প্রসূন গুপ্ত: প্রায় ২৫ বছর ধরে বেসরকারি চ্যানেলে কোনও রাজ্য বা দেশের ভোটের আগে পরে ওপিনিয়ন পোল বা ভোটের আগের সমীক্ষা এবং ভোট শেষ হলেই এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত সমীক্ষা তুলে ধরা হয়। এখন প্রশ্ন থাকে কি করে এই আগাম ফলের চিত্র চ্যানেলগুলি তুলে ধরছে? জানা যায় যে, ভোটদানের পরে নাকি নানান প্রশ্ন করে ভোটদাতাদের কাছ থেকেই এর উত্তর পাওয়া যায়। এবারে ফল জানাতে গিয়ে অনেকটা শেয়ার বাজারের মতো তারা বলে যে, এই ফলাফল সর্বদা যে সঠিক হবে এমন গ্যারান্টি নেই। তা যাই হোক না কেন কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অনেক সময়েই এই আগাম ফল বাস্তবে পরিণত হয়েছে, আবার তাদের সকলকেই বোকা হতেও হয়েছে। একেবারে উল্টো ফল হয়েছে। তবে মনে করি সারা ভারতে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায় এই এক্সিট পোল। কারণ আমাদের রাজ্যে সেই বাম আমল থেকে ভোটারদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সরকারের প্রতি দীর্ঘসূত্রী আনুগত্য যা বামেরা পেয়েছে এবং সরকার বিরোধী ভোট। ব্যতিক্রম হয়েছিল ২০১১-তে যেবার মমতা ক্ষমতায় এসেছিলেন।
ইদানিং মোদী জমানায় দেশের সিংহভাগ চ্যানেল তাদের আনুগত্য কেন্দ্রের প্রতি রেখে খবর কর। কাজেই গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই এক্সিট পোল সঠিক তথ্য দিতে পারছে না। এইতো এ বছরের গোড়ায় কর্ণাটক নির্বাচনে অনেকেই কংগ্রেসকে কিছুটা এগিয়েও জনতা দল (এস) ফ্যাক্টর হবে জানিয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেলো বিপুল আসন পেয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলো এবং জনতা দল প্রায় নিঃশেষিত হয় গেলো। এবারে মানুষের নজরে ছিল সদ্য সমাপ্ত হওয়া ৫ রাজ্যের এক্সিট পোলের দিকে। বৃহস্পতিবার তেলেঙ্গানার ভোটপর্ব শেষ হতেই আধা ডজন ন্যাশনাল চ্যানেল এক্সিট পোল বের করলো। কিন্তু অদ্ভুতুড়ে এই ফলের নমুনা। একেক চ্যানেল একেক রকম ফল দেখাচ্ছে। কোথাও ছত্রিশগড়ে দেখাচ্ছে ফের কংগ্রেস আসছে আবার কেউ দাবি করছে বিজেপি ০.৫ শতাংশ ভোট এদিক ওদিক হলে ক্ষমতায় চলে আসবে। মধ্যপ্রদেশ নিয়েও একই মত। দুটি সংস্থা দাবি করছে বিজেপির বিপুল জয়, আবার ৪টি সংস্থা বলছে না কংগ্রেস কোনওক্রমে চলে আসবে। একই হিসাব রাজস্থান নিয়েও। ৪টি সংস্থা দেখাচ্ছে বিজেপি আসছে আবার দুটি সংস্থা বলছে কংগ্রেস শেষ মুহূর্তে বাজিমাত করবে। কাকে ভরসা করবে মানুষ?