প্রসূন গুপ্তঃ মাঝে আর একটি দিন, তারপরেই বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। ৫ বছর আগে হলে নিশ্চিন্তে বলা যেত শেখ হাসিনা তাঁর সংগঠন দিয়ে ভোটে জিতে আসবে। আজ কিন্তু সেরকমটি বলা যাচ্ছে না। বাঙালি অধুষ্যিত তিন জায়গায় ভোট নিয়ে অশান্তির ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রশাসন যার জয় তার, এমন বাক্যটিই চলে আসছে। আমাদের এই বাংলায় ভোটে বুথ দখল থেকে ভোট কেন্দ্রের হুজ্জুতির শুরু কিন্তু ১৯৮২ তে বাম জমানা থেকেই। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েও রাখা যায়নি।
২০০৬ বাম ২৩৫ টি আসন পায়, কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল কিন্তু তারই মধ্যে সিপিএমের ক্যাডার বাহিনী ভোট করেছিল নিজেদের প্রয়াসে। কেন্দ্রে তখন বাম সমর্থিত সরকার কাজেই দেখেও না দেখার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলো পুলিশ। পরবর্তীতে তৃণমূলের রেকর্ডও ওই প্রকার। যদিও লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে গন্ডগোল হলেও বুথ দখল হয় নি। একই ফর্মুলা প্রয়োগ হয়েছে দিনের পর দিন ত্রিপুরাতে বাম নেতৃত্বে। বর্তমান সরকার বিজেপির। তারাও ওই একই খেলা শিখেছে প্রথম দিন থেকেই। বিগত পঞ্চায়েত ভোটে ৯৫ শতাংশ বুথ দখল করে রেকর্ড করেছিল তারা বলে দাবি বিরোধীদের। তৃতীয় বাংলা মানে বাংলাদেশ। গত দুটি সাধারণ নির্বাচনে কি ভাবে ভয় দেখিয়ে ভোটে জিততে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ বা নৌকা বাহিনী। একই চিত্র তিন বাংলাতে।
এবারে সাধারণ নির্বাচন রবিবার অর্থাৎ আর দুটি দিন বাদেই। এবারেও একই ফর্মুলাতে হাসিনা বাহিনী কিন্তু সমস্যা বা চাপে রয়েছে তারা। ইতিমধ্যে আমেরিকা সহ ন্যাটো দেশগুলি হুমকি দিয়েছে আসন্ন নির্বাচন যদি অবাধ না হয় তবে গুরুতর ব্যবস্থা নেবে তারা। মিডিয়াও সুর পাল্টিয়েছে। তবে হাসিনা পাশে পাচ্ছে চীনকে কিন্তু ভারত এখনও চুপ ভোটার বিষয়ে। বাস্তব সত্যি হচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বা খালেদা জিয়ার দল সরাসরি ভোটে নেই কিন্তু তৃণমূল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি নাম দিয়ে জামাতের সহযোগিতায় ভোটে দাঁড়াচ্ছে। ৩৫০ আসনের সংসদে ৩০০ আসনে ভোট তাতে আওয়ামী ৬টি দলের সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে এসেছে। এছাড়াও গোড়া ইসলামিক দল রয়েছে প্রায় ৮/৯টি। সব মিলিয়ে ২৮টি দল ভোট লড়ছে। ওদের ওখানে সব দলেরই সমর্থক আছে তাই তুড়ি মেরে বলা যাবে না যে আওয়ামী লীগ ফের আসছে। ভারতীয়রা কিন্তু হাসিনার জয় চায়। তাই ভোটের অশান্তি নিয়ে ভারতের কোনও মন্তব্য নেই। যা শেষ খবর, হাসিনা কিন্তু এবারেও বেপরোয়া। ইসলামিক দেশ হলেও এই হাসিনার আমলে দুর্গাপূজো থেকে দোল উৎসব কিন্তু দারুন ভাবেই উৎযাপিত হয়। তাই সংখ্যালঘু (হিন্দু) স্বার্থে ভারত হাসিনার জয় চায়।