খুনের হুমকি দিয়ে প্রথমে ধর্ষণ, এরপর তার ভিডিও করে হুমকি দিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ। এই অভিযোগ পেয়েও কার্যত নীরব ছিল দত্তপুকুর থানার পুলিস। এবার এই অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতেই গ্রেফতার অভিযুক্ত। বুধবার রাতে বারাসত মহিলা পুলিস থানার পুলিস ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার এই অভিযুক্তকে বারাসত আদালতে তোলা হলে, বিচারক তাঁকে তিন দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
সূত্রের খবর, দেগঙ্গার এক গৃহবধুর সাথে কর্মসূত্রে যোগাযোগ হয় দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত কদম্বগাছীর বাসিন্দা হাফিজুল ইসলামের। আর্থিক অনটন থাকায় নির্যাতিতা হাফিজুলের কারখানায় কাজ করতে শুরু করে। প্রথমে সুযোগ পেয়ে হাফিজুল তার বাড়িতে ওই গৃহবধূকে ডেকে খুনের হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করেন, এছাড়া এ ঘটনার ভিডিও দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিয়ে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জেরেই ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্ব হয়ে পড়েন। এরপর জুন মাসের ১৩ তারিখ অভিযুক্ত হাফিজুলের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এরপর হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ওই নির্যাতিতা।
নির্যাতিতার পরিবারের তরফে অভিযোগ, এ ঘটনার অভিযোগ পেয়েও দত্তপুকুর থানার পুলিস তেমনভাবে কোনও পদক্ষেপই গ্রহণ করেননি। অভিযোগ প্রথমে দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত কদম্বগাছি ফাঁড়িতে, এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। দীর্ঘ দেড় মাস অপেক্ষা করার পর দত্তপুকুর থানার পুলিস কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন ওই নির্যাতিতার পরিবার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জুলাই মাসের ২৯ তারিখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ দায়ের করেন ওই নির্যাতিতার পরিবার, এরপর সংশ্লিষ্ট ওই অভিযোগ বারাসত মহিলা পুলিস থানার অধীনে এনে তদন্ত শুরু করে পুলিস। এরপর ই গতকালতার বুধবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিস।
যদি এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এমন গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন পুলিসের তদন্তে এতদিন সময় লাগলো? কেন এই অভিযুক্ত কে ধরতে বা গ্রেফতার করতে দেড় মাস সময় লাগল? যদিও তার সাফাই হিসেবে বারাসত জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ' অভিযোগের গুরুত্ব বিচার করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, অনেক ক্ষেত্রে এই ধরনের অভিযোগে তদন্ত করতে পুলিসের সময় লাগে।' কিন্তু এ ঘটনায় কেন পুলিসের এত সময় লাগল! সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি।