প্রসূন গুপ্তঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে দিল্লিতে। রবিবারেই পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানীতে। দুটি বিষয়ে তাঁর দিল্লি আগমন। প্রথমত, মঙ্গলবার 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠক এবং বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার। সকলের নজরেই এই দুটি দিন রয়েছে।
জোটের চিত্র এই মুহূর্তে একেবারেই পাল্টিয়ে গিয়েছে। ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে জাতীয় কংগ্রেসের ভাবনা এক রকম ছিল যে তাঁরা হয়তো জিততে চলেছেন, কিন্তু তিন রাজ্যে তাদের পরাজয় হয়েছে। কাজেই বেশ চাপের মুখে জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস পার্টি। এই তিন রাজ্যে জিততে পারলে জোটের বৈঠকে অনেকটাই প্রাধান্য নিয়ে তারা দাবি রাখতে পারতো, কিন্তু ফল সম্পূর্ণ উল্টে যাওয়াতে এবারে তাদেরই অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলেই ধারণা।
কেন্দ্রীয় স্তরের জোট এর আগে অনেকবার হয়েছে। ১৯৭৭-এ ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের বিরুদ্ধে জোট যা হয়েছিল বা সরকার তা একেবারেই অসম। চরম ডানপন্থীরা সঙ্গে বামপন্থীদের জোট। টেকেও নি। ফের জোট হয়েছিল ১৯৮৯-এ। রাজীব গান্ধীর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি ও বামেদের সাহায্য নিয়ে জনতা দল যে জোট করে সরকার গড়েছিল তাও টেকেনি। এরপর ১৯৯৬ থেকে ৯৮ অবধি একটা জোট হয়েছিল, সেটিরও গঙ্গা প্রাপ্তি হয়েছিল। কিন্তু এরপরে টানা ১৬ বছর এনডিএ এবং ইউপিএ জোট সরকার চালিয়েছিল। যদিও ওই দুই সরকারে প্রাধান্য ছিল প্রথমে বিজেপির পরে কংগ্রেসের।
এবারে বর্তমান মোদী সরকার যথেষ্ট শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে জোট কিভাবে কাজ করবে তা নিয়ে অনেক জটিলতা রয়েছে, সাম্প্রতিক ৫ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেস জিততে পারলে কিন্তু এই জোটের এক প্রকার শক্তি বাড়তো। হয় নি তা। এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার ফর্মুলা দিয়েছেন যে, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তাদের ইচ্ছার উপরে এলাকা ভিত্তিক জোট হবে। বিষয়টি সমর্থন করেছেন স্তালিন, শারদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, হেমন্ত সোরেন, অখিলেশ যাদব বা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ওই ফর্মুলাতে চললে এই রাজ্যে কংগ্রেসের বরাদ্দ দুটি আসন। তেমনই দিল্লির ৬টি আসনের মধ্যে কেজরিওয়াল হয়তো ৪/৫ টি আসন চাইবে। সে যাই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য ভূমিকা যে নেবেন তা স্পষ্ট বলে দেওয়া যায়।