
মনি ভট্টাচার্য: 'মমতা দি চাইলে, দিদির সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখব।' 'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story) সিনেমায় বাংলার নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) স্থগিতাদেশের পর সিএন-ডিজিটালকে এমনই জানালেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন (Sudipto Sen)। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই সিনেমার উপর বাংলার নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
চলতি মাসের ৫ তারিখ এই সিনেমা গোটা ভারতবর্ষে মুক্তি পায়। এরপরেই আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে ৮ই মে এই সিনেমার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান সিনেমার পরিচালক সুদীপ্ত সেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। সেজন্য কোনও সিনেমা বন্ধ হতে পারে না। এরপর এই সিনেমাটি দেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন বিচারপতি স্বয়ং। যদিও পাল্টা তিনি আরও জানান, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ ই জুলাই, ওই তারিখের মধ্যে সিনেমায় প্রদর্শিত ৩২ হাজার মহিলার ধর্মান্তরিত সমন্ধে তথ্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই রায়ে স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ খুশি পরিচালক সুদীপ্ত সেন। বৃহস্পতিবার সিএন-ডিজিটালকে তিনি বলেন, 'একটি ছবি দেখার জন্য যে আন্দোলনের চেহারা নিয়েছে বাংলায়, সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায়, নিউজ চ্যানেলে, তা দেখে আমি খুশি। আপনারা সঙ্গ দিয়েছেন।' এছাড়া সিএন ডিজিটালকে ধন্যনাদ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'সারা ভারতবর্ষ ছবিটা দেখছে, বাংলা কিছুটা পিছিয়ে গেল। আমাদের ১০-১২দিন নষ্ট হলো। এই ছবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ১০ দিনে দু'বার রায় দিলেন। এই ছবি নিয়ে নিশ্চয়ই এ দেশে কোনও কথা হবে না। এই ছবিটাকে কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে, কিংবা এই ছবিতে তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। এই যে রটনা চলছিল সেটা নিশ্চয়ই বন্ধ হবে।'
বাংলার পরিচালকের সৃষ্টি, বাংলায় নিষিদ্ধ ঘোষণা এ নিয়ে আবার সরব হন তিনি। পরিচালক সুদীপ্ত সেন আরও বলেন, 'আমি বাঙালি, আমার মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছিল গোটা দেশে, কারণ সব জায়গায় প্রচলিত পশ্চিমবঙ্গ আজ যা ভাবে, অন্যান্যরা সেটা আগামীকাল ভাবে। সেই জায়গায় এই সিনেমা ব্যান হয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না।'
এরপরেই তিনি আরও বলেন, 'দিদি চাইলে আমি আসবো, এসে দিদির সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখতে চাই। কেউ দিদিকে ভুল বুঝিয়েছিলেন। আমার ধারণা দিদি নিজে ফিল্ম দেখেবন এবং বুঝতে পারবেন। এই ব্যান করা কতটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, সেন্সর বোর্ড যখন কোনও সিনেমাটিকে পাশ করিয়ে দেয়, তখন কারোর ক্ষমতা থাকে না সিনেমাটিকে ব্যান করার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিচ্ছিলেন। ফিল্ম না দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি।'