মঙ্গলবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করার অভিযোগ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। চলতি অধিবেশনের মেয়াদকালীন সাসপেন্ড থাকবেন বিরোধী দলনেতা, জানিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার পক্ষের উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়ের আনা এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেন। যা নিয়ে তরজায় জড়ায় শাসক-বিরোধী শিবির। বহিস্কার ইস্যুতে এবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পাশে দাঁড়ালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার দুর্নীতির প্রতিবাদে ধর্মতলার সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, আমাদের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দিদি ফের বহিষ্কার করেছে। এর পরেই কার্যত হুঙ্কার ছোঁড়েন শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দিদি কান খুলে শুনে নিন, শুভেন্দুকে বিধানসভা থেকে বার করতে পারেন। কিন্তু বাংলার মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না।
মঙ্গলবার সংবিধান নিয়ে প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় ঘটনার সূত্রপাত। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বক্তব্য রাখার সময় বিধায়কদের দল বদল প্রসঙ্গে সরকার পক্ষকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, বিরোধী পক্ষ থেকে দল বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর ওই সব বিধায়করা বাইরে নিজেদের তৃণমূল বলে পরিচয় দিচ্ছেন। অথচ বিধানসভার অভ্যন্তরে তাঁরা এখনও বিরোধী বিধায়ক বলেই পরিচিত হচ্ছেন। এই সময় অধ্যক্ষ তাঁকে থামিয়ে বলেন, বিধানসভার অভ্যন্তরের নথিতে যা আছে সেই অনুযায়ি বিধায়কদের পরিচয় দেওয়া হয়। অধ্যক্ষ শঙ্কর ঘোষকে এই সংক্রান্ত বক্তব্য বিধানসভার কার্য বিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে বিজেপি সদস্যরা সভায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্লোগান দিতে থাকেন বিরোধী দলনেতা। কিছুক্ষণ পরে বিজেপি সদস্যরা দল বেঁধে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন। এর পরেই সরকার পক্ষের অন্যান্য সদস্যরা বিরোধী দলনেতার আচরণের নিন্দা করে তাঁর সাসপেনশনের দাবি করেন।
তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বিরোধী দলনেতার এই আচরণকে নজীরবিহীন বলে বিরোধী দলনেতার এক মাসের সাসপেনশনের স্বপক্ষে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। বিরোধী শূন্য বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। তবে সাসপেন্ড হওয়ার পর নিজের অবস্থানে অনড় বিরোধী দলনেতা। তিনি জানান ধমক চমক দিয়ে তার কন্ঠরোধ করা যাবে না। এবার শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়ে কার্যত সুর বাঁধলেন শাহ তা বলাই বাহুল্য।