কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল প্রথম থেকেই। আমডাঙার প্রধান খুনের তদন্ত এগোলে বোধহয় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তথ্যেও শিলমোহর পড়ার পালা। তবে তার আগে সিএন-র অন্তর্তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু দলের রেষারেষি নয়, এ যে একেবারে এলাকার দখলের লড়াই। কার দম কত? কার জোর কত? কার দখলে যাবে জমি? ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াইতেই কি বলি আমডাঙার প্রধান?
দুষ্কৃতী-বোমাবাজিতে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলের খুনে প্রাইম সাসপেক্টের তালিকায় তৃণমূল নেতা তৈয়ব হোসেন। তদন্তের শুরুতেই খাঁড়া হয় তৃণমূলী গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব। কিন্তু খুনের মোটিভ কী হতে পারে? সেই কেঁচো খুঁড়তে গিয়েই বেরিয়ে এল কেউটে। উত্তর ২৪ পরগনার বোদাই অঞ্চল, এই এলাকায় প্রভাব তৃণমূল নেতা তৈয়ব হোসেনের। অভিযোগ, তৈয়বকে টপকে বোদাইতেও জমি দখল, বাগান বাড়ির দখল, দালালি শুরু করেছিলেন রূপচাঁদ। গণ্ডগোলের মূলে থাকতে পারে দত্তপুকুরের ১০ বিঘা জমির ওপর অবকাশ বাগানবাড়ি।
কাকের বাসায় কোকিলের মতো জুড়ে বসেন রূপচাঁদ। শুধু অবকাশ বাগান বাড়ি নয়, নীলগঞ্জ-দত্তপুকুর রোডে সন্তোষপুরে সরকারি জমি দখল করে নাকি একটি হোটেল ও কার সার্ভিস সেন্টার তৈরি করেছিলেন আমডাঙার প্রধান।
মাকড়সার জালের মতো তৈয়বের এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন রূপচাঁদ। অভিযোগ, সরকারি জমি দখল করে রূপচাঁদের হোটেল তৈরিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন তৈয়ব। কসমস গ্রীন সিটি নামে একটি প্রোজেক্টেও প্রভাব খাটান রূপচাঁদ। বোদাইতে জমি কেনা-বেচার লড়াইয়ে দিনের পর দিন তৈয়ব-রূপচাঁদের সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে।
তৈয়বের বোদাইয়ে কেন রূপচাঁদের প্রভাব খাটবে? বিবাদ তুঙ্গে যাওয়ার পর আমডাঙায় বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে তৈয়বের ছেলে ও ভাইয়েরা রূপচাঁদকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
পুরনো শত্রুতার জেরেই কি প্রধান খুন? দখলদারির লড়াইটা বাড়তে বাড়তে কতদূর বেড়েছিল? খুনের মূলে বখরার লড়াই? মানুষ মারার মতো প্রতিশোধ স্পৃহা কী জন্মেছিল?