ফ্ল্যাট প্রতারণা-কাণ্ড মামলার শুনানিতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে। নিম্ন আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আলিপুর জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন বসিরহাটের সাংসদ। আলিপুর পুলিস কোর্টে চলা মামলার শুনানিতে সশরীরে উপস্থিত না থেকে বারবার আইনজীবীকে পাঠান নুসরত। এরপরই আদালত জানায়, আইনজীবী নয় বরং সশরীরে আসতে হবে সাংসদ-অভিনেত্রীকে। এরপরেই জজ কোর্টের দ্বারস্থ নুসরত। যদিও আদালতকে তিনি বলেছেন, সাংসদ হিসেবে সামাজিক বেশ কিছু দায়বদ্ধতা ও পারিবারিক কারণে আসতে পারছেন না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি চলতি বছর ৪ঠা ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, নুসরত জাহান কতটা প্রভাবশালী, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে গড়িয়াহাট থানা এবং আদালতে মামলা দায়ের হয়। আদালত, পুলিসকে তদন্ত চালানোর পাশাপাশি লালবাজারকেও চিঠি পাঠায়। সেই চিঠিতে প্রশ্ন তোলা, কেন অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেনি কলকাতা পুলিস? এরপরেই লালবাজারের নির্দেশে নড়েচড়ে বসে গড়িয়াহাট থানা। তদন্তে পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ এবং অভিযোগকারীদের বয়ান খতিয়ে দেখে নুসরতের বিরুদ্ধে দায়ের অভিযোগের সত্যতা সামনে উঠে আসে। এরপরই নুসরতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়। এখন প্রশ্ন, নুসরতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হলেও পুলিস কেন ব্যবস্থা নেয়নি? কেন একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি? তাই এই মামলায় পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন মামলাকারী তথা প্রতারিতরা। এবিষয়ে কী বলছেন মামলাকারীরা।
এদিকে, প্রতারিত তথা মামলকারীদের তরফের আইনজীবী জানান, কোর্ট নথিতে নুসরত জাহান আমাদের অভিযোগ অস্বীকার করছেন। পাশাপাশি উনি যেহেতু সাংসদ, তাই আদালতে না এসে শুনানি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষেই আবেদন করছেন নুসরত জাহান। তিনি যা কিছু কিনেছেন বা করেছেন, সব নিজের টাকায়, এমনটাই কোর্ট নথিতে বলেছেন উনি। আবার নুসরতের আইনজীবীর দাবি, নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। আমার মক্কেলের সশরীরে হাজিরার উপর উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত বললে নুসরত জাহান নিশ্চয় সশরীরে এসে সহযোগিতা করবেন জানান তাঁর আইনজীবী সরিতা সিনহা।
এখন জোর চর্চা, শহরের প্রবীণ নাগরিক, যাঁরা মাথার ছাদ পেতে সারাজীবনের পুঁজি ঢেলেছিলেন অভিযুক্ত সংস্থায়, তাঁরা এখন প্রতারিত। আর টাকা ফেরত পেতে আদালতে আসছেন অহরহ। আবার জনপ্রতিনিধি হিসেবে বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে হাজিরা এড়াচ্ছেন নুসরত জাহান! তাহলে কি সেই প্রভাবশালী তকমাই ঘুরেফিরে আসছে এই মামলাতেও, এই প্রশ্নই উঠছে।