প্রসূন গুপ্ত: পশ্চিমবঙ্গের ৭টি রাজ্যসভার আসনে পদে থাকা সদস্যদের পালা শেষ হচ্ছে এ মাসের শেষে। কাজেই দ্রুত নতুন সদস্যদের পাঠাবার পালা তৃণমূল ও বিজেপির। এই প্রথম এই রাজ্য থেকে কেউ একজন বিজেপির সদস্যপদ পাবে উচ্চকক্ষে। তৃণমূল ইতিমধ্যেই ৫ সদস্য এবং গোয়ার ফেলেইরো পদত্যাগ করায় ১ টি আসন অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৬ জনকে সদস্য করতে পারবে। তাদের বিধানসভার জোর যথেষ্ট। এই মুহূর্তে প্রায় ২২০ জন। এছাড়া একজন আইএসএফ এবং এক পাহাড়ের প্রতিনিধি আছে। বিজেপির সংখ্যা ৬৯-এর মতো। বিজেপি বড়োজোর ১ জন প্রার্থী পাঠাবার মতো শক্তি বিধানসভায় আছে। নিয়ম হচ্ছে বিধানসভার প্রত্যেক সদস্য ভোট দিতে পারেন। প্রতিটি ভোটের প্রাথমিক মূল্য ১, কিন্তু তারা তাদের দ্বিতীয় পছন্দকেও ভোট দিতে পারেন। কিন্তু প্রথম ভোট গণনা হয়ে যাওয়ার পর প্রার্থী নির্বাচনে সমস্যা হলে দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীকে গণনায় নেওয়া যেতে পারে।
বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে বৃহস্পতিবার। অবিশ্যি দ্বিতীয় ড্যামি প্রার্থীর নামও দিয়েছিলে বিজেপি, কিন্তু শুক্রবার তাঁর নাম তুলে নেওয়া হয়। অতএব প্রথম পছন্দের অনন্ত মহারাজ রায় নির্বাচিত হলেন। আর ভোটের প্রয়োজন নেই, যেহেতু ৬টি আসন এবং একটি উপনির্বাচনের প্রার্থী, সে ক্ষেত্রে ৭ জন প্রার্থীই নমিনেশন দিয়েছেন এবং প্রত্যেকেই নির্বাচিত। এবারে প্রশ্ন কে এই অনন্ত মহারাজ। প্রথমত, তিনি রাজবংশী প্রতিনিধি। সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত ভোটে রাজবংশীরা ঢেলে ভোট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। সামনেই লোকসভা নির্বাচন কাজেই রাজবংশী ভোটকে টার্গেট করেই কিন্তু অনন্ত মহারাজকে প্রার্থী করা। এই অনন্ত মহারাজকে নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের অন্যতম দাবিদার তিনি। এক্ষেত্রে এ রাজ্যে থাকা বাঙালিদের কাছে এই নব বঙ্গভঙ্গ মোটেই কাম্য নয়। এ নিয়ে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লাও বিভেদের রাজনীতি করেছিলেন। মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি, ফলে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির ফলাফল পঞ্চায়েতে খুবই খারাপ হয়েছে। এবারে দেখার বিষয় অনন্ত মহারাজ সাংসদ হওয়াটাকে কি ভাবে নেয় উত্তরবঙ্গ।