প্রসূন গুপ্তঃ পশ্চিমবঙ্গে বাম জমানাতেও দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র কংগ্রেস বা তৃণমূলকে ঢেলে ভোট দিয়েছে। ১৯৮৪/৮৫ থেকে আজ অবধি এই কেন্দ্রে না সিপিএম না বিজেপি তাদের সাংসদের জেতাতে পারে নি। এর অবিশ্যি অন্য একটা কারণ ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯১ থেকে এখানে টানা সাংসদ। এর মধ্যে ২০০৪-এ বাংলায় তৃণমূল মাত্র একটি আসনই জিতেছিল তা এই দক্ষিণ কলকাতায়। ২০০৯-এ শেষবারের মতো যেতেন মমতা নিজে কিন্তু আর দাঁড়ান নি কেননা এরপরেই রাজ্যে পরিবর্তন এবং তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে জেতেন সুব্রত বক্সী। ২০১৪-তেও বক্সী জিতেছিলেন। ২০১৯-এ ভরা বিজেপি হাওয়াতেও এই কেন্দ্রে জিতে আসেন তৃণমূলের মালা রায়। দক্ষিণ কলকাতাকে তৃণমূলের গড় বলা হয়ে থাকে।
এবারে এই কেন্দ্রে মূল তিন প্রার্থী। তৃণমূলের মালা রায়, সিপিএমের সায়েরা শাহ হালিম এবং বিজেপির প্রাক্তন রায়গঞ্জের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। দেবশ্রী কলকাতার কাছেই থাকেন, আরএসএসের ঘনিষ্ঠ এবং বিজেপির দীর্ঘদিনের প্রচারক। মোদী সরকারের মন্ত্রী থাকলেও একসময় তাঁর মন্ত্রীত্ব চলে যায়। তিনি রায়গঞ্জেও নিয়মিত ছিলেন না। এবারে তাঁর টিকিট পাওয়া এক প্রকার অসম্ভব ছিল কিন্তু শোনা যায় সংঘ পরিবারের চাপেই নাকি দক্ষিণ কলকাতার টিকিট পান তিনি কিন্তু বড্ডো কঠিন জমিতে লড়াই তাঁর।
অন্যদিকে সায়েরা কিন্তু প্রাক্তন বাম স্পিকার আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ এবং অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের ভাইঝি। বালিগঞ্জ কেন্দ্রে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরে উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বেশ ভালো লড়াই দিয়েছিলেন কাজেই এবারেও তাঁর উপর ভরসা রেখেছে সিপিএম। এই লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ৩৬ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট, সেখানেই ভরসা বামেদের। তা যাই হোক না কেন এই অঞ্চলে এক ডজন তৃণমূলের বড় নেতাদের বসবাস এবং সংগঠন। বাংলার সবথেকে সেফ সিটে তৃণমূলকে হারানো ভয়ঙ্কর কঠিন কাজ।