
হাইকোর্টের নির্দেশ মত আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলের আগে থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং অশান্তি এড়াতেই কলকাতা, হুগলি, হাওড়া, ব্যারাকপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় আধাসেনা নামানো হয়েছে। যদিও বুধবার বিকেল থেকেই স্পর্শকাতর এলাকা গুলিতে নামানো হয়েছে সেনা। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও অবধি মোট ৩ কোম্পানি সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এ রাজ্যের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকা গুলিতেও তাঁরা থাকবেন।
রাম নবমীর মিছিলে অশান্তির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হুগলি, হাওড়া সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ কয়েকটি এলাকা। তারপরই এই অশান্তি নিয়ে মামলা হয় হাইকোর্টে, সেই মামলায় বুধবার বিচারপতি টি শিবগ্নানাম ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে বলেন, 'অশান্তি রুখতে প্রয়োজনে রাজ্য আধা সেনা নামাতে পারবে।' বুধবার রাজ্যপক্ষের আইনজীবীকে বিচারক পরিষ্কার জানিয়ে দেন, 'মানুষের নিরাপত্তা জরুরী। যে কোনওরকম উপায়ে মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এই হিংসা কোনওরকমভাবে মেনে নেওয়া যায় না।' তারপরেই রাজ্যকে হনুমান জয়ন্তীতে আধাসেনা নামানোর নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশের পর, বুধবার দিঘায় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে বলেছেন, 'হাই কোর্টের রায় আমাদের পক্ষে ভাল হয়েছে। প্রশাসনও নিজের মতো করে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারবে।' আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে হনুমান জয়ন্তী পালনের জন্য এদিন অন্যান্য রাজ্যকেও নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এছাড়া অশান্তি রুখতে, রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও অনেক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রেই খবর, এই হনুমান জয়ন্তীর মিছিলের অনুমতি নিতে হবে অনলাইনে। সেখানে একটি আবেদন পত্রের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি সূত্রের খবর রামনবমীর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে, হনুমান জয়ন্তীতে অতিরিক্ত সতর্ক থাকবে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া রাজ্য প্রশাসনের তরফে, হনুমান জয়ন্তী নিয়ে কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন কলকাতা মহানগর এলাকায় হনুমান জয়ন্তীর কোন মিছিলে ১০০ থেকে ১৫০ জনের বেশি মিছিলে আসতে পারবে না। এবং যারা মিছিলে আসবেন তাঁদের নাম এবং সবিস্তার পরিচয় থানাকে জানাতে হবে।
প্রশাসন সূত্রেই খবর, রামনবমীর অশান্তির পর হনুমান জয়ন্তীতে যাতে কোনভাবে নতুন করে অশান্তি না হয়, সেই জন্য বাইক মিছিল একেবারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং কোনভাবেই ডিজে বাজানো, মিছিলে অস্ত্র নিয়ে আসা, এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য চলবে না। প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, মিছিলের আগেই পথ নির্দেশিকা দিতে হবে থানাকে। সেটাকে ক্ষতিয়ে দেখা হবে। যদি কোন রকম কোন অশান্তির আঁচ পাওয়া যায়, তবে সেই মিছিলকে অন্য অন্যদিকে ঘোরানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে। এছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা অঞ্চলে ৭০-৮০ টি হনুমান পুজো হবে, এবং ৫-৬টি মিছিল হতে পারে। এছাড়া বুধবার আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোন দলীয় নেতা এই মিছিলে বক্তব্য দিতে পারবে না।