কেউ সচরাচর দুর্নীতির (Scam) টাকা নিজের নামে রাখেন, কিংবা কেউ ওই টাকায় বেনামি সম্পত্তি করেন। কিন্তু অনুব্রত মন্ডল (Anubrata Mondal) তা করেননি। ইডির দেওয়া চার্জশিটে ইডি (ED) জানাচ্ছেন, গরু পাচারের সমস্ত টাকা নিজের নামে ও পরিবারের নামেই করেছিলেন অনুব্রত মন্ডল। তাঁর লোকলস্কর কম ছিল না। সংগঠনের কাজে ব্লক স্তরের নেতাদের ভরসা করলেও অপরাধের টাকার ব্যাপারে কারও উপর আস্থা রাখেননি অনুব্রত মণ্ডল। বেনামীদের অ্যাকাউন্টে না রেখে সব জড়ো করেছিলেন নিজের নামে। ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, গরু পাচারের ৭৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি করেছেন কেষ্ট মণ্ডল।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী হিসাব এটাই। প্রথমে ইডি জানিয়েছিল ২৯ কোটি টাকার হিসাব। তারপর আরও ৪৮ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে ২০৪ পাতার সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এই ৪৮ কোটি টাকা কোন কোন খাতে অনুব্রত ঢুকিয়েছেন নিজের পকেটে তারও একটা হিসাব দিয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বেশি ক্যাশ ডিপোজিট হয়েছিল অনুব্রতর অ্যাকাউন্টে। তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীর নামে যেসব সংস্থা রয়েছে সেগুলির নামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে ২০ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকার। সেই সংস্থাগুলি থেকে লভ্যাংশ হিসাবে অনুব্রত পেয়েছেন পাঁচ কোটি টাকার বেশি। বেনামী অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে প্রায় ছ’কোটি টাকা। লটারিরও বিপুল টাকা ঢুকেছিল তাঁর অ্যাকাউন্টে।
গরু পাচারের কাঁচা নগদ সহযোগীদের দিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে ব্যাঙ্ক মারফত নিতেন অনুব্রত। ইডি দাবি করেছে, অনুব্রত যে সব কায়দা নিয়েছিলেন তা অভিনব। তবে অনেককে ব্যবহার করলেও খুব বেশি টাকা তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে নেই। সবটাই তিনি নিজের ভাণ্ডারে জড়ো করেছিলেন। চার্জশিটে ইডি আরও বলেছে, ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু লোকের নামে অনুব্রত টাকা রাখলেও ২০১৯ সাল থেকে আর ঝুঁকি নেননি। নগদ, জমি, রাইস মিল কেনা—যা করেছেন সব নিজের, স্ত্রীর ও মেয়ের নামেই করেছেন।