ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই ইডি এবং সিবিআইয়ের সক্রিয়তা বাড়বে। মুম্বইয়ে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠকে উপস্থিত হয়ে নেতাদের সতর্ক করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে। তাঁর আশঙ্কা, লোকসভা ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীদের উপর অত্যাচার আরও বাড়াবে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এজেন্সির সক্রিয়তা আরও বাড়বে। গ্রেফতারিও করা হতে পারে দাবি তাঁর।
শুক্রবার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হয় মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "পাটনা ও বেঙ্গালুরুর বৈঠক দেখে আশঙ্কা বেড়েছে বিজেপির। সেকারণে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করে আক্রমণ বাড়ানো হচ্ছে। তাঁর আশঙ্কা, মণিপুর, মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে চাপে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে সেখান থেকে নজর ঘোরাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে সক্রিয় করা হবে।
তবে শুধু মল্লিকার্জুন খড়গে নয়, এর আগেও এই দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজেন্সি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি।
ফুসফুস (Lung), শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রথম থেকেই ফুসফুসের জন্য আলাদা করে যত্ন না দিলে পরে শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে ভয়ানক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তার মধ্যে বর্তমানে আরও বেশি করে ফুসফুসের যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ বর্তমান যুগে বায়ুতে দূষণের (Air Pollution) মাত্রা চরমে উঠেছে। আর এর জন্যই বেশিরভাগ মানুষ এখন ব্রঙ্কাইটিস, আস্থামা, সিওপিডি-এর মতো সমস্যায় ভুগছেন। তাই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে কীভাবে যত্ন নিলে আপনার ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়বেই।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছে, দিনের শুরু সাইকেল চালিয়ে করুন। এছাড়াও যখন সময় পাবেন তখনই সাইকেল চালানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। এতে শ্বাসযন্ত্র ভালো থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শীতকালে কোন জ্বলন্ত কাঠের কাছে গিয়ে তাপ নেওয়ার থেকে ইলেকট্রিক হিটার ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের শ্বাসযন্ত্রজনিত সমস্যা রয়েছে তাঁদের বাড়ির বাইরে গেলেই মাস্ক পরার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও বেশি দূষিত জায়গা এড়িয়ে চলার জন্য বলা হয়েছে।
আবার ফুসফুসের কোনও সমস্যা হলেই কেউ কেউ ইনহেলার না নিয়ে প্রথমেই ওষুধ খান। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শ্বাসযন্ত্রের কোনও সমস্যা হলেই ইনহেলার নেওয়া উচিত। ইনহেলার শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং ওষুধের থেকে ইনহেলার বেশি কার্যকরী।
নির্বাচনের দিন ঠিক হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের (State) জেলায় জেলায় উদ্ধার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র। তবে এই বোমা (Bomb) উদ্ধারের ঘটনায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। পিছিয়ে নেই অন্য জেলাগুলিও (District)। প্রত্যেক জেলার গলিতে গলিতে পাওয়া গিয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র। আবার অনেক সময় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণও হয়েছে। এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনও বোমাবাজি হয়েছে রাজ্যের জেলায় জেলায়।
আজ অর্থাৎ সোমবার ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন। আর সেই পুননির্বাচনে (Re-Polling) মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা এলাকায় একটি পুকুর এবং একটি মাঠ থেকে ৩৫ টি অপরিশোধিত বোমা উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করতে বম্ব স্কোয়াডের একটি দল, স্থানীয় পুলিসের সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অন্যদিকে মালদহের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাকিপুর এলাকায় আম বাগানের ঝোপ থেকে চারটি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। এমনকি নদীয়ার কৃষ্ণনগর ভাণ্ডারখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পানি নালা এলাকার একটি বাড়ি থেকে সাতটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। পুননির্বাচনের দিনও এইভাবে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে।
সৌমেন সুর: ভোটের শেষে বলি হল ৪৬ জন মানুষ। কেউ হলেন পিতৃ হারা, কোনও কোনও মায়ের কোল শূন্য হলো। এই সংঘর্ষ-হিংসা-বিদ্বেষে কার ঠিক কতটা লাভ হল! প্রাণ তো আর ফিরে আসবে না। যে গেল সে তো চলেই গেল। মানুষে মানুষে এই বিভেদ সামান্য রাজনীতির জন্য। কেন? রাজনৈতিক মতভেদ, তরজা থাকবে, তাই বলে আক্রোশ মেটানো হবে প্রাণ নিয়ে! রাত কেটে সকাল হতেই খুনের খবর। খবর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত পৌঁছে দেয় যে মাধ্যম, তাকে আমরা গণমাধ্যম বলি। যেমন- সংবাদপত্র, বেতার, দূরদর্শন ও চলচ্চিত্র। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সাহিত্য, খেলাধুলা, বিজ্ঞান, সিনেমা, বাণিজ্য সব জগতের খবর নিয়ে প্রকাশিত হয় উপরিউক্ত গণমাধ্যমগুলি। আমার বক্তব্য হচ্ছে- সর্বক্ষণ যদি আমরা খুন, মারামারি, রক্তপাত দেখি তাহলে আমাদের রিপুগুলো ১০০% নষ্ট হতে বাধ্য। আমরা জানি যে, আমাদের রিপু গুলোকে শান্ত রাখা একান্ত দরকার। রিপু শান্ত থাকলে মন শান্ত, জীবন শান্ত। তাহলেই মানুষের আচার ব্যবহার, কথাবলা, চরিত্র সবদিক থেকেই একটা সুফল পাওয়া যায়। অথচ আমাদের জীবনযাত্রা ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। নিত্যদিন একটা অযাতিত টেনশনে আমরা দিন কাটাচ্ছি। সর্বসময়ে মনে হয়, 'আর কিছুতেই যায় না মনের ভার/ দিনের আকাশ মেঘে অন্ধকার।' এই কি জীবন! কেন আমরা হেলায় ফেলায় নিজের প্রাণ বিসর্জন দেব!
সবকিছু চলুক সিস্টেমকে ধরে। অবাধ মেলামেশা থাকবে, ভালোবাসা থাকবে, রাজনৈতিক মতভেদ থাকবে- কিন্তু তার পরিণতি হিংসা দিয়ে নয়। এর জন্য সমস্ত গণমাধ্যমগুলোকে সৎ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে সমস্ত মানুষের স্বার্থে। নির্দিষ্ট কোন দলের হয়ে নয়। সব সময় যদি আমরা নেগেটিভ দৃশ্য দেখি, তাহলে আমাদের রিপু নষ্ট হবেই। তাই গণমাধ্যমকে অনুরোধ, খারাপের পাশাপাশি ভালো কর্মের দৃশ্য বা খবর, পৌঁছে দেওয়া উচিত মানুষের জন্য।
সামান্য ভোট পর্বের জন্য জীবন চলে যাবে- সে যে দলেরই হোক, এটা মন থেকে মেনে নেওয়া যায় না। আসুন আমরা শপথ নিয়ে আগামীতে একটা প্রাণ ও বিসর্জিত হবে না, সামান্য লোভের বিনিময়ে। একটু সংযত হই আমরা। আগামী প্রজন্মকে নির্ভেজাল নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচতে সাহায্য করি। মনে রাখবেন, নিজের জীবনের লড়াইটা নিজেকে লড়তে হবে, জ্ঞান অনেকেই দেবে, কিন্তু সঙ্গ কেউ দেবেনা।
৮ জুলাই শনিবার ছিল রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Electoin)। সেই নির্বাচনে মৃত্যু, বোমাবাজি, গুলি, মারধর সবমিলিয়ে এক উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছিল গোটা রাজ্য জুড়ে। এমনকি বাদ যায়নি বুথে বুথে শাসক দলের ছাপ্পা ভোট সহ ব্যালট লুঠ করার প্রক্রিয়া। আর সেই ছাপ্পা ভোটের বিরোধীতা করে পুননির্বাচনের (Re-Polling) দাবিতে পথে নেমেছিল বিরোধী দলগুলি। রাজ্যের জেলায় জেলায় সেই নিয়ে শুরু হয়েছিল অনেক বিক্ষোভও। তাই সবকিছু তথ্য যাচাই করে, ভেবেচিন্তে সোমবার নির্বাচন কমিশন (State Election Commision) ৬৯৬ টি বুথে পুননির্বাচনের নির্দেশ দেয়।
আজ অর্থাৎ সোমবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের পুননির্বাচন। পঞ্চায়েতের যেই বুথ গুলিতে ছাপ্পা ভোট হয়েছে এবং ব্যালট বক্স লুঠ হয়েছে, সেই বুথগুলিতেই করা হচ্ছে পুননির্বাচন। সবমিলিয়ে রাজ্যের মোট ৬৯৬ টি বুথে পুননির্বাচন। আগের তুলনায় পুননির্বাচনে বেশি অশান্তি না হলেও এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক বাম প্রার্থীর শ্বশুর শুকুর আলী শেখের। শনিবারের তুলনায় এদিন একটু শান্ত পরিবেশ নজরে আসছে পুননির্বাচনের বুথগুলি থেকে। এমনকি শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা না গেলেও, পুননির্বাচনে বুথ গুলির বাইরে বেশ সক্রিয়তার সঙ্গে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।
ভোটের দিন, ভোটের কারণেই ছেলেকে হারিয়েছেন। শনিবার বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল বাসন্তীর (Basanti) তৃণমূল (TMC) কর্মী আনিসুর ওস্তাগারের। সেই আনিসুরের মা আমিনা ওস্তাগার এদিন ফের ভোট দিলেন। ছেলের শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১৩ নম্বর বুথে ভোট দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। একই সঙ্গে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন আচমকা বোমা বিস্ফোরণ। তাতেই মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল কর্মী আনিসুরের। বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে আইএসএফ। যদিও, স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায় নির্দল প্রার্থীর দলবল বোমা ছোড়ে। সোমবার সেখানেই চলছে পুনর্নির্বাচন।
মণি ভট্টাচার্য: ভোটের কাজ শেষ হওয়া সত্ত্বেও ১৬ ঘন্টা ধরে নিখোঁজ ভাঙড়ের পোলিং অফিসার। সূত্রের খবর, ভাঙড়ের দ্বিতীয় পোলিং অফিসার সঞ্জয় সর্দার শনিবার গভীর রাতে ভোটের সামগ্রী সমস্ত কিছু ও ডিসিআরসি জমা দিয়ে এখনও অবধি বাড়ি ফেরেননি। তাঁর হঠাৎ এই নিখোঁজ হওয়াতে স্বাভবিকভাবেই চিন্তিত তাঁর পরিবার। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার সঞ্জয়ের পরিবারের তরফে জীবনতলা থানায় সঞ্জয়ের নিখোঁজ সমন্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিস জানিয়েছে, সঞ্জয়ের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস।
সূত্রের খবর, প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক সঞ্জয় সর্দার, ভাঙড়ের ১০৭ বনম্বর বুথ দক্ষিণ গাজীপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে ভোটের কাজে যান। এরপর ভোট শেষে ভাঙড়ের কাঠালিয়া হাইস্কুলে ডিসিআরসিতে ভোট সামগ্রী জমা দিয়ে শনিবার রাত ২ টো ১৫এর সময় সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর ১৮ ঘন্টা হয়ে গেলেও সঞ্জয় নামের ওই দ্বিতীয় পোলিং অফিসার বাড়ি ফেরেননি বলে দাবি তাঁর পরিবারের।
সঞ্জয় সর্দারের স্ত্রী টুম্পা সর্দার সিএন-ডিজিটালকে জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের সঙ্গে শেষবার ফোন যোগাযোগ করা হয়েছিল তখন সে সবে ভোট শেষ করেছেন। এরপর থেকে তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায় নি। তিনি জানিয়েছেন তারপর থেকে ফোন বন্ধই ছিল। এ ঘটনায় রীতিমত ভেঙে পড়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা আজ সকাল থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল গুলিতে ঘুরেছি। কিন্তু কোনও খোঁজ পাই নি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্র থেকে খুব দেরি হলেও সঞ্জয়ের বাড়ি অর্থাৎ ক্যানিংয়ে পৌঁছাতে দেড় থেকে ২ ঘন্টার বেশি লাগার কথা নয়। আমরা পুলিসকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার টিপুসুলতান হালদার সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'আমাদের ভোট কেন্দ্রে তেমন কিছু হয় নি। যখন আমরা ভোট সামগ্রী জমা দিয়ে ফিরছি তখন দেখেছিলাম ওনার ফোন বন্ধ। এরপর থেকে ১৭ -১৮ ঘন্টা কেটে গেলেও তার খোঁজ মেলেনি।'
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইটাহার ব্লকের একটি স্কুলে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন করণদিঘির রহতপুর হাইস্কুলের শিক্ষক রাজকুমার রায়। ভোট চলাকালীনই তিনি বুথ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। পরদিন সকালে রায়গঞ্জ থানার বামুনগাঁ এলাকায় রেললাইনের ধারে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্কুল শিক্ষক প্রিসাইডিং অফিসারের ভোট চলাকালীন এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়ে ওঠে রাজ্যের কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার। এবার ২০২৩ পঞ্চায়েত ভোটে কিছু জায়গায় প্রিসাইডিং অফিসারদের মারধর করা হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে নি। কিন্তু ভাঙড়ের এই পোলিং অফিসার নিখোঁজের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পোলিং বুথের (Polling Booth) পর এবার কাউন্টিংয়েও কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েন করার আবেদন। সুষ্ঠু ভোটের পর গণনায় কোনও অশান্তি, গণ্ডগোল, কারচুপি রুখতে বিশেষ নির্দেশ হাই কোর্টের (High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহার। শনিবারই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১১ জুলাই গণনা। প্রার্থী ও কাউন্টিং এজেন্টদেরও নিরাপত্তা দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়, গণনাকেন্দ্রে আধাসেনা মোতায়েন করতে হবে। মঙ্গলবারই প্রতি বুথে সমাত অনুপাতে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
মঙ্গলবারই নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয় দেখার কথা বলেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এরপরেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat polls)। তার মধ্যেই জারি রয়েছে কুড়মিদের আন্দোলন। এরই মধ্যে পদত্যাগ। একই বুথে তৃণমূল (TMC) যুব সভাপতি অমল মাহাতো ও বুথ সভাপতির সুব্রত মাহাতো পদত্যাগ করলেন। পদত্যাগী এই দুই নেতার বক্তব্য রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য কিছুই করছে না তাই তাঁরা তৃণমূলের পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। সোমবারও ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল লাগোয়া এলাকা থেকে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে কুড়মিতে যোগদান করেন তিন নেতা। এরপর মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে অপর দুই নেতার পদত্যাগে বাড়ছে জল্পনা।
উল্লেখ্য, কুড়মিদের যে দাবি দাওয়া রয়েছে। সেই দাবি-দাওয়াকে সামনে রেখে সম্প্রতিক খেমাসুলিতে একটি বৈঠক হয় ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বদের নিয়ে। কুড়মি সমাজের নেতৃত্বরা মনে করছেন এই যে দুই রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাঁরা সমাজের কাছে একটা বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে।
এই বিষয়ে তৃণমূল যুব সভাপতি অমল মাহাতো বলেন, “আমাদের আন্দোলন চলছিল। সেই আন্দোলন সফল হলে তবেই আমরা ভোটে দাঁড়াতে পারব। সরকার কথা শুনছে না। তাই খেমাসুলিতে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে ভোটের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করা চলবে না। সরকার আমাদের জন্য কিছু করে না। ১৯৮২ সাল থেকে এই আন্দোলন চলছে।” উল্লেখ্য, জামবনি ব্লকের টুলিবড় এলাকা থেকে নির্বাচিত তৃণমূল কংগ্রেসের কৃপা সিন্ধু মাহাতো এবং জাম্বনি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য ভবতারণ মাহাতো, উপপ্রধান তথা পঞ্চায়েত সদস্য যুথিকা মাহাতো দল ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কুড়মি সংগঠনের ঝাণ্ডা কাঁধে তুলে নেন এবং কুড়মি সংগঠনে যোগদান করেন।
আভাস ছিল পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে মে-র কোনও এক সময়ে, সম্ভবত মাসের শেষে। সেই ভাবেই বিরোধী দলগুলির হয়তো ভাবনা ছিল, কিংবা হয়তো ভাবনা ছিলই না। শোনা গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো বা সেই ঘোষণাটি করতে পারেন ২৮ এপ্রিল। কিন্তু রবিবার ৭ মে অবধি কোনও ঘোষণা রাজ্য নির্বাচন কমিশন বা রাজ্য প্রশাসন কিছু জানাননি। ভোট ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় ভোটের দিনক্ষণ ধার্য হয়ে থাকে। বিগত মমতা সরকার কিন্তু দু'বার মে মাসেই ভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন। এবারের ভোট কিছুতেই যে মে তে হচ্ছে না তা পরিষ্কার। কারণ প্রস্তুতির একটি বিষয় রয়েছে নিশ্চিত। দুটি বিষয় নিয়ে খটকা রয়েছে।
প্রথমত, শনিবার পঞ্চায়েতমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এখনই ভোট সম্ভবত হচ্ছে না। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন যে, এখনও রাজ্য নির্বাচন কর্তার সঙ্গে ভোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। কাজেই ধরে নেওয়া হতেই পারে অবিলম্বে ভোট হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দু'মাসের জেলা সফরে বের হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি বাংলার উত্তর ভাগের সফর শেষ করে মধ্য বাংলায় পৌঁছিয়েছেন। এরপর সমগ্র দক্ষিণ বাংলা তো রয়েছে। অভিষেক জানিয়েছিলেন, এই সফর তাঁর দু'মাসের। কাজেই কোনও ভাবেই মে-র শেষ বা জুন অবধি প্রচার চলবে। এটা তো বাস্তব, অভিষেক কোনও একটি পরিকল্পনা নিয়েই প্রচারে বার হয়েছেন। তাঁর গলার অবস্থা খুব ভালো নয়। অনেকেই বলেছিলেন অভিষেকের উচিত কলকাতায় ফিরে কোনও ভালো চিকিৎসককে দেখানো। তাঁর কিন্তু এ বিষয় কোনও সারা মেলে নি। সুতরাং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান অভিষেকের সফরের শেষে হয়তো বা ভোটের দিন ঘোষণা হতে পারে।
এখন কথা হচ্ছে জুনের শেষে বা জুলাইয়ে বাংলায় বৃষ্টি শুরু হয়। কাজেই এমন অনুমানও করা হচ্ছে যে, বৃষ্টির মরশুম শেষ হলে ভোট হতে পারে। তাই যদি হয় তবে কোনও ভাবেই অক্টবরের মধ্যে কি ভোট হবে? তখন তো পুজোর মরশুম চলবে। তাহলে কি নভেম্বরে? জানা যাচ্ছে না।
দু'মাসের সফর নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) শুরু করেছেন দলের প্রচার। প্রচার অবশ্যই পঞ্চায়েত ও লোকসভাকে কেন্দ্র করে। তিনি প্রচার শুরু করেছেন ডুয়ার্স অঞ্চল থেকে এবং এখন রয়েছেন উত্তর-মধ্য বাংলায় অর্থাৎ বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর সেরে মালদহের পথে। তাঁর এই দুই মাসের সফরে কোনও রিসোর্ট বা হোটেল ভাড়া করা হচ্ছে না, থাকছেন তাঁবুতে।
ডুয়ার্স অঞ্চলে বারবার অভিষেক যাচ্ছেন এই কারণে যে, বিগত লোকসভাতে উত্তর বাংলা অঞ্চলের সবকটি আসন হারিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিধানসভা অঞ্চলে দিনাজপুরের দুটি জেলাতে মোটামুটি ফল ভালোই হয়েছিল গত বিধানসভার ভোটে। যেহেতু ডুয়ার্স অঞ্চল অর্থাৎ আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এই চার জেলাতে কিন্তু বিধানসভায় ফের ফল খুবই খারাপ হয়েছিল তৃণমূলের। ফলে অভিষেক ডুয়ার্স অঞ্চলের খোল নলচে পাল্টে ফেলতে চাইছেন। তিনি অভিনব একটি পদ্ধতি চালু করেছেন। দলের অন্দরের ব্যালট পেপার তৈরি করে বিভিন্ন সভায় সাধারণ জনতার কাছ থেকে ভোট মারফত জানতে চাইছেন যে, কে কে উপযুক্ত প্রার্থী। যদিও এই ব্যালট পদ্ধতিতে বেশ কিছু জাইগায় ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার মধ্যেই এলাকার ভোটারদের পালস বুঝে নিচ্ছেন অভিষেক।
মঙ্গলবার জনসভায় তিনি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন যে, মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। লোক দেখানো নেতাগিরি চলবে না। তিনি বলেছেন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তিনি বুঝেছেন, পঞ্চায়েত নেতা, বিধায়ক বা অন্য নেতাদের কিছু মানুষ কোনও যোগাযোগ রাখেন না এলাকার মানুষের সঙ্গে, এমনকী ফোন করলে তাও ধরেন না। এইভাবে চলবে না। জনসংযোগ বাড়াবার কথা বারবার বলা হচ্ছে। তিনি বলেন টিকিট কারা পাবে ভোটে তা ঠিক করবে এলাকার ভোটাররা, কাজেই ভোট নেওয়া হচ্ছে। যদিও এটা বাস্তব বিরোধীদের মধ্যে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী রয়েছেন। কিন্তু সিপিএমের এখনও কোনও প্রচারের উপযুক্ত মুখ তৈরি হয়নি। অন্যদিকে, বিজেপির প্রচারক আছে, ঠিকই কিন্তু এখনও তারা মাঠেই নামেননি। ফলে যতই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকুক তৃণমূলের মধ্যে বিরোধীদের হুঁশিয়ারি এখনও আসে নি।
ভোটের (polls) আগেই রাজ্য জুড়ে বিপুল পরিমাণে মাদক দ্রব্য ও নগদ টাকা উদ্ধার। উদ্ধার হয়েছ ২০ লক্ষ লিটার মদ, ১,৭০০ কেজি মাদক ও ৯৫ কোটি টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকে (Karnataka)। ফলে সীমানায় রাজ্য প্রশাসন এবং নির্বাচন দফতরকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকের চারপাশে ছ’টি রাজ্য রয়েছে। আর এই ছ’টি রাজ্যের সীমানায় ১৮৫টি চেকপোস্ট রয়েছে। আর এই সব চেকপোস্টেই কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২৯ মার্চ থেকে সোমবার পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে ৩০৯ কোটি টাকার জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কর্নাটক থেকে। মাদক দ্রব্য নগদ টাকা সহ ৭৯৪ কেজি সোনা-রুপোও উদ্ধার হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৮০.৫৩ কোটি টাকা। এমনকি সারা রাজ্যে ৬৯ হাজার ৮২৫টি অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০টি বন্দুকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কর্নাটকের এই পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, পুলিসের ডিরেক্টর জেনারেল, নোডাল পুলিস অফিসার, উপকূলরক্ষী বাহিনীর আধিকারিক, নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো, কর্নাটক এবং সংলগ্ন রাজ্যের আয়কর দফতরের আধিকারিকেরাও। ওই বৈঠকেই সীমানার চেকপোস্টগুলিতে কড়া নজরদারির কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, সমাজমাধ্যমেও নজরদারি চালাতে হবে, যাতে ভোট সংক্রান্ত ভুয়ো খবরের উপর নজর রাখা যায়।
প্রসূন গুপ্ত: পৌর ভোটের মতোই পঞ্চায়েত ভোট রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে। কাজেই তিনি ভোটের দিন ঘোষণা করবেন। অবশ্য এ বিষয়ে অলিখিত আলোচনা থাকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে। যতটুকু তৃণমূলের অন্দরের খবর তাতে হয়তো মে-র শেষে অথবা জুনের প্রথম দশ দিনের মধ্যে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে। এই পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ইতিমধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু খুব একটা সুবিধা হয়নি। এখন প্রশ্ন হল, বিরোধী দল মনে করে যে ২০১৮-র মতো যদি ভোট হয় তবে তা প্রহসনে পরিণত হবে। সমবায় ভোটের মতো বিরোধীদের এককাট্টা করে ভোট যুদ্ধে নামার একটা চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখানেও সুবিধা খুব একটা নেই।
সম্প্রতি বিধাননগরের পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখানে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী পরিষ্কার বার্তা দিয়েছিলেন, বিজেপি একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে পঞ্চায়েত ভোটে। যদি 'বিশেষ' কেউ তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে চান তবে তাঁকে পদ্ম চিহ্নেই লড়তে হবে। বিজেপি কাউকে সরাসরি অথবা পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করবে না। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতা-সহ রাজ্য বিজেপির সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। দেবশ্রীর পরিষ্কার বার্তা, যে বিধানসভার বিরোধী নেতাকে দিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট।
অন্যদিকে শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন, মমতা আন্দোলন করে, সংগঠন করে ক্ষমতায় এসেছেন। কাজেই রাজ্য বিজেপির নেতারা যেন সংগঠনের দিকে জোর দেন। তিনি জানিয়েছেন এজেন্সি লাগিয়ে একটি দলকে চাপ দেওয়ার বিষয়কে তিনি সমর্থন করেন না। এখন তিনি শেষবার এসে সরাসরি কথা বলেন সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সঙ্গে। কিন্তু সামনে নির্বাচন এখনও বিজেপির প্রস্তুতির চিত্র পরিষ্কার নয়। ফের অমিত এ রাজ্যে আসছেন ৯ মে, তা অবশ্য কবিগুরুর জন্মদিন উপলক্ষে। কাজেই ৯ মে নতুন কিছু বার্তা দেন কিনা সেটাই দেখার। তবে আগামী ২৮ এপ্রিল ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হবে বলেই খবর।
কোচবিহারের সিতাই গোঁসানিমারি হাইস্কুল মাঠে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় দলীয় নেতৃত্বকে সাবধান করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট পেপার ছেঁড়া এবং মারামারির ঘটনা নিয়ে অভিষেকের প্রতিক্রিয়া, 'তিনি ভাল করেই জানেন কোথায় কোথায় গণ্ডগোল হতে পারে। যদি কেউ ভাবেন, গায়ের জোরে, ব্যালট বাক্স ভেঙে নিজেদের নাম ঢুকিয়ে প্রার্থী হবেন, তাহলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ, পাহারাদারের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি এই কারণেই তৃণমূলের নবজোয়ার শুরু করেছি।’
মঙ্গলবার সাহেবগঞ্জের সভা শেষে সিতাই গোঁসানিমারি হাইস্কুলের মাঠে সভা করতে যান অভিষেক। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পরে তিনি মঞ্চে উপস্থিত হন। তাঁর মিনিট কুড়ির ভাষণের শেষাংশে অভিষেক জানান, 'মঞ্চে ব্যালট বাক্স রেখে যাচ্ছেন। উপস্থিত তৃণমূল নেতা, কর্মী এবং সমর্থকেরা যেন নিজেদের প্রার্থী বাছাই শুরু করেন এবং মতামত জানান।' কিন্তু তিনি সভাস্থল ছেড়ে পরের সভাস্থল শীতলকুচির উদ্দেশে রওনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। একসঙ্গে সবাই ভোট দিতে উঠে যান মঞ্চে। একপক্ষ ব্যালট বাক্স নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে। অন্য পক্ষ ভোট না দিতে পারার আশঙ্কায় ব্যালট কাগজ ছিঁড়তে শুরু করে। শুরু হয় মারামারি-ধাক্কাধাক্কি। পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ঠেলেঠুলে তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকদের মঞ্চ থেকে নীচে নামায়।
কিন্তু পুলিসের সামনে হাতাহাতি শুরু হয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে ওই স্থানে আবার ‘নির্বাচন’ হবে। শীতলকুচির সভায় অভিষেক ওই অশান্তির ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘সিতাইয়ে আমার সভায় একটি ব্যালট বাক্স রাখা ছিল। সেখানে কিছু মানুষ অত্যুৎসাহী হয়ে ভোট দিতে গিয়ে ব্যালট বাক্সটি প্রায় ভেঙে ফেলেছেন।’ তৃণমূল নেতার সংযোজন, ‘এই কারণেই তো তৃণমূলের জনজোয়ার শুরু করেছি। আমি জানি, কোথায় সন্ত্রাস হতে পারে। কোথায় অশান্তি হতে পারে।’
এই ঘটনায় সিতাইয়ের বিধায়ক, জেলা সভাপতিকে নির্দেশ দেন অভিষেক। ওই স্থানে বুধবার ভোট করে রিপোর্ট তাঁকে দিতে হবে বলে জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জানান, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থী বাছাই অভিযানের ভোট হবে। প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে অভিষেকের ৬০ দিনের কর্মসূচি সাজিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছে কোচবিহার থেকে। ‘জনসংযোগ যাত্রা’র শুরুতে অভিষেক জানান, 'তিনি ভাল মানুষের খোঁজে পথে নামছেন। সন্ত্রাসবিহীন ভোট করতে হলে চাই ভাল প্রার্থী। মানুষকেই নেতা বেছে নেওয়ার ভার দিচ্ছেন তাঁরা। মানুষের মত জানার পরই পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই করবে তৃণমূল।' এমন একটি কর্মসূচি সারা ভারতে অভিনব বলে দাবি করেন অভিষেক।