পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) বাড়ানোর নির্দেশ হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের (High Court)। সূত্রের খবর, আদালত অবমাননা মামলা করে সোমবার কমিশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই মামলার শুনানিতে আজ অর্থাৎ বুধবার রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন জানায়, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি চিঠি করা হয়েছে এরপর কমিশনের তরফে আইনজীবী স্পষ্ট করেন প্রতি জেলায় এক কোম্পানি বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
এরপরে কলকাতা ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় তাহলে প্রত্যেকটা বুথে কতজন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন সম্ভব। এরপর হিসেব করে দেখা যায়, একজন কেন্দ্রীয় বাহিনী ২৮টি বুথের দায়িত্বে থাকবেন। এরপরই রীতিমতো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনের উপর ক্ষুব্ধ হয়। এবং নির্দেশ দেয় ২০১৩র পঞ্চায়েত ভোটের হিসেব অনুযায়ী ৮২৫ কোম্পানি বেশি বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থে প্রায় ৮২ হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ৬১ হাজার ৬৩৬টি, এবং স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ১৮৯টি। ভোট শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক করার দাবিতে কংগ্রেস ও বিজেপি হাইকোর্ট একটি মামলা করে। ওই মামলা শুনানিতে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেয় রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট হবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার রাজ্য কমিশন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন। ওই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর মঙ্গলবার কমিশনের অনিচ্ছা প্রকাশ পায়। অর্থাৎ এত হিংসা ও সংঘর্ষ সত্ত্বেও, গোটা রাজ্যে ২২টি জেলায়, প্রতি জেলা পিছু এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর চেয়ে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে।
এছাড়া প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মীরা পান্ডে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় এবং পঞ্চায়েত নির্বাচন ৫ দফায় ৮২৫ কোম্পানি অর্থাৎ প্রায় ৮২ হাজার আধা সামরিক বাহিনী মোতায়নের আবেদন জানায়। সেই আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট এবার ওই ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নজরে রেখে কলকাতায় হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর থেকে বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় বুধবার।
এছাড়া সূত্রের আরো খবর রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দেয় এবং কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ডিভিশনের মত যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাহিনী মোতায়েন না করে, তাহলে আদালত কমিশনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিভিশন বেঞ্চ আরও মন্তব্য করেন, যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হয়, তাহলে রাজ্যপালকে সে দায়িত্ব নিতে হবে। এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বদল করে ফের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।