সৌমেন সুর: অসীম সাহসী স্বাধীনতা সংগ্রামী শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আজ প্রয়াণ দিবস। যে ভূমিতে মানুষ জন্মগ্রহণ করে- সেটা মানুষের মাতৃভূমি। ক্ষুদিরামের মাতৃভূমি ছিল সেই দেশের মাটি। দেশের জন্য তাঁর প্রাণ কেঁদে উঠেছিল। তাই মানুষের হৃদয়ে ক্ষুদিরামের নাম চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দেশপ্রেম হৃদয়ে সঞ্চারিত হলে দেশের গৌরবকে নিজের গৌরব বলে মনে হয়। ক্ষুদিরামের অত্যন্ত কম বয়স থেকেই দেশপ্রেম জেগে উঠেছিল। ১৯০৩ সালে অরবিন্দ ঘোষ ও ভগিনী নিবেদিতা মেদিনীপুরে এসেছিলেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার প্রয়াসে বক্তব্য রাখেন। এখানে ক্ষুদিরাম বক্তব্য শুনে, দেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে অবহিত হন। ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হন। তখন তার মাত্র ১৪ বছর বয়স। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে, পাঠ ছেড়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেখতে দেখতে স্বাধীনতা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশজুড়ে।
বিভিন্ন বিপ্লবীগণ বিভিন্ন কর্মে যুক্ত হয়ে পড়েন। কিংসফোর্ড কে মারবার জন্য ভার পড়ে দুই যুবকের- ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকির। বেরিয়ে পড়লেন ফোর্ডকে মারতে মুজফফরপুর।দুজনেই নাম পাল্টে দিলেন। উঠলেন এক ধর্মশালায়। একদিন দুজনে ইউরোপিয়ান ক্লাবের পাশে লুকিয়ে থাকেন কিংসফোর্ডের আশায়। অবশেষে ঘোড়ার গাড়ির দেখা মেলে। দুজনে উত্তেজিত হয়ে বোমা নিক্ষেপ করে। দুজনে ভাবলেন সবাই মারা গেছে। কিন্তু কিংসফোর্ড মারা যাননি। মারা যান অন্যজন। তখন দুজনেই ভীষণ আক্ষেপ করেন। ছুটি দুজনে ভিন্ন পথ অবলম্বন করে পালাবার পথ তৈরি করে। অবশেষে ক্ষুদিরাম মুজফফরপুরে একটি চায়ের দোকানে সন্দেহজনক অবস্থায় ধরা পড়েন। প্রফুল্ল চাকি ধরা পড়ার মুহূর্তে নিজের মাথায় গুলিকরে আত্মহত্যা করেন। এরপর ক্ষুদিরামের যখন ফাঁসি হয়- সারা দেশ কেঁদেছিল তাঁর জন্য। দেশের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ ভারতবাসী কোনদিন ভোলেননি, আজও নয়।