সৌমেন সুরঃ বিজয়ার বিষাদের মধ্যে কোথায় যেন সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র লুকিয়ে থাকে। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রত্যক্ষ সংস্কৃতি কম দেখা গেলেও, অভিজাত, সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত পরিবারগুলোতে আজও বিজয়ার মিলনক্ষেত্র বিরাজমান।
'বিজয়া' প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে ঠাকুরবাড়ির কথা ফুটে উঠলো মনে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ শুধু তাঁর প্রিয়জনদের বিজয়ার আশীর্বাদ জানাতেন না। বিজয়ার দিন কেউ তাঁকে আশ্রমে প্রণাম করতে এলে, চিরাচরিত হিন্দু প্রথা অনুযায়ী তিনি মিষ্টিমুখ করাতেন। তিনি ব্রাক্ষ্ম ছিলেন। তবে সংস্কারে কবি ছিলেন ঊর্ধ্বে।
একটা চিঠিতে নির্মলকুমারী মহলানবীশকে লিখেছিলেন-'বিজয়ার বার্ষিক প্রণাম এখনও তোমার কাছ থেকে দাবি করতে পারি।' রবীন্দ্রনাথ শুধু বিজয়ার বার্ষিক প্রণাম দাবি করতেন না, সেই প্রণামের বিনিময়ে তাঁর প্রিয়জনদের জানাতেন তাঁর আন্তরিক আশীর্বাদ।
আসলে রবীন্দ্রনাথ চিরকালই উপলব্ধি করেছেন বিষাদের মধ্যে আনন্দকে। বিসর্জনের মধ্যে আবাহনকে। তাই তিনি বিজয়ার আশীর্বাদের মধ্যে আস্বাদ পেয়েছেন পবিত্রতার, পূর্ণতার এবং প্রণামের। সেই মনিমানিক্যের মধ্যে উপলব্ধির কথা আমরা জানতে পারি রানী চন্দের লেখা একটি বই থেকে। ভালবাসার পাত্রীকে বিজয়ার দিনে কবি একটি নিজের আঁকা ছবি উপহার দেন। রানী পরম স্নেহে প্রণাম করে সেই ছবি গ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথের জীবনে এই ছিল আংশিক বিজয়ার ছবি।
তথ্যঋণ- স্বপন বক্সী