রোহিত আগেই জানিয়েছিল ইতিহাস তৈরী করতে চান। এ অবস্থায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের সেমিতে নেমেছে ভারত। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
ভারতের প্রথম একাদশ:
রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, কেএল রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, মহম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজ
নিউজিল্যান্ডের প্রথম একাদশ:
ডেভন কনওয়ে, রাচিন রবীন্দ্র, কেন উইলিয়ামসন, ড্যারিল মিচেল, টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চ্যাপম্যান, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট
এক বিখ্যাত ব্যক্তি বলেছেন, বিশ্বকাপ জেতা না হলে, জীবনে কোনও কিছুই পূর্ণ হয় না। মুম্বইয়ে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে মেসি মন্ত্রকেই স্মরণ করলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। জানালেন, পিছনে নয়, তাঁর টিম ইন্ডিয়া সামনে তাকাতে চায়। তাই ১৯৮৩ থেকে ২০১৯, কী হয়েছিল এই সময়ে তা ভুলে গিয়েছেন তাঁরা। বরং ফোকাস করছেন ১৫ নভেম্বর ২০২৩ সালে কী হতে চলেছে।
ভারতের প্রথম বিশ্বজয়ের সময় তাঁর জন্ম হয়নি। ১২ বছর আগে ভারতে দ্বিতীয় বিশ্বজয়ে জাতীয় দলে তাঁর ঠাঁই হয়নি। এসব কিছু তিনি বা তাঁর দল ভাবছে না। প্রথম সেমিফাইনালে আগে রোহিত জানিয়েছেন, এই দলের অর্ধেক সদস্য ১২ বছর আগে দলে ছিলেন না। তাতেও বিশ্বকাপের উপলব্ধি বুঝতে কারুর কোনও অসুবিধা হয়নি।
ধর্মশালায় ২০ আগে বছর বিশ্বকাপের মঞ্চে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভারত। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে বুধবার ফের রোহিতদের সামনে কিউইরা। তবে ল্যাথম নন, টিম ইন্ডিয়ার চ্যালেঞ্জ এবার কেন উইলিয়ামসন। মাঠে নামার আগে রোহিতের দাবি, ইতিহাস ভুলতে তাঁরা নতুন ইতিহাস তৈরি করবেন। এটাই তাঁর টিম ইন্ডিয়ার প্রত্যাশা।
২২ গজে নামলেই খবরের শিরোনাম চলে আসেন ভারতীয় ক্রিকেটার শুভমান গিল (Subhman Gill)। কিন্তু এবারে ফের তিনি শিরোনামে, তবে এবারে তার নেপথ্যে রয়েছেন শচীন কন্যা সারা তেন্ডুলকর (Sara Tendulkar)। গুঞ্জন, শুভমান মুম্বইয়ে পৌঁছতেই লুকিয়ে দেখা করলেন সারা তেন্ডুলকর। সারা ও শুভমান-এর প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন প্রায় বহুদিন ধরেই। ফলে এই গুঞ্জনের মাঝেই এই চুপিসারে সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সম্প্রতি সারার এক ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হচ্ছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, তাঁর পিছনে যে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে, তিনি শুভমানের নিরাপত্তারক্ষী। আর তা দেখেই নেটিজেনদের অনুমান, সারা আর কেউ নন, শুভমানের সঙ্গেই দেখা করতে এসেছিলেন।
জানা গিয়েছে, ভাইরাল ভিডিওতে সারাকে অগ্নিদেব চোপড়ার বাড়ির সামনে দেখা যায়। অগ্নিদেব চোপড়া সারা ও শুভমানের কমন ফ্রেন্ড। শুভমান মুম্বইয়ে এলেই তাঁর বাড়িতে গিয়েই ওঠেন বলে জানা গিয়েছে। এবারও নাকি তিনি তাঁর বন্ধুর বাড়িতেই রয়েছেন বলে দাবি নেটিজেনদের একাংশ। এছাড়াও দাবি করা হয়েছে, সারা যখন গাড়িতে উঠছিলেন সেই সময় তাঁর পিছনে ছিলেন এক নিরাপত্তারক্ষী। শুভমান গিলের সঙ্গে চলতি বিশ্বকাপে সেই নিরাপত্তারক্ষীকেই দেখা গিয়েছে। যা দেখে নেটিজেনদের একাংশের দাবি, শুভমানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সারা আর সেই নিরাপত্তারক্ষী শুভমানের সঙ্গেই থাকেন। যদিও এই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি সিএন ডিজিটাল।
ম্যানচেস্টারের বদলা কোন পথে ? মুম্বইয়ে প্রথম সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে এখন এটাই আলোচনা ভারতীয় ড্রেসিং রুমে। রোহিতদের হেড স্যর রাহুল দ্রাবিড়ের মাথায় এখন তিনটি বিষয় ঘুরঘুর করছে। এক, ব্যাটিং শক্তিকে আরও মজবুত করা। দুই ম্যানচেস্টারের স্মৃতি প্রতিটি ক্রিকেটারের মাথা থেকে মুছে ফেলা। আর তিন মাঠের মধ্যে আরও দৃঢ় হওয়া।
এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত স্বপ্নের ক্রিকেট খেলেছেন রোহিত শর্মারা। সেটা বিশ্বাস করেন খোদ রাহুল দ্রাবিড়ও। তবুও মুম্বই ম্যাচের আগে বাড়তি কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ তিনি। কারণ, ধর্মশালায় কিউইদের হারালেও, ওই ম্যাচে ভারতকে জিততে খানিকটা ঘাম ঝড়াতে হয়েছিল। দ্রাবিড় মানছেন, উইলিয়ামসন দলে আসায় মুম্বইয়ে আরও শক্তিশালী কিউইরা।
এই শক্তি পরীক্ষাতেই নিজেদের উজার করে দিতে চান ভারতীয়রা। ছত্রিশ বছর পর ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলবে ভারত। ১৯৮৭ সালে এই মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রিলায়েন্স কাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল কপিল দেবের ভারত। ৩৬ বছর পর বিদায় নয়, রোহিত শর্মাদের টার্গেট সোজা আমেদাবাদ।
প্রসূন গুপ্ত: ভারত বাদ দিয়ে এশিয়ার সমস্ত দল এতক্ষণে দেশের মাটিতে পা দিয়ে ফেলেছে। নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডও ফিরে যাচ্ছে। রয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ভারত। সেমিফাইনাল বুধ এবং বৃহস্পতিবার। লিগে যা হয়েছে হয়েছে কিন্তু এবারে চার দলই সতর্ক। গতবার নিয়মের গেঁড়োতে পরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে নি কিউইরা। ভারতও সেমিফাইনালে অদ্ভুত নিয়মের প্যাঁচে পরে হেরে গিয়েছিলো এই নিউজিল্যান্ডের কাছে। দুদিন ধরে ওয়ান ডে ম্যাচ হয়েছিল। আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড যা রান করেছিল তা কোহলির দল আনায়াসেই তুলতে পারতো যদি দিনেরটা দিনেই খেলা হতো কিন্তু বৃষ্টির চক্করে পরে খেলা গড়ায় পরের দিন অবধি। ছন্দ সেখানেই নষ্ট হয়ে যায় বলেই দাবি অভিজ্ঞ মহলে। অবিশ্যি প্রাক্তন অধিনায়ক ধোনির দোষও অগ্রহ্য করা যায় না। অনেকেই বলে বিশ্বের সেরা ফিনিশার সেদিন এতো ধরে খেলছিল যে ম্যাচটি সেখানেই শেষ হয়ে যায়, ধোনি নাকি চান নি ফের বিশ্বকাপ অন্য কারুর হাতে উঠুক।অবান্তর ধারণা হয়তো।
তবে এ কথা ঠিক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ভারতকে বুঝে খেলতে হবে।পূর্বতন রেকর্ড বলছে বিশ্বকাপে কিউইরা ভারতকে বেগে ফেলেছে আগেও। ভারতের এখন যা দল তাতে চিন্তা করুক কেন উইলিয়ামসরা। অনেকেই বলছে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলি ৫০ তম শতরান না পেয়ে ভালোই হয়েছে। ওঁর মধ্যে জেদ কাজ করবে পরের ম্যাচে সেঞ্চুরি করার। তবে খেলা ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে, ওখানে যত বল গড়াবে ততই পিচ ঢিমে হবে কাজেই টস জিতে বিরাটের আগে ব্যাট নেওয়াই শ্রেয়।
অন্যদিকে ইডেনে অন্য সেমিফাইনাল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সবাই চোকার্স বলে। এরা দুর্দান্ত শুরু করেও আইসিসির কোনও টুর্নামেন্টের ট্রফি পায় নি কিন্তু নক আউট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ভয়ঙ্কর। যে কেউই খেলে দেবে। আগের দিন ম্যাক্সওয়েলের খেলা মানুষ কোনও দিন ভুলবে না। যদিও গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এখানেই হেরে গিয়েছিলো। কিন্তু বারবার ভুল ওরা করবে কি?
নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে জিতে অধিনায়ক রোহিত শর্মা আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখছেন টিমের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়। এদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টানা ৮টি ম্যাচের রেকর্ড ভেঙে নবম ম্যাচ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। রাহুল দ্রাবিড় কিন্তু জানালেন, রবিবারের ম্যাচ না জিতলে সবই বৃথা।
দ্রাবিড়ের মতে, টানা ৯টি ম্যাচ জিতেছে ভারত। কিন্তু বুধবার নকআউট। ওয়াংখেড়েতে সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে না পারলে, এতদিনের পরিশ্রম কয়েক লহমায় নষ্ট হয়ে যাবে। দ্রাবিড়ের পাখির চোখ রবিবার। তার আগে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে রাজি নন তিনি।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে সর্বাধিক রান স্কোরার ছিল রাহুল দ্রাবিড়। দ্রাবিড়ের ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামীতে এদিন বেশ কয়েকটি সেই ম্যাচের ছবি ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে ওঠে। এরপরই ক্যামেরায় ধরা পড়ে দ্রাবিড়ের মুখ। চিন্নাস্বামীর দর্শকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন দ্রাবিড়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় দ্রাবিড়ের সেই প্রতিক্রিয়া।
ভারতের মাটিতে বাবরের যুদ্ধ শেষ। ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল পর্বে তুলে দিয়ে, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল পাকিস্তান। শনিবার কলকাতায় প্রথম সাড়ে ছয় ওভারের মধ্যেই ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে পাকিস্তানকে ৬.৪ ওভারে ৩৩৯ রান করতে হত। যা অসম্ভব এবং অবাস্তব। দেখার ছিল কতক্ষণ ইডেনে ইঙ্গো-পাক যুদ্ধে কতক্ষণ লড়াই করবে বাবর আর তাঁর দল। শুরু করেছিলেন ডেভিড উইলি, শেষ করলেন আদিল রশিদ, মইন খান এবং অ্যাটকিনসন। সবমিলিয়ে রান তাড়া করতে নেমে ২৪৪ রানে শেষ পাকিস্তান। হার ৯৩ রানে।
রান তাড়া করতে নেমে গোড়া থেকেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। যে ফখর জামানের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিলেন পাক অধিনায়ক, সেই ফখর রান দেখলে গর্বিত হতে পারবেন না পাক সমর্থকরা। ১৯৯৬ সালে এই ইডেনে সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন বিনোদ কাম্বলি। এদিন সেই দৃশ্য ফের দেখা গেল ইডেনে।
আউট হওয়ার পর চোখের জল নিয়ে মাঠ ছাড়লেন পাক উইকেট কিপার ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ান। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাবরের অবদান ৩৮। ওটাই পাক স্কোর কার্ডে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রান। ম্যাচে তিন উইকেট ইংলিশ বোলার ডেভিড উইলির।
কালীপুজোর দুপুরে বেঙ্গালুরুতে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে ভারত। নয়ে নয় করার ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। তার একদিন আগেই ঠিক হয়ে গেল ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের লাইনআপ। আগামী ১৫ নভেম্বর বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। চার বছর আগে এই দু দেশই সেমিফাইনাল খেলেছিল। বিরাটের ভারতকে হারিয়েছিল উইলিয়ামসনের নিজজিল্যান্ড।
১৬ নভেম্বর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপের মঞ্চে তাদের গা থেকে চোকার্স তকমা কী ঝেড়ে ফেলতে পারবে প্রোটিয়ারা ? উত্তর পাওয়া যাবে কলকাতায়। আর ১৯ নভেম্বর মেগা ফাইনাল। ওইদিন আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি মুম্বই ও কলকাতার সেমিফাইনালে জয়ী দল।
প্রসূন গুপ্ত: অনেকেই হয়তো আশা করেছিলেন ভারত-পাকিস্তানের ফের দেখা হবে এবং ইডেনে সেমিফাইনাল দেখতে যাবে কিন্তু যা হওয়ার তাই হলো।নিউজিল্যান্ড একেবারে ধরাশায়ী করে শ্রীলংকাকে হারালো কাজেই পাকিস্তান যদি ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় তাতেও কাজ হবে না। বিশাল রান করতে হবে এবং সামান্য রানে আউট করতে হবে ইংরেজদের।রান বা পরিসংখ্যা যা বলছে তা অসম্ভব। সুতরাং আগামী ১৫ নভেম্বর ভারত খেলবে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এবং পরদিন ইডেনে অস্ট্রেলিয়া লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। বলা ভালো, ১৯৮৭-তে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ভারত পরাজিত হয়েছিল এবং এবারের মতোই খেলা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। আরও মনে রাখতে হবে গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে পরাজিত হয়েছিল ভারত।এতো নেতিবাচক দিক। ইতিবাচক হচ্ছে, ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই আগের ভারত আর আজকের ভারতীয় দলের আকাশ পাতাল তফাৎ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এতো ভালো বোলিং সাইট-এর আগের কোনও বিশ্বকাপে কেউ পায়নি। প্রত্যেকে জীবনের সেরা ম্যাচ খেলছে। ব্যাটিংয়েও তাই। রোহিত, কোহলি তো বটেই, বাকি ৫ ব্যাটার বেশ ভালো ফর্মে। তবে রোহিতের টস ভাগ্য ভালো কাজেই টসে জিতলে চোখ বুঝে মুম্বাইয়ের মাঠে আগে ব্যাট নেওয়া উচিত।
অন্য ফাইনালে অবশ্যই দক্ষিণ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভালো ফর্মে আছে। কিন্তু ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন কখন কি করতে পারে কে বলতে পারে? আগের ম্যাচে কে জানতো ৭ উইকেট হারানোর পরে ম্যাক্সওয়েল দ্বিশত রান করে খেলা বের করে নিয়ে যাবে! যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা আর আফগানিস্তানের বিস্তর ফারাক কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা চিরকাল সেমিফাইনালে হেরেও যেতে দেখা যায়।এরা ফুটবলের নেদারল্যান্ডের মতো। কিছুতেই চ্যাম্পিয়ন লাক নেই। যায় হোক না কেন লীগ ম্যাচের মতো নকআউট এতো সোজা হবে না। সাধু সাবধান।
শ্রীলঙ্কাকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে হারাল নিউজিল্যান্ড। ১৬০ বল বাকি থাকতেই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় কিউয়ি ব্রিগেড। এই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে ওঠার পথ মসৃণ করলেন কেন উইলিয়ামসনরা। পয়েন্ট টেবিলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরেই থেকে গেলেন তাঁরা। চাপ বাড়ল পাকিস্তানের।
এদিন চিন্নাস্বামীকে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন ও রচিন রবীন্দ্রের বোলিং আক্রমণের সামনে দাঁড়াতে পারেন শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরার ৫১ রান ও থিকশানার ৩৮ রানের ইনিংসে ১৭১ রান তোলে তাঁরা।- ৩ উইকেট তুলে নেন ট্রেন্ট বোল্ট।
এদিন এত অল্প রান তাড়া করতে নেমেও উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রচিন রবীন্দ্র ৪৫ ও ৪২ রান করেন। অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে ১৪ রানে বোল্ড করে ফেরান ম্যাথিউজ। কিন্তু ৩১ বলে ৪৩ রান করেন ড্যারিল মিচেল। ম্যাচ শেষ করে আসেন গ্লেন ফিলিপস ও টম লাথাম।
ইডেনে নামার আগেই কি সেমিফাইনালের স্বপ্ন কার্যত ভণ্ডুল পাকিস্তানের! ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা কিন্তু তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের কঠিন সমীকরণে পাকিস্তানের কাছে এক অদ্ভুত লক্ষ্যমাত্রা এসে দাঁড়িয়েছে। কী সেই হিসেব!
যদি পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে, তা হলে ২৮৭ রানের ব্যবধানে জিততে হবে তাঁদের। যার অর্থ, পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে ৩০০ রান করলে ১৩ রানের মধ্যে ইংল্যান্ডকে অলআউট করতে হবে। প্রথমে পাকিস্তান বল করলে অন্তত ২৮৪ বল আগে খেলা শেষ করতে হবে। অর্থাৎ ৫০ ওভারের ম্যাচ পাকিস্তানকে ২.৪ ওভারেই শেষ করতে হবে।
বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলে এক নম্বরে ভারত। দুই নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনে আছে অস্ট্রেলিয়া। এই চার নম্বর স্থানের জন্য় নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের লড়াই। শ্রীলঙ্কাকে ১৬০ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে হারিয়ে রানরেট অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছেন কেন উইলিয়ামসনরা।
টানা ৬ ম্যাচ হারের পর বিশ্বকাপে অবশেষে জয়ের মুখ দেখল গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। বুধবার পুনের মাঠে নেদারল্যান্ডসকে তাঁরা হারাল ১৬০ রানে। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রান করে ইংল্যান্ড। ৮৪ বলে ১০৮ রান করেন বেনস্টোকস।
বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান ডার্বিতে ইংরেজদের রান তাড়া করতে নেমে ১৭৯ রানে শেষ নেদারল্যান্ডস। দুই ইংরেজ স্পিনারের হাতে এদিন পতন হয় ডাচদের। ৪২ রানে ৩ উইকেট মঈন আলীর, ৫৪ রানে ৩ উইকেট আদিল রশীদের।
পার্থ ভৌমিক (মন্ত্রী / পশ্চিমবঙ্গ সরকার ): মঙ্গলবারের বিশ্বকাপের এই খেলা মনে রাখবো নিশ্চিত। ম্যাক্সওয়েল যেদিন খেলেন সেদিনটা ওরই থাকে। আইপিএলে দেখেছিতো। আজকের ক্রিকেট কিন্তু সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আমাদের ছোটবেলার ইডেনে দেখা বিশ্বনাথ গাভাস্কারের টেস্টের যুগ আজকে আর কোথায়? আজকে একজনের খেলা এবং দলকে জেতানো নিশ্চয় বড় ব্যাপার কিন্তু ম্যাক্সির এই খেলা ভেবে দেখলে অনেকেই খেলে নিচ্ছে। ম্যাক্সিকে তবু ধন্যবাদ দেব প্রয়োজনে দুর্দান্ত ইনিংস খেলার জন্য কিন্তু ভেবে দেখুন এই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের খেলায় মাত্র ২০০ রান দরকার ছিল, দ্রুত তিনটে উইকেট পরে গেলো। তারপর কোহলি এসে ম্যাচটা ধরলেন। কোহলিকে আমি নিঃসন্দেহে এবারের বিশ্বকাপের সেরা বলবোই। দেখুন আবারও বলছি ম্যাক্স দারুন, চিরকাল এই খেলাটা মনে থাকবে কিন্তু এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হারলেও সেমিফাইনালে যেতই। এ ছাড়া আফগানিস্তান স্রেফ অভিজ্ঞতা এবং বাজে ফিল্ডিংয়ের জন্য হারলো। দুটো লোপ্পা ক্যাচ কি ভাবে মিস করলো তারা। প্রথমে বেশ ভালো ফিল্ডিং করছিলো কিন্তু ৭ উইকেট ফেলে দেওয়ার ওদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এসে গেলো এবং সেটাই কাল হলো।
ম্যাক্সওয়েল নিঃসন্দেহে এবারের বিশ্বকাপের সেরা ইনিংস খেলেছে কিন্তু ১৯৮৩ র কপিল হতে পারবে না। নটিংহ্যামে ও বছর জিম্বাবোয়ের সঙ্গে যে খেলা হয়েছিল তা আমরা কেউই দেখতে পারি নি কারণ ইংল্যান্ডের সাম্প্রচারকারী বিবিসি সেদিন ধর্মঘট ডেকেছিল বলে খেলা দেখায় নি কিন্তু বিবরণ তো শুনেছি। ১৭ রানে গাভাস্কার, শ্রীকান্ত, অমরনাথ, যশপাল, পাটিল আউট হয়ে গিয়েছিলো। কপিল এসে খেলা ধরে। তখন ফিল্ডিংয়ের কোনও রেস্ট্রিকশন ছিল না। কখনও বিনি কখনও ১০ নম্বরে থাকা কিরমানিকে নিয়ে ২৬৬ রান এবং নিজের ১৭৫ , ভাবা যায় ? মনে রাখতে হবে ভারত মোটেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষমাত্রা নিয়ে মাঠে নাম নি। কিন্তু কপিলের ওই ইনিংসের পরে নক আউট পর্যায়ে উঠেওছিলো দল এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কপিলের ওই ইনিংস সোনায় বাঁধানো| ওর সঙ্গে তুলনা চলে না।
অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত
চোট নিয়েও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দুরন্ত দু'শতরান হাঁকালেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল । কার্যত 'এক পায়ে' খেলে ২০১ রানের রেকর্ড গড়লেন ম্যাক্স। অসম্ভব মানসিক জেদ নিয়ে প্রায় হেরে যাওয়া একটা দলকে একাই জিতিয়ে দিলেন ম্যাক্স। আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে পরাস্ত করল অস্ট্রেলিয়া।
আফগান বনাম অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন ম্যাক্স। কিন্তু সেঞ্চুরি করার আগেই তাঁর পেশিতে টান ধরে। ইনিংস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ম্যাক্সের ব্যথাও। ম্যাসাজ, ব্যথা কমানোর ওষুধ কিছুতেই কাজ হয়নি।
কিন্তু থামানো যায়নি ম্যাক্সকে। আফগানদের বেঁধে দেওয়া রান তাড়া করে একাই দলকে জিতিয়ে দিলেন ম্যাক্স। তাঁর এই লড়াই উপভোগ করল গোটা বিশ্ব। ম্যাক্স দলকে জেতালেন তো বটেই একই সঙ্গে রেখে গেলেন ২২ গজে একলা লড়াই করার অনুপ্রেরণা।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যাটার হিসাবে একদিনের ক্রিকেটে ডবল সেঞ্চুরি। তিনি প্রথম যিনি ওপেন করতে না এসে একদিনের ক্রিকেটে দ্বিশতরান করলেন। কোনও একদিনের ম্যাচে রান তাড়ায় তাঁর ব্যাট থেকে গেল সর্বোচ্চ রান করার নজির। এই প্রথম কোনও একদিনের ম্যাচে রান তাড়ায় কোনও ব্যাটার ২০০ রানের মাইল ফলক তৈরি করলেন। মঙ্গলবার ওয়াংখেড়ে পরবর্তী সময়ে চুম্বকে এটাই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। যাঁকে বলা হচ্ছে, এক পায়ে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তোলার সম্রাট।
সেই ম্যাক্সওয়েল জানান, মুম্বইয়ের প্রচন্ড গরমে প্রথমে ফিল্ডিং করে তারপর ব্যাট করা মোটেই সহজ ছিল না। তাই কাহিল হয়ে যাচ্ছিলেন। যন্ত্রণা তাঁর শরীরে থাবা বসাছিল। মাঠে শুয়ে তার থেকে নিস্তার খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। কারণ, যে পরিস্থিতি তিনি এসেছিলেন, আর যেখান থেকে তিনি মাঠ ছাড়লেন, তা একশো আশি ডিগ্রির পার্থক্য। ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানিয়েছেন, তাঁর দেখা একদিনের ক্রিকেটে এটাই সেরা ইনিংস।
১৯৮৩ সালে ট্রেন্ট ব্রিজ। নাকি ২০২৩ সালের মুম্বই। বিশ্বকাপের প্রেক্ষাপটে কোনটা সেরা। ওয়াংখেড়ে পরবর্তী সময়ে শুরু হয়ে গিয়েছে এই নিয়ে আলোচনা। কপিলের মহাকাব্য নাকি ম্যাড-ম্যাক্সের রূপকথা ? আলোচনা চলছে। তার মধ্যেই বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তানের হারে আপাতত স্বস্তির শ্বাস পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড শিবিরে। আর ভারত তাল ঠুকছে চার নম্বরে কে থাকবে, তার অপেক্ষায়।