প্রসূন গুপ্ত: কৌস্তভ বাগচী নেতা হিসাবে বা ভোট যুদ্ধে লড়ে খুব একটা নাম করতে পারেননি। পেশায় আইনজীবী, সেখানেও যে ভয়ঙ্কর ওকালতি করেন এমন তথ্যও নেই। বরং ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছেন এবং হাইকোর্টে বিচারপতির অসাংবিধানিক কথা বলার জন্য ধমকও খেয়েছেন। কিন্তু কৌস্তভ কোথাও বিখ্যাত নিশ্চই, তা ঘোরতর তৃণমূল বিরোধিতার জন্য। তিনি বিরোধী নেতার মতো না হলেও মমতা বা তৃণমূলকে আক্রমণ করেন পা বাড়িয়েই। এমনকি একবার মাস কয়েক আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং পরে জামিন নিয়ে নিজের চুল কেটে ফেলেন। একেবারে ন্যাড়া হয়ে রয়েছেন আজ অবধি। প্রতিজ্ঞা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন বাংলার মসনদ থেকে সরে যাবেন, সেদিন থেকে ফের চুল রাখবেন। এ হেনো কৌস্তভ যে ইন্ডিয়া নামক জোট মানবেন না তা বলাই বাহুল্য।
দিল্লির নির্দেশিকা আসার পর রাজ্য কংগ্রেস কিন্তু তৃণমূল বিরোধিতাতে বেশ নরম মনোভাব নিয়েছে। দলের মুখপাত্র যাঁরা তারা মিডিয়ার সামনে যথেষ্ট সংযত। সৌম্য আইচের মতো মুখপাত্র অনেক ক্ষেত্রেই মুখ বন্ধ রেখেছেন, কিন্তু দমানো যাচ্ছে না কৌস্তভকে। সুযোগ পেলেই তৃণমূলের চরম সমালোচনা করছেন।
শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে রাজ্য সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানিয়েছেন যে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর মোটেই নরম করা হচ্ছে না এবং কৌস্তভদের দাবিকে মান্যতা দেননি। কিন্তু তিনি পরোক্ষে জেনেছিলেন এর আগে যে নদী আর পুকুরের মধ্যে ফারাক আছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় জোট একপ্রকার নদী এবং রাজ্যে পুকুর।
তিনি জানিয়েছিলেন, আসন্ন 'ধূপগুড়ি' উপ-নির্বাচনে কংগ্রেস , সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করছে। অধীরের বক্তব্য, আগামীতে তৃতীয় শক্তি হিসাবে বাম-কংগ্রেস যথেষ্ট বেগ দেবে। তিনি পরোক্ষে কৌস্তভদের বার্তা দেন যে অহেতুক মন্তব্য এক প্রকার বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারের গরম গুঞ্জন লোকসভার আগে নাকি কৌস্তভ বিজেপিতে যোগ দিতে পারে এবং হয়তো তাঁকে দমদম কেন্দ্রে প্রার্থী করা হবে। যদিও এ কথা মানতে নারাজ কংগ্রেসের একাংশ। কৌস্তভ এমনটিও বলেছেন যে, কেউ কেউ নাকি সুর নরম করেছে যাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে যেটা আসনে ফের জিততে পারে তৃণমূলের হাত ধরে। ইঙ্গিতটি যে দলনেতাকে তা আর বলার অবকাশ রাখে না। তবে শেষ পর্যন্ত কৌস্তভ কোনও আপোষে যাচ্ছেন না তা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।