
এগরার পর এবার দত্তপুকুর (Dattapukur)। তিন মাস পর আবারও বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Firecracker Factory blast)। ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত লাগোয়া দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোষপোল পশ্চিমপাড়া অঞ্চলের একটি বাজি কারখানায়। এখনও অবধি ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত অবস্থায় ৯ জনকে জন বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় এক জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দত্তপুকুর থানার পুলিস। পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। প্রশ্ন উঠছে এগরার ঘটনার পরও কেন পদক্ষেপ করল না প্রশাসন?
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। অভিযোগ, একটি দোতলা বাড়িতে মজুত করে রাখা হত বাজি। বিস্ফোরণে প্রায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে বাড়িটি। আশপাশের বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের বিস্ফোরক দাবি, বাজি কারখানার মালিকরা শসকদলের সমর্থক হওয়ায় কেউ ভয়ে কিছু বলতেন না। এই কারখানার পিছনে প্রশাসনের মদত ছিল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রশাসনের নাকের ডগায় বাজি কারখানা চললেও পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ। বিস্ফোরণস্থলে কোথাও ৫০ মিটার, কোথাও ১০০ মিটার দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে দেহাংশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, রথীন ঘোষ এবং সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এছাড়াও রবিবার সন্ধেবেলা উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরেই বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
করণ জোহর পরিচালিত সিনেমা 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি' সিনেমায় দিয়ে বহু বছর পরে পর্দায় দেখা গিয়েছিল বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্রকে (Dharmendra)। তিনি অবশ্য শুধু এলেন না। ধামাকা নিয়ে এলেন। তবে আগের মতো অ্যাকশন নয়, এলেন প্রেম নিয়ে। সহ অভিনেত্রী শাবানা আজমির সঙ্গে পর্দায় চুম্বন সাড়া ফেলে দিয়েছিল চারিদিকে। এই বয়সেও অভিনেতাকে এমন সাহসী রূপে দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন দর্শকেরা। যদিও নিজের সফলতার থেকেও ধর্মেন্দ্র খুশি ছেলে, সানি দেওলের সাফল্যে। তবে এত সাফল্যের মাঝেও হতাশার সুর বর্ষীয়ান অভিনেতার মুখে।
ধর্মেন্দ্র তাঁর অপ্রাপ্তির জন্য নিশানা করেছেন বলিউডকে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমার ছেলে সানির সিনেমা গদর-২ বিরাট সাফল্য পেয়েছে। সবাই বলছেন যে গদর-এক প্রেম কথা, যে সিনেমাটি ২২ বছর আগে এসেছিল, তার থেকেও বেশি সফল হয়েছে এই সিনেমাটি। তার মানে, গদর-২ এর দর্শকদের একটা বড় অংশ গদরের সময় জন্মায়নি। কিন্তু তা সত্বেও উপভোগ করেছে এই সিনেমা।'
অভিনেতা সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, 'আমাদের পরিবার প্রচার করে না। আমরা সবসময় কাজকে আমাদের হয়ে কথা বলতে দিয়েছি। সানি সবসময়ের একজন অন্যতম ব্লকবাস্টার অভিনেতা। কিন্তু তাকে আপনি কখনও নিজের সাফল্য নিয়ে কথা বলতে দেখবেন না। আমার ছোট ছেলে ববিও ভালো কাজ করছে। কিন্তু আমাদের পরিবার কখনও প্রাপ্যটুকু পায়নি। আমরা কিছু মনে করি না। ভক্তদের ভালোবাসা আমাদের জীবনে জ্বালানির মতো কাল করে। ইন্ডাস্ট্রির আমাদের পরিচিতি দেওয়ার দরকার নেই।' আরও একটু হতাশার সুরে অভিনেতা বলেছেন, 'আমি এখনও একটাও পুরস্কার পাইনি'।
ভারতের জন্য বহু প্রতীক্ষিত দিন বুধবার, ২৩ অগাস্ট। সব ঠিক থাকলে আজই সন্ধ্যে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে নামতে চলেছে চন্দ্রযান থ্রি-এর (Chandrayan-3) ল্যান্ডার বিক্রম। আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা, ভারতের স্বপ্ন পূরণের। এই স্বপ্নে সামিল হয়েছেন বলিউড সিনেমা জগতের তারকারা। বহু তারকাই সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। করিনা কাপুর, অভিষেক বচ্চন, আর মাধবন, সকলেই নিজেদের আনন্দ ব্যক্ত করেছেন।
অভিনেত্রী করিনা কাপুর বলেছেন, 'ভারত এবং সকল ভারতীয়দের জন্য গর্বের মুহূর্ত। হৃদয়ে সেই গর্ব অনুভূত হয়। সব ভারতীয়রা তাই অনুভব করছি এখন। সেই মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করার জন্য অনেক ভারতীয় অপেক্ষায় রয়েছেন। একেবারে স্নান সেরে, আমি আমার ছেলেদের সঙ্গে সেই মুহূর্ত দেখব।'
জুনিয়র বচ্চন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'আমি গর্ব অনুভব করছি। ২৩ তারিখ বিকেলে অবতরণ করবে এবং আমাদের বুক গর্বে চওড়া হবে কারণ আমাদের মহাকাশযান চাঁদে পৌঁছে গিয়েছে।
বলিউড তথা দক্ষিণী অভিনেতা আর মাধবন সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, 'চন্দ্রযান সফল হবেই। আমার কথা মিলিয়ে নেবেন ইসরো। আগাম এই দর্শনীয় সাফল্যে আমি খুব খুশি এবং গর্বিত।'
বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে বিধ্বংসী আগুন (Fire)। গলগল করে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা এলাকা। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর (Kharagpur) শহরের মালাঞ্চ রোডে অবস্থিত একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের (Fire Brigade) চারটি ইঞ্জিন। ফ্যাক্টরির পাশেই রয়েছে একটি পেট্রোল পাম্প। পাম্পে যাতে কোনওভাবে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে সেইজন্য চলছে কুলিং প্রসেস। তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্য়ন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
সূত্রের খবর, সোমবার সকালে যখন বিস্কুট তৈরির কাজ চলছিল, ঠিক সেই সময়ই আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়ে। ফুলকির জেরে প্রথমে আগুন লাগে তিন তলার একটি ঘরে। সেই ঘরে মজুত ছিল একাধিক বিস্কুট এর রেপার, প্লাস্টিক, পুরোনো বস্তা সহ একাধিক বস্তু। সেখান থেকেই আগুন গোটা ফ্যাক্টরিতে ছড়িয়ে যায় বলে প্রাথমিক অনুমান। তবে এই বিধ্বংসী আগুন কতক্ষণে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্ধিহান দমকলের আধিকারিকরাও।
বেশ কয়েক বছর পর বক্স অফিসে সাফল্য নিয়ে ফিরেছেন সানি দেওল (Sunny Deol)। চলতি মাসে মুক্তি পাওয়া সবকটি সিনেমার তুলনায় ভালোই ব্যবসা করেছে গদর-২। বেশ কিছু বছর পরে সাফল্যের স্বাদ নিচ্ছিলেন সানি। কিন্তু জীবনে নেমে এসেছে ঘোর বিপর্যয়। অভিনেতার মাথার ছাদ আদৌ থাকবে কি না, তা নিয়েই সংশয়। মুম্বইয়ের জুহুতে একটি বাংলো কিনেছিলেন সানি। তবে ব্যাঙ্ক থেকে ৫৫ কোটি টাকা লোন নিয়েছিলেন এর জন্য। সেই লোন চোকাতে না পারেননি অভিনেতা। এরপরেই নোটিস পাঠায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
রবিবারেই সানির উদ্দেশে একটি নোটিস পাঠানো হয়। সেখানে উল্লেখ করে হয়, জুহুর ওই বাংলো কিনতে ৫৫ কোটি টাকা লোন নিয়েছিলেন সানি। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও সেই লোন চোকাতে পারেননি, তাই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে ব্যাঙ্কের তরফে। কী সেই পদক্ষেপ? সানির ওই বাংলোটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্যাঙ্ক। ৫৬ কোটি টাকা থেকে নিলাম দর ধার্য করা হয়েছিল। তবে অভিনেতার জন্য খানিকটা স্বস্তির খবর, ব্যাঙ্ক তাদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সোমবার সেই নোটিস প্রত্যাহার করেছে। সানিকে অতিরিক্ত এক মাস দেওয়া হয়েছে বকেয়া টাকা মেটানোর। অভিনেতার টিম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আপাতত ব্যাঙ্কের সঙ্গে মধ্যস্থতা করা হয়েছে। অভিনেতা দ্রুত টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগামী দু থেকে তিন দিনের মধ্যেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন সানি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী বলেন, অভিযুক্তরা অপরাধী হিসেবে সফল কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই ব্যর্থ অভিনেতা।
যাদবপুরের ঘটনায় শুক্রবার রাতে ২ প্রাক্তন ছাত্র এবং এক বর্তমান ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার দিন তাঁরা মেইন হস্টেলের এ২ ব্লকের ১০৪ নম্বর ঘরেই ছিলেন। যদিও ধৃতদের পরিবারের দাবি, ওই ছাত্রদের ফাঁসানো হয়েছে।
প্রথম থেকেই অভিযুক্তদের জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী। আদালতে তিনি দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে ধৃতরা জড়িত থাকলেও তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু যখন তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয় তখন আসল ঘটনা প্রকাশ করছেন তাঁরা। এমনকি ঘটনার পুনর্নিমাণের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁরা তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
এনিয়ে যাদবপুরের ঘটনায় মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে যাঁদের গ্রেফতার করা হয় তাঁদের নাম শেখ নাসিম আখতার হিমাংশু কর্মকার, শতব্রত রাই। ১৩ জনের মধ্যে অনেকেই প্রাক্তন ছাত্র রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে যাওয়ার পরেও কেন তাঁরা হস্টেলে থাকতেন। এবং এখানেই হস্টেল কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলেছেন অনেকেই।
১৯৯৮, ২০০৬-২০০৭, এর বেশ কিছু দিন বলিউডের ভাইজানের কাছে স্মরণীয়। এই বছরগুলিতে বলি পাড়ার এই দাপুটে অভিনেতাকে বেশ কিছু দিন কাটাতে হয়েছিল জেলেই। সেসময় সলমানের (Salman Khan) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছিল বেশ কিছু। এরমধ্যে রয়েছে হরিণ ও কৃষ্ণসার হত্যা। আরও একটি মামলা চলেছিল সলমানের বিরুদ্ধে, বেআইনি অস্ত্র রাখার। জেলের সেই দিনগুলি কতটা কঠিন ছিল, অভিনেতাকে কী কী করতে হয়েছে, বললেন সম্প্রতি।
বিগ বস ওটিটি সিজন ২ এর ফাইনাল সম্প্রচারিত হয়েছে সোমবার, অর্থাৎ ১৪ অগাস্ট। সেই মঞ্চ থেকেই সলমানকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'কোনও কাজই বড় বা ছোট নয়। আমি যখন পড়াশোনার জন্য হোস্টেলে থাকতাম, তখন বাথরুম পরিষ্কার করেছি। যখন জেলে ছিলাম তখনও বাথরুম পরিষ্কার করতে হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, বিগ বস ওটিটির দ্বিতীয় সিজনের ফাইনাল বেশ ধামাকেদার হয়েছে। এই সিজনে ফাইনালিস্ট ছিলেন এলভিস যাদব এবং অভিষেক মালহান। শুরু থেকেই দুই প্রতিযোগীদের ভক্তদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা ছিল। কে জিতবে শেষ পর্যন্ত তা জানতে মুখিয়ে ছিলেন দর্শকেরা। তবে অনুষ্ঠান শেষে দেখা যান চেক মেট করেছেন এলভিস যাদব।
বলিউড অভিনয় জগতের অন্যতম প্রাপ্তি অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠি (Pankaj Tripathi)। বিহারের গোপালগঞ্জে একেবারে নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মেছিলেন অভিনেতা। তাঁর বাবা ছিলেন কৃষক। তাই চেয়েছিলেন, ছেলে বড় হয়ে চিকিৎসক হোন। এদিকে পঙ্কজ চেয়েছিলেন অন্যকিছু। মুম্বই এসে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় অভিনয় শিখতে ভর্তি হন।
বলিউডে ডেবিউ করে বেশ কিছু সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে তাঁর অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল 'গ্যাংস অব ওয়াসেপুর' ওয়েব সিরিজ। এরপর দেশের দর্শক বুঝে গিয়েছেন পঙ্কজ কে। কিন্তু অভিনেতার বাবা তাঁকে নিয়ে কী ভাবেন?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, 'আমার অর্জন নিয়ে বাবা খুব বেশি গর্বিত নয়। আমার বাবা এও জানে না, আমি সিনেমায় কী করি। আজ পর্যন্ত সে জানে না সিনেমাহল ভিতর থেকে কেমন দেখতে। কেউ যদি তাঁকে কম্পিউটারে বা টেলিভিশনে আমার কাজ দেখায়, তবেই তিনি দেখেন। আমার বাড়িতে সদ্যই টিভি কেনা হয়েছে।'
এ তো গেল বাবার কথা। অভিনেতা মায়ের প্রসঙ্গে বলেছেন, আমার মা আমাকে টিভিতে দেখেন এবং বলেন, ওকে ফোন করে বল ও খুব রোগা হয়ে গিয়েছে। ও ঠিক করে ঘুমোচ্ছে না, খাচ্ছে না। মা আমার অভিনয়ে বিশেষ নজর দেন না।'
পরনে সাদা নীল টি শার্ট-প্যান্ট, মুখে দুষ্টু হাসি। কখনও চোখে সানগ্লাস, কখনও হাতে বন্দুক, কখনও এমন ভঙ্গি যেন দু'হাতেই ঘায়েল করবেন শত্রুকে। ছোট এই বাচ্চাটির ছবি দেখে মন হবে ঠিক যেন ডনের ছোটবেলা। পরবর্তীকালে এই মিষ্টি বাচ্চাটিই বড় হবে। অভিনেতা (Bollywood actor) হবে। কখনও প্রেমিক রাম হবে, কখনও বাজিরাও হবে, কখনও হবে আলাউদ্দিন খিলজি। এই পথ পেরোতে পেরোতে হাতের মুঠোয় চলে আসবে স্বপ্ন। সে হয়ে উঠবে 'ডন' (Don)।
এতক্ষণে অনেকে ধরে ফেলেছেন। সেদিনের এই বাচ্চাটি আর কেউ নয়, অভিনেতা রণবীর সিং। সামাজিক মাধ্যমে অভিনেতা নিজেই ছোটবেলার এই ছবিগুলি আপলোড করেছেন। একইসঙ্গে লিখেছেন, 'ছোটবেলাতেই আমি সিনেমা ভালোবেসে ফেলেছিলাম এবং অন্য সবার মতো অমিতাভ বচ্চন-শাহরুখ খান,সর্বকালের সেরে এই অভিনেতাকে দেখতাম ও পুজো করতাম। আমি তাঁদের মতো বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। আমার অভিনেতা হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ ছিলেন তাঁরাই।'
ডন থ্রি ছবিতে অভিনয়ের প্রসঙ্গে রণবীর বলেছেন, 'ডনের সাম্রাজ্যের অংশ হওয়া যে দায়িত্বের বিষয় তা আমি বুঝি। আমি আশা করি দর্শক আমাকে ভালোবাসা দেওয়ার একটা সুযোগ দেবেন। এতো বছর ধরে আমার এতগুলোকে যেভাবে ভালোবাসা দিয়েছেন।'
২৮ জুলাই বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছিল, রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি। সিনেমায় আলিয়া ভাটের চরিত্র রানী চট্টোপাধ্যায়ের বাবা, চন্দন চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাঙালি অভিনেতা টোটা রায় চৌধুরী (Tota Roy Chowdhury)। সিনেমা মুক্তির পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা। তাঁর অভিনয়ের নাচের প্রশংসায় ভেসেছে নেট দুনিয়া। এই চরিত্রে করণ বাঙালি অভিনেতাকেই খুঁজছিলেন। তাই টোটাকে পছন্দ করার আগে বাংলার এক জনপ্রিয় অভিনেতার কাছে গিয়েছিল এই চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব।
সেই অভিনেতা আর কেউ নন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতা নিজেই এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে, চন্দন চৌধুরীর চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব তিনি পেয়েছিলেন। এমনকি পরিচালক করণ জোহারের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার আফসোস তিনি বয়ে বেড়াবেন। আবার অভিনেতা এই স্বীকার করেছেন ওই চরিত্রের যা দরকার ছিল, তার সবটা হয়তো অভিনেতা দিতে পারতেন না।
চন্দন চোধুরীর চরিত্রটির নাচ জানা জরুরি ছিল। এই দিক দিয়ে পাল্লায় ভারী ছিলেন টোটা। কারণ অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাচেও পারদর্শী। যদিও এত সহজ ছিল না পুরো বিষয়টা। করণ শুরুতেই বলেছিলেন, 'কেবল নাচ জানলেই চলবে না, কত্থক জানতে হবে।' সেই মতো টোটা কলকাতার এক কত্থক শিক্ষিকার কাছে তালিম নেন। সব মিলিয়ে মোট ৪০টি ক্লাস করতে হয়েছিল অভিনেতাকে। তারপরেই চন্দন চট্টোপাধ্যায় হয়ে উঠেছিলেন টোটা রায়চৌধুরী।
'ডন কা তো জমানা হোতা হ্যায়' এই বিখ্যাত সংলাপকে সত্যি করে নতুন জমানায় পা দিয়েছে ডন-থ্রি। এই জমানায় ডনের চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা রণবীর সিংহকে (Ranveer Singh)। আগে থেকেই জল্পনা ছিল এবার শাহরুখ ফিরবেন না ডন হয়ে। রণবীরের নামও চর্চায় ছিল। তবে জল্পনা আর না বাড়িয়ে এবার প্রযোজনা সংস্থা থেকে রণবীরের ফার্স্ট লুক প্রকাশ্যে আনা হল।
টিজারের শুরুতে রণবীরকে বলতে শোনা যায়, 'যে বাঘ ঘুমোচ্ছে, সে কবে জাগবে? সবাই জিজ্ঞেস করে। তাঁদের বলে দাও, আমি এসে গেছি।' একইভাবে টিজারের শেষে শোনা গিয়েছে ডনের সেই জনপ্রিয় সংলাপের অংশ, 'এগারো মুলুকের পুলিস খোঁজে আমাকে। কিন্তু আমাকে ধরে পেরেছে কে? আমি ডন।' সিনেমার নির্মাতা ফারহান আখতার এই টিজারের ঝলক সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে লিখেছেন, ডনের নতুন যুগ শুরু হচ্ছে।'
A New Era Begins #Don3 @RanveerOfficial #JasonWest @javedakhtarjadu @ritesh_sid @ShankarEhsanLoy @PushkarGayatri @j10kassim @roo_cha @vishalrr @excelmovies @rupinsuchak @chouhanmanoj82 pic.twitter.com/i1hHrl6fuo
— Farhan Akhtar (@FarOutAkhtar) August 9, 2023
ডনের চরিত্রে রণবীর সিংকে দেখে বেশ খুশি দর্শকেরা। অভিনেতা হিসেবে রণবীরকে অনেকে 'ওভার এক্টিংয়ের দোকান' বললেও তাঁর ক্রমাগত নিজেকে ভাঙা গড়া দর্শকদের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। অন্যদিকে শাহরুখ 'ডন থ্রি'-তে অভিনয় করছেন না বলে খুশি তাঁর ভক্তরা। তাঁদের মতে একইরকম চরিত্রে অভিনয় না করে এবার শাহরুখের উচিৎ চরিত্র নির্বাচনে মনোযোগ দেওয়া। তবে টি=ডনের চরিত্রে রণবীর দর্শকের কতটা মন জয় করতে পারলেন, তা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৫ পর্যন্ত।
অভিনেতা যীশু সেনগুপ্ত (Jissu Sengupta) এখন আর শুধুমাত্র টলিউড অভিনেতা নয়। বলিউডে, দক্ষিণী ছবিতেই এখন তাঁকে বেশি দেখা যায়। মণিকর্ণিকা ছবি দিয়েই তাঁর বলিউডে তাঁর জনপ্রিয়তা। যদিও তারও আগে অভিনেতা মর্দানি, পিকু, বরফির মতো ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে অভিনেতাকে শ্যাম সিংহ রায়, দ্যা ট্রায়ালের মতো কাজগুলিতে দেখা গিয়েছে। আসন্ন ছবি 'টাইগার নাগেশ্বর রাও' ছবিতেও তাঁকে দেখা যেতে চলেছে। তবে এবার অভিনয়ে পরিবর্তন আনছেন যীশু।
যীশুর সমস্ত কাজ যারা দেখেছেন, তাঁরা জানেন শুরু থেকেই যীশুর চরিত্রগুলি প্রায় একরকমের। প্রত্যেকটি সিনেমাতেই মূল অভিনেত্রীর স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। প্রত্যেকটি চরিত্রই পজেটিভ। তবে শ্যাম সিংহ রায়, দ্যা ট্রায়ালের মতো সিনেমায় তিনি চেনা ছকের বাইরে বেরোতে শুরু করেছেন। এইবার যীশুকে দেখা যাচ্ছে নেগেটিভ চরিত্রে। এমনকি আসন্ন ছবিতেও তাঁর চরিত্রে অনেকগুলি স্তর দেখা যাবে।
অভিনেতার ধারণা, বলিউডে সৎ স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করতে করতে তাঁকে টাইপ কাস্ট করে দেওয়া হবে। যীশু তাঁকে নিয়ে এই ধারণা ভেঙেই বেরোতে চাইছেন। তাই টাইগার নাগেশ্বর রাও সিনেমাতে তেমনই চরিত্রে বেছে নিতে চেয়েছেন। সিনেমায় এই চরিত্রটিতে যীশুর অভিনয় তাঁকে নিয়ে যাবতীয় সব ধারণা ভেঙে দেবে বলে নিশ্চিত যীশু।
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha)। তাঁর এক 'খামোশ' চিৎকারে চুপ হয়ে যায় বলি পাড়া। বর্তমানে অভিনয় জগতে তাঁকে দেখা না গেলেও এতগুলো বছরে মান সম্মান অর্জন করেছেন। এখনও 'শত্রুঘ্নর জমানা'র উল্লেখ হয় অভিনয় জগতে। তবে তাঁর এই পথ চলা মোটেই সহজ ছিল না। অভিনেতার ছেলে লভ সিনহা সম্প্রতি বাবার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে লভকে জিজ্ঞেস করা হয় বোন সোনাক্ষী সিনহার সংগ্রামের বিষয়ে। লভ বলেন, 'সোনাক্ষীকে সেই অর্থে কোনও সংগ্রাম করতে হয়নি। কারণ সে প্রথম ছবিতেই রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বরং সংগ্রাম করতে হয়েছে বাবাকে।' এরপরেই লভ বলেন, তাঁর বাবা একসময় এতটাই অর্থ কষ্টে ভুগেছেন, যে তাঁকে দুটির মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়েছিল।
লভের জবানিতে, 'এমন একটা সময় ছিল, যখন তাঁকে বেছে নিতে হত যে মিটিংয়ে অংশ নিতে বাসে করে যাবেন না কি খাবারের জন্য সেই অর্থ বাঁচাবেন। কিছু সময় তিনি খেতেন এবং মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতেন। আবার মাঝেমধ্যে সময় বাঁচাতে খাবার না খেয়ে বাসে করে মিটিংয়ে পৌঁছাতেন। সেই সময়টা এমন ছিল, যখন তিনি ভাবতেন নিজের স্বপ্ন বাঁচার জন্য পাটনা থেকে মুম্বই আসা ঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না।'
অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের (Amitabh Bachchan) জন্ম এলাহাবাদে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। এরপর মুম্বই সিনেমা জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে তাঁকে শুধুমাত্র 'অভিনেতা' তকমাতেই সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। অমিতাভ বচ্চন মানে জীবনবোধ। বাবা ছিলেন কবি হরিবংশ রাই বচ্চন এবং মা ছিলেন সমাজ সংগ্রামী তেজী বচ্চন। ছোট থেকেই তাঁর পড়াশোনা গভীর। যেকোনও বিষয়ে অমিতাভর দখল কতটা, তো বোঝা যায় তাঁর বক্তব্যে।
অভিনেতার সঙ্গে কলকাতা ও বাঙালির একটি যোগসূত্র রয়েছে। তিনি বিয়ে করেছেন বাংলার মেয়ে জয়া ভাদুড়ীকে। তাই বাঙালি, বাঙালি সংষ্কৃতি এবং বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। অভিনেতা এক সভায় বাঙালির গর্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে নিজের মন্তব্য করেছিলেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিওতে বিগ বি-কে বলতে শোনা গিয়েছে, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইংরেজিতে রবীন্দ্রনাথ টেগোর হয়ে উঠেছেন। যেখানে তাঁর আসল নাম ঠাকুর। ঠাকুরবাড়ি তাঁর কলকাতার বাসভবন, তাঁর নামেই পরিচিত। একই উদাহরণ অনুসরণ করে, ভারতীয়রা যদি এভাবে উচ্চারণ গুলিয়ে ফেলেন, তাহলে শ্যাম্পেইনকে, চাম্পাগনি বলা উচিৎ। কিন্তু আমরা ভারতীয়। আমরা তা করি না। আমরা ২৫০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনেও সম্মান এবং সহ্য ক্ষমতা দেখিয়েছি।'
অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee) ছবির জগতে অনেকটা সময় কাটিয়ে ফেলেছেন। বাংলা ছবিতে যেমন অভিনয় করেছেন, হিন্দি সিনেমা জগতের দরজাও তাঁর জন্য খুলেছে। সিনেমা হিট হোক কিংবা ফ্লপ, পরমব্রতর অভিনয় দেখার জন্য দর্শকেরা ভিড় করেন সিনেমাহলে। এতগুলো বছরে পরমব্রত নিজেকে অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয়েছেন। তবে কেবল অভিনয় জানলেই অভিনেতা হওয়া যায় না। নিজের জন্য তেমন চরিত্র নির্বাচন করা জরুরি। অভিনেতা দুই মাপকাঠিতে এই চরিত্র বেছে থাকেন।
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, 'কোনও প্রজেক্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি দুটি বিষয় মাথায় রাখি। প্রথমত, সেই প্রোজেক্টটি যেন আমার সঙ্গে এবং দর্শকদের সঙ্গে অনুরণিত হয়। দর্শকদের পছন্দ হলে আমি একইরকম চরিত্র করতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। আমি আগেও একইরকম চরিত্রে অভিনয় করেছি। আর দ্বিতীয়ত যদি সিনেমার বিষয় যদি দর্শকদের বর্তমান পছন্দের না হয়, তাহলে চরিত্রটি যেন কৌতূহলের হয়, চ্যালেঞ্জিং হয়। চরিত্রটি যদি সাধারণ হয়, তাহলে যেন খুব সাধারণ হয়। আর চরিত্রটি যদি অসাধারণ হয়, তাহলে যেন তেমন চিত্রায়ন হয়।'
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে তৈরী হচ্ছেন 'হাওয়া বদল ২'-এর জন্য। এই সিনেমা দিয়েই পরিচালনায় ফিরতে চলেছেন তিনি। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে, রাইমা সেন, রুদ্রনীল ঘোষ এবং পরব্রতকেও। ২০১৩ সালে এই সিনেমার প্রথম পর্ব বেরিয়েছিল। দর্শক বেশ পছন্দ করেছিল সিনেমাটি। এবার তারই সিক্যুয়েল আসতে চলেছে।