প্রসূন গুপ্ত: ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোট যে স্বচ্ছ ছিল না, তা ফের আজকের ভাষণে বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এটা বাস্তব বাম আমলেও পঞ্চায়েত ভোট জবরদখল করেই করা হতো চিরকাল। সে সময় বিরোধীদের এই অভিযোগ বরাবর ছিল। একই সংস্কৃতি ত্রিপুরাতেও বিদ্যমান। সে যাই হোক না কেন গত পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে অভিষেক বারবার সতর্কতা অবলম্বন করে ভোট করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। নতুন তৃণমূলের এটাও একটি লক্ষণ বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। অভিষেক একইসঙ্গে জানান যে এই দলে একজনই নেত্রী, সেকেন্ড বা থার্ড বলে কিছু নেই। নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, তিনিও উপস্থিত কর্মীদের মতোই একজন সাধারণ কর্মী। লক্ষণীয় তখন মঞ্চে উপস্থিত তাবড় সব নেতা। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অভিষেকের সম্পূর্ণ ভাষণ শোনেন।
দলে যে অসংখ্য নতুন মুখ দায়িত্ব পাবেন তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন অভিষেক। দলের অভিমানী বা বিদ্রোহীদের উদ্দেশে আলাদা করে কিছু না বললেও তিনি জানিয়েছেন, সবাইকে একইসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিষেকের আক্রমণ ছিল দেখার মতো। নরেন্দ্র মোদীর নাম না করলেও তিনি ফের আক্রমণ শানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। ইডি অফিস থেকে বেরিয়ে আগের দিন যেমন অমিত শাহকে টার্গেট করেছিলেন অভিষেক, আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে প্রশ্ন থেকেই যায় যে ক্রমাগত তিনি অমিতকে আক্রমণ করছেন কেন? অভিষেক ছাড়া এ কয়েক মাসে বা কয়েক বছরে যত তৃণমূল নেতাদের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ডেকে পাঠিয়েছিল ততবার প্রত্যেকে কোনও না কোনও বাহানা দেখিয়ে অনুপস্থিত থেকেছেন।
এদেরই অনেককেই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ব্যতিক্রম শুধু অভিষেক। অনেকেরই ধারণা দলকে চাঙ্গা করতে এবং নিজের নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে অভিষেক অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স পলিসি নিয়েছেন। এতে নিঃসন্দেহে তাঁর জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। মমতা ভাষণ দিয়েছেন, আক্রমণ শাণিয়েছেন, তবু কোথাও ফের হিরো অভিষেকই।