
জেলার বিজেপি সভাপতিকে মানছি না মানবো না। রবিবার সাতসকালেই এলাকায় পড়ল পোস্টার। আর যা ঘিরে বিজেপির দলীয় কোন্দল এল প্রকাশ্যে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ের কাছেই বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে পোস্টার। পোস্টারে লেখা রয়েছে "বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকে মানছি না মানবো না"। তবে বিষ্ণুপুর বিজেপি কর্মীদের দ্বারাই যে এই পোস্টার লাগানো হয়েছে, পোস্টারে তাও উল্লেখ রয়েছে। পোস্টারে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে। বিষ্ণুপুর শহরের একাধিক জায়গায় এই পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সম্প্রতি, গত ২৫ ডিসেম্বর বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় জেলা সভাপতি পদে রদবদল হয়। জেলার দু'জন সভাপতিকে বদল করে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় বিল্লেশ্বর সিংহকে এবং বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় সুনীলরুদ্র মণ্ডলকে। এরপর থেকেই বাঁকুড়া জেলায় ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে দলের অন্তর্কলহ। রবিবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে। নতুনদের হাতে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার পরেই দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ থেকে বেরিয়ে পড়েন জেলার ৪ জন বিধায়ক।
পরবর্তীকালে জেলার একাধিক বিধায়ক ওই দুই সভাপতির বদল চেয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠান। এবার বিষ্ণুপুর শহরেও পড়ল সভাপতির পদত্যাগ চেয়ে পোস্টার। একের পর এক এমন ঘটনায় বিজেপি দলের ক্ষোভ যে ক্রমশ বৃহত্তর হচ্ছে, তা একেবারেই পরিষ্কার।
অন্যদিকে লোহাগড় মোড়ে ছাতনা এক নম্বর মণ্ডলের সভাপতি সহ ওই মণ্ডলের বিজেপি নেতৃত্বের একটা বড় অংশ পদত্যাগ করে। ওই মণ্ডলের সমস্ত মোর্চা নেতৃত্ব, সমস্ত শক্তি প্রমুখ ও সমস্ত বুথ সভাপতি একসঙ্গে দলের সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করে সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। দলের সাংসদ সহ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে পদ ছাড়লেন বিজেপির ছাতনা এক নম্বর মন্ডল সভাপতি সহ ১৪০ জন পদাধিকারী।
পদত্যাগকারীদের দাবি, স্থানীয় সাংসদ নিজের ইচ্ছেমতো জেলা কমিটি গঠন করে দল পরিচালনা করতে চাইছেন। রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে সাংসদের বোঝাপড়ারও অভিযোগ তোলেন বিক্ষোভকারীরা। তবে শুধু সাংসদ নয়, স্থানীয় বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। সমস্ত বিষয়টিকে দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করতে চায়নি বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।