১০০ দিনের টাকা-সহ বিভিন্ন বকেয়ার দাবি নিয়ে ধর্নায় (Protest) বসেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী (CM), সরব হয়েছিলেন দলের অধিকাংশ। এবার আলিপুরদুয়ারে দলীয় সভায় গিয়ে ১০০ দিনের টাকা না দিলে দিল্লি স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। পাল্টা পুরোনো টাকার হিসাব চাইলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
শনিবার আলিপুরদুয়ারের সভায় পঞ্চায়েত ভোট, চা শ্রমিকদের নিয়ে বললেও, ১০০ দিনের কাজ প্রসঙ্গ টেনে মূলত টার্গেট করেন বিজেপিকে। শনিবারের সভা থেকেই অভিষেক বলেন, '২৫ জন সাংসদকে নিয়ে টাকা চাইতে দিল্লি গিয়েছিলাম, দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিট মন্ত্রী দেখা করেননি।' তিনি বিজেপির উদ্দেশ্যে আরও বলেন, 'পারলে রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করুন, বাংলার মানুষকে আমি ভাতে মারতে দেব না।' শনিবার এই সভা থেকেই তিনি হুঙ্কার দিলেন, 'আপনারা সই করুন। ৪ লক্ষ সই দিন আলিপুরদুয়ার থেকে, আমি ১ কোটি চিঠি দেব বাংলা থেকে, দেখি কতদিন কান বুজে থাকে কেন্দ্র।' তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন শনিবার, 'আপনারা সঙ্গে থাকুন, টাকা আমি ছিনিয়ে আনবই।'
ওদিকে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীও ধর্না করেছেন ৩০ ঘন্টা। অভিষেকের দাবিও ঠিক একই। কিন্তু বিভ্রান্তিটা অন্য জায়গায়। চলতি সপ্তাহেই, শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি একটি লিস্ট দেখিয়ে দাবি করেন, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে, ইউপিএ আমলে ২০০৬-২০০৭ থেকে ২০১৩-২০১৪ অর্থবর্ষ অবধি ১৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলা। এনডিএ অর্থাৎ বিজেপির আমলে ২০১৪-২০১৫ থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষ অবধি, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ৫৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলা। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার শুক্রবার বলেন, 'কংগ্রেসের থেকে বিজেপি আমলে বেশি টাকা পেয়েছে বাংলা। এই টাকার হিসেব কেন প্রকাশে আনছেন না সরকার?' সুকান্ত আরও অভিযোগ করেন, 'তৃণমূল ওই টাকা লুটে খেয়েছে।'
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বঞ্চনার অভিযোগে হুঙ্কার দেওয়া যায়, ধরণায় বসা যায়। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলন করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের হিসাব দেওয়া যায় না! যদিও সাধারণ মানুষের কি এই হিসাব দেখার নিয়ম আছে? সব থেকে বড় কথা হলো কজনেরই বা এই হিসাব দেখার প্রয়োজন আছে! কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে রাজ্য রাজনীতির এই টাল-বাহানার মধ্যে প্রশ্ন অনেক, সন্দিহানও অনেক, কিন্তু উত্তর কই!