত তাঁরা মর্ত্যেই বিচরণ করেন। দীপাবলির সময় পিতৃলোকে ফিরে যান তাঁরা। কিন্তু যেদিন তাঁরা ফিরে যান সেই দিনটি আসলে অমাবস্যা। এই অন্ধকারে পিতৃপুরুষদের যাতে ফিরে যেতে সমস্যা না-হয়, তাই তাঁদের উদ্দেশে অন্ধকার পথ আলোকিত করে রাখা হয়। তাই ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় প্রদীপ। 


এ ভাবে কালীপুজোর সঙ্গে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা জড়িয়ে পড়েছে। তবে দীপান্বিতা অমাবস্যার সময় কেন কালীপুজো করা হয়, তারও ইতিহাস রয়েছে।


ষোড়শ শতাব্দীতে নবদ্বীপের স্মার্ত পণ্ডিত ও নব্যস্মৃতির স্রষ্টা রঘুনন্দন দীপান্বিতা অমাবস্যায় লক্ষ্মীপুজোর বিধান দেন।  তবে কালীপুজোর কোনও উল্লেখ করেননি তিনি। এর পর অষ্টাদশ শতকে প্রকাশিত কালী সপর্যাস বিধিতে প্রথম বার দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু সপ্তদশ শতকে বাংলায় কালীপুজোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশকেই বাংলায় কালীমূর্তি ও কালীপূজার প্রবর্তক বলে মনে করা হয়।


এর আগে কালীর উপাসকরা তামার টাটে কালীর যন্ত্র এঁকে বা খোদাই করে তাঁর পুজো করতেন। অষ্টাদশ শতকে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কালীপুজোকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এর পর উনিশ শতকে কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ঈশানচন্দ্র ও বাংলার ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপুজো জনপ্রিয়তা অর্জন করে। 

2 years ago