
মৎস্য চাষভিত্তিক সুন্দরবন। বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে একাধিক মাছের ভেড়ি। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাসনাবাদ সহ একাধিক ব্লকে রয়েছে এইসব ভেড়ি। সেখানে তেলাপিয়া, ভেটকি, ট্যাংরা, রুই-কাতলার মতো একাধিক মাছের চাষ হয়। এই পেশার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সুন্দরবনের লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু শান্তিতে নেই হিঙ্গলগঞ্জের প্রায় ৯২ জন জলকর মালিক। এই হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকেরই সান্ডেলের বিল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ নং এলাকায় রয়েছে ১০০ বিঘার একটি মৎস্যভেড়ি। সমস্যা দানা বেঁধেছে এই ভেড়িকে কেন্দ্র করেই।
এই জলকরেই গত ২০ বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছেন পার্শ্ববর্তী বাঁকড়া গ্রামের বাসিন্দা হাসান গাজি। তিনি একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে সরকারিভাবে লিজ নিয়ে জলকর তৈরি করে মাছের চাষ করতেন। কিন্তু জমির কয়েকজন মালিক চাইছেন, তাঁদের লিজের টাকা আগের মতো দিলে হবে না। বিঘাপ্রতি ১৪,০০০ টাকা করে দিতে হবে। কিন্তু হাসান গাজি তা দিতে অস্বীকার করছেন।
অন্যদিকে, এই ৯২ জন জমির মালিকের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্বাক্ষর করে পুরনো দামেই হাসান গাজিকে জমি লিখে দিয়েছেন। কিন্তু আবার বেশ কিছু জমির মালিক ওই টাকাতে জমি ছাড়তে নারাজ। আর যার জেরেই গণ্ডগোল বেধেছে দু'পক্ষের মধ্যে। জমির কয়েকজন মালিক দাবি করছেন, তাঁদের সব সময় ভয় দেখানো হচ্ছে। একাধিক জায়গায় তাঁদের হেনস্থাও করা হচ্ছে। যদিও সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে হাসান জানান, তিনি সব সময় এঁদের সঙ্গেই আছেন। কিন্তু তাঁরাই বলপূর্বক জমি আটকে রেখেছেন। যার জেরে তিনি মাছ চাষ করতে পারছেন না।
জমির যাঁরা আসল মালিক, সেই ৯২ জনের মধ্যে প্রায় ৫০ জনের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো। তাই তাঁরা চাইছেন, অবিলম্বে যেন তাঁদের প্রাপ্য টাকা দিয়ে জমিটি লিজ নেওয়া হয়। নয়তো তাঁরা আগামী দিনে সংসার চালাতে যথেষ্টই সমস্যার মধ্যে পড়বেন।