
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের জন্য সংসদের চলতি অধিবেশনেই আইন সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর প্রতিবাদে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দুদিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট ডেকেছে ব্যাঙ্ককর্মীদের নয়টি ইউনিয়ন-এর মঞ্চ ইউএফবিইউ।
যার জেরে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যাঙ্ক-এর কাজে আসা গ্রাহকরা। বছর শেষ হওয়ার আগেই ফের ধর্মঘটের ডাক। পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির যত কর্মচারী রয়েছেন, তাঁরা সকলেই এই দেশব্যাপী ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। এই ধর্মঘটের ফলে দুদিন আর্থিক লেনদেন পরিষেবা যে বেশ বড়সড় ধাক্কা খাবে, তা ভালোই আঁচ করা যাচ্ছে।
সারা ভারতবর্ষের পাশাপাশি রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেল ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রভাব। বৃহস্পতিবার এই ধর্মঘটের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার এটিএম পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়। অন্যদিকে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সারা ভারত ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রভাব পড়ল শহর বর্ধমানেও। বর্ধমান শহরের সমস্ত ব্যাঙ্কই বন্ধ। ব্যাঙ্কের সামনে চলছে ধর্মঘটীদের পিকেটিং।
বাঁকুড়া জেলাও ব্যতিক্রম নয়। জেলার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাঙ্ক-এর শাখাগুলির দরজাও বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সমস্ত এটিএম। সকাল থেকে বাঁকুড়া স্টেট ব্যাঙ্কের শাখার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষোভকারীরা। মালদহ ও বারুইপুরে দেখা গেল বিক্ষোভের একই ছবি। চরম সমস্যায় গ্রাহকরা।
ধর্মঘটীদের দাবি, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিল পেশের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে দেশজুড়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এক ধর্মঘটী বলেন, এই বিলের মাধ্যমে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে শেয়ার অনেকটা নিম্নমুখী হতে পারে, ২৬ শতাংশে নেমে যেতে পারে। সেই কারণেই এই বিক্ষোভ।
ব্যাঙ্কের কাজে গিয়েও ফিরে যেতে হয় দুলালি বেগম নামে এক গ্রাহককে। তিনি জানান, ব্যাঙ্ককে গিয়ে দেখেন ব্যাঙ্ক বন্ধ। বাইরে তালা ঝুলছে। তিনি জানতেন না ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে ধর্মঘটের জন্য দুদিন। তাঁর টাকা তোলার কথা ছিল। তবে তিনি সেই টাকা তুলতে পারলেন না। ফলে সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
বলা বাহুল্য, এই ধর্মঘটের জেরে এটিএম পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর গোটা দেশের মতো জেলার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের শতাধিক শাখা ও ১২ শতাধিক এটিএম বন্ধ থাকবে। যার ফলে খুব স্বাভাবিকভাবে সমস্যায় পড়তে চলেছে সাধারণ মানুষ।