একেবারে নবাবি মেজাজেই সন্দেশখালিজুড়ে চলত শাহজাহান রাজত্ব। তাঁর গ্রাস থেকে বাদ যায়নি জমি, দোকান এমনকি মানুষও। প্রথমে সাহস ছিল না প্রতিবাদের, তবে ত্রাসের গ্রেফতারি পর বুকে বল পেয়েছেন বাসিন্দারা। একে একে বেরিয়ে আসছে অভিযোগের পাহাড়। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার মোড়ে বিশাল বড় পাঁচিল দিয়ে ঘেরা রয়েছে 'শেখ শাহজাহান মার্কেট'। পিছনেও রয়েছে এক বঞ্চনায় ভরা ইতিহাস। অভিযোগ, জোর করে জমি দখল করে রাতারাতি গড়ে তোলা হয় বিশাল মার্কেট।
শেখ শাহজাহানের নামের সঙ্গে এই মার্কেটও এখন জনপ্রিয়। মার্কেট তৈরির সময়কালের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের ক্ষমতায় আসার বিস্তর মিল। মার্কেটের সামনেই জ্বলজ্বল করছে ২০১১। শাসক দল ক্ষমতায় বসার পরই বেড়েছিল শাহজাহানের প্রভাব। দলবল নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দখল করা হয়েছিল স্থানীয়দের ১ একর ১৫ শতক জায়গা। রামচন্দ্র মণ্ডল, আরতী মণ্ডল ও নিতাই চন্দ্র মণ্ডলের কাছ থেকে জোর করে জমি সাদা কাগজে লিখিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তারপরেই রাতারাতি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় মার্কেট তৈরির কাজ। কয়েক মাসের সেই মার্কেট রমরমিয়ে চলতে থাকে। যা থেকে মুনাফার সমস্ত টাকাই ঢুকত শেখ শাহজাহানের পকেটে।
মণ্ডল পরিবারের দাবি, সরকারি কাগজপত্রে এখনও তাঁদের নামেই রয়েছে সেই জমি। শাহজাহান গ্রেফতার হতেই জমি ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছে তাঁরা। পুলিসের খাতাতেও জমা পড়েছে অভিযোগ। সেই শাহজাহন মার্কেট এখন সিবিআই স্ক্যানারে। পরপর দু-দিন শাহজাহান মার্কেটেই হানা দিয়েছিলেন আধিকারিকরা। চালানো হয়েছে তল্লাশিও। দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান-- সেই রাজা আজ গারদে, ভাঙছে সাম্রাজ্য, এখন শুধু অপেক্ষা বিচারের।