প্রসূন গুপ্তঃ স্বাধীনতা উত্তর যুগে যে কয়েকটি এলাকা লাল দুর্গ হিসাবে খ্যাত হয়েছিল তার অন্যতম যাদবপুর। এর কারণও ছিল। অঞ্চলের বিশাল স্থানে এসেছিলো উদ্বাস্তুরা এবং ইতিহাস বলে বাম বা সিপিএম বা নক্সালরা যেখানে সংগঠন পোক্ত করেছিল তার বেশির ভাগই উদ্বাস্তু এলাকা ছিল। কিন্তু এই মিথটি ভেঙে দিয়েছিলেন ১৯৮৪/৮৫ তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের এই লোকসভা সিপিএমের হাতে চলে যায় ১৯৮৯ তে। ফের তৃণমূল দল তৈরি হলে এই যাদবপুর থেকে জিতে আসেন কৃষ্ণা বসু। ফের ২০০৪-এ ফের সিপিএমের হাতে আসে এই লোকসভা। কিন্তু ২০০৯ থেকে এই লোকসভা ফের চলে আসে তৃণমূলের হাতে।
যাদবপুর লোকসভায় ৭টি বিধানসভা আছে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, সোনারপুর ১ ও ২, বারুইপুর ১ ও ২ এবং ভাঙ্গর। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৭টির মধ্যে ৬টি বিধানসভা যেতে তৃণমূল। একমাত্র ভাঙ্গরে আইএসএফ এর প্রার্থী নৌশাদ সিদ্দিকী জেতেন। গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী বিজেপির অনুপম হাজরাকে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটে পরাজিত করেন। এবারে কিন্তু মিমি আর লড়াইয়ে নেই, এসেছেন আর এক গ্ল্যামার দুনিয়ার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। বিরুদ্ধে বিজেপির উচ্চ শিক্ষিত অনির্বান গাঙ্গুলি এবং সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্য।
লড়াইটা কেমন হবে উঠেছে প্রশ্ন? প্রথমত এবারে লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি নাকি তৃণমূলের লড়াই সিপিএমের সঙ্গে? বাম প্রার্থী সৃজন নব্য যুবা। জনপ্রিয়তা আছে তাঁর। একই সাথে জানতে হবে যে গতবারে লড়াই কিন্তু ত্রিমুখী হয়েছিল এই যাদবপুরেই। একমাত্র সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য সারা বাংলায় নিজের জামানত রাখতে পেরেছিলেন। যদি সেই মোতাবেক ভোট হয় তবে সায়নীর বড়সড় ভোট জিতে আসাটা সমস্যার হবে না। কিন্তু যদি সৃজনকে খোদ সিপিএম ভোট না দিয়ে অনির্বাণকে দেয় তবে লড়াই জোরদার। আবার যদি সিপিএমের পুরাতন ভোট দলেই ফিরে আসে তবে লড়াই জোরদার তৃণমূলের সঙ্গে তাদের। সে যাই হোক না কেন কলকাতা, বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতা লাগোয়া যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র কিন্তু তৃণমূলের অন্যতম খাসতালুক ফলে অনেকটাই পা বাড়িয়ে খেলছেন সায়নী।