প্রসূন গুপ্ত: গুঞ্জনে একটি কথা চালু আছে যে রাজ্য বিজেপিতে নাকি শুভেন্দু অধিকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অতি কাছের মানুষ। অন্যদিকে নাড্ডা আসলে তাঁকে তদারকির দায়িত্ব থাকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। গুঞ্জনে কিছু আসে যায় না বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বর, কারণ দলটি একেবারেই রেজিমেন্টেড বলেই কথিত আছে। তবে জেপি নাড্ডা যতই দলের সভাপতি হন না কেন, কোনও সমস্যা আসলে তখন অবশ্যই ডাক পড়ে প্রাক্তন সভাপতি অমিতের। এই কিছু দিন আগে মনিপুর নিয়ে যখন উত্তাল লোকসভা এবং বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর জবাবি মন্তব্য চাইছে একই সাথে তারা হেরে যাবে জেনেও বর্তমান সরকারের উপর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে, তখনই প্রাথমিক সামাল দেওয়ার জন্য ডাক পড়লো অমিত শাহের। অমিত লোকসভায় মনিপুরকে মোটামুটি পাশে ঠেলে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের গুণগান করলেন প্রায় দেড় ঘণ্টা। অমিত শাহ মানেই ড্যামেজ কন্ট্রোলার।
অমিত অসাধারণ বুদ্ধি ধরেন। অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে লালকৃষ্ণ আদবানির থেকেও দ্রুত দলের নেতিবাচক দিককে ইতিবাচক করে তোলার বিষয়ে পারদর্শী। বাংলার সমস্যা নিয়ে যখনই দলের উচ্চ নেতাদের কেউ কথা বলতে চেয়েছেন তখনই সটান দিল্লি গিয়ে অমিতের সাথে বৈঠক করেছেন নিয়মিত যথা শুভেন্দু।
সম্প্রতি প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বেশ কিছুটা একঘরে। তাঁর সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিত্ব গিয়েছে এবং পরিবর্তে পাননি কিছুই। দিলীপ যে কিছুটা ক্ষুব্দ ও বিষন্ন এবং একই সাথে প্রাক্তন আরএসএস করা বেশ কিছু বিজেপি নেতা তাঁর পাশে সে খবর বিলক্ষণ অমিতের কানে পৌঁছিয়েছে।
সম্প্রতি নাড্ডার কলকাতা সফরে দিলীপ তাঁর প্রতিটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বটে কিন্তু কোনও বিষয়ে টু শব্দটি করেননি। এ খবরটিও অমিত শাহের কানে গিয়েছে বলে খবর। তিনি দিলীপকে দ্রুত দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। দিলীপ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩ টের বিমানে দিল্লি চলে গিয়েছেন। সন্ধ্যার পর অমিত শাহের বাড়িতে তাঁর বৈঠক বলে সূত্রের খবর। এবারে প্রশ্ন কি কি হতে পারে? ১) দিলীপকে শান্ত করতে পারেন অমিত কিংবা ২) দিলীপের মন্ত্রিত্বের সুযোগ আসতে পারে অথবা ৩) তাঁকে ফের কোনও পদ দেওয়া যেতে পারে। তবে আজকেই সমাধান না হলেও অমিত্রাক্ষর ছন্দে যে দিলীপ ফিরবেন তা নিঃসন্দেহে বলে দেওয়া যায়।