প্রসূন গুপ্তঃ পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট ঠিক কত শতাংশ তা নিয়ে সঠিক বার্তা কারোর কাছে নেই, কারণ জনগণনা বহুদিন হয় নি। কিন্তু এটা বাস্তব সংখ্যালঘু যেদিকে, বাংলার ক্ষমতা অনেকটাই সেদিকে। দীর্ঘদিন এই ভোটের বৃহৎ অংশ বামেরা পেয়েছিল। একই সঙ্গে এটাও বাস্তব ওই ভোট কিন্তু ভাগও হয়েছিল। এ কারণে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ বা মুর্শিদাবাদে বেশ কিছু আসন পেত কংগ্রেস। আবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভোট তৃণমূল পেয়েছে। অন্যদিকে, উত্তর চব্বিশ পরগনা, বর্ধমান বা মেদিনীপুরের ভোট পেয়েছিল বামেরা।
তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল, তার অন্যতম কারণ নন্দীগ্রাম নেতাই বা রিজওয়ানুর রহস্যময় মৃত্যুতে সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ বামেদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল। ২০১৯-এর লোকসভা বা ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে সংখ্যালঘুদের ৯০% ভোট তৃণমূল পেয়েছিল। ব্যতিক্রম ভাঙ্গর। সেখানে বামেদের জোটসঙ্গী আইএসএফ-এর নওশাদ সিদ্দিকি জিতেছিলেন। বৃক্ষরোপণ কিন্তু সেদিন থেকেই যা হয়তো আমল দেয়নি তৃণমূল।
আইএসএফ নিজেদের যতই ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করুক না কেন, আদতে এটি সংখ্যালঘু অধুষ্যিত দল কাজেই ধর্মের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বার্তা ছড়িয়েছে দিকে দিকে। যে কোনও দেশে সংখ্যলঘুদের দাবিদাবা থাকেই। বামেরা যেটা হয়তো খুব বেশি পাত্তা দেয়নি, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদের আলাদা সুবিধা দিয়েছেন বহুবার। এই পাওয়া বা আরও পেতে হবে, বিষয়টি যেমন সংখ্যালঘুদের আছে তেমন জঙ্গলমহলবাসী, মতুয়া ইত্যাদি গোষ্ঠীর মধ্যেও বিদ্যমান। আজ কিন্তু এই ভোটগুলি ফ্যাক্টর হবে।
সংখ্যালঘু ভোট প্রবলভাবে ভাগ হলে বিজেপির সুবিধা এমন ভাবনার কথাও ভাসছে, কিন্তু হিন্দু ভোট যে একতরফা বিজেপি পাবে তার গ্যারান্টি আছে কি। বরং ভাগাভাগিতে বিজেপিতে চলে যাওয়া ভোট যদি বামে ফেরে তবে ফায়দা তাদের কিন্তু সেটাও অতি সরলিকরণ হয়ে যাবে। অতএব আসন্ন ভোটে অনেক অঙ্ক।