সৌমেন সুর: ভোটের শেষে বলি হল ৪৬ জন মানুষ। কেউ হলেন পিতৃ হারা, কোনও কোনও মায়ের কোল শূন্য হলো। এই সংঘর্ষ-হিংসা-বিদ্বেষে কার ঠিক কতটা লাভ হল! প্রাণ তো আর ফিরে আসবে না। যে গেল সে তো চলেই গেল। মানুষে মানুষে এই বিভেদ সামান্য রাজনীতির জন্য। কেন? রাজনৈতিক মতভেদ, তরজা থাকবে, তাই বলে আক্রোশ মেটানো হবে প্রাণ নিয়ে! রাত কেটে সকাল হতেই খুনের খবর। খবর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত পৌঁছে দেয় যে মাধ্যম, তাকে আমরা গণমাধ্যম বলি। যেমন- সংবাদপত্র, বেতার, দূরদর্শন ও চলচ্চিত্র। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সাহিত্য, খেলাধুলা, বিজ্ঞান, সিনেমা, বাণিজ্য সব জগতের খবর নিয়ে প্রকাশিত হয় উপরিউক্ত গণমাধ্যমগুলি। আমার বক্তব্য হচ্ছে- সর্বক্ষণ যদি আমরা খুন, মারামারি, রক্তপাত দেখি তাহলে আমাদের রিপুগুলো ১০০% নষ্ট হতে বাধ্য। আমরা জানি যে, আমাদের রিপু গুলোকে শান্ত রাখা একান্ত দরকার। রিপু শান্ত থাকলে মন শান্ত, জীবন শান্ত। তাহলেই মানুষের আচার ব্যবহার, কথাবলা, চরিত্র সবদিক থেকেই একটা সুফল পাওয়া যায়। অথচ আমাদের জীবনযাত্রা ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। নিত্যদিন একটা অযাতিত টেনশনে আমরা দিন কাটাচ্ছি। সর্বসময়ে মনে হয়, 'আর কিছুতেই যায় না মনের ভার/ দিনের আকাশ মেঘে অন্ধকার।' এই কি জীবন! কেন আমরা হেলায় ফেলায় নিজের প্রাণ বিসর্জন দেব!
সবকিছু চলুক সিস্টেমকে ধরে। অবাধ মেলামেশা থাকবে, ভালোবাসা থাকবে, রাজনৈতিক মতভেদ থাকবে- কিন্তু তার পরিণতি হিংসা দিয়ে নয়। এর জন্য সমস্ত গণমাধ্যমগুলোকে সৎ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে সমস্ত মানুষের স্বার্থে। নির্দিষ্ট কোন দলের হয়ে নয়। সব সময় যদি আমরা নেগেটিভ দৃশ্য দেখি, তাহলে আমাদের রিপু নষ্ট হবেই। তাই গণমাধ্যমকে অনুরোধ, খারাপের পাশাপাশি ভালো কর্মের দৃশ্য বা খবর, পৌঁছে দেওয়া উচিত মানুষের জন্য।
সামান্য ভোট পর্বের জন্য জীবন চলে যাবে- সে যে দলেরই হোক, এটা মন থেকে মেনে নেওয়া যায় না। আসুন আমরা শপথ নিয়ে আগামীতে একটা প্রাণ ও বিসর্জিত হবে না, সামান্য লোভের বিনিময়ে। একটু সংযত হই আমরা। আগামী প্রজন্মকে নির্ভেজাল নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচতে সাহায্য করি। মনে রাখবেন, নিজের জীবনের লড়াইটা নিজেকে লড়তে হবে, জ্ঞান অনেকেই দেবে, কিন্তু সঙ্গ কেউ দেবেনা।