
শিক্ষক (teacher) হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইতিহাসে অনার্স করে এমএ (MA in History)। বর্তমানে ২০২ টাকা রোজে পুরসভার সাফাই কর্মীদের সুপারভাইজার (Supervisor) হিসেবে কাজ করছেন হাবরার (Habra) ওই যুবক। একাধিকবার এসএসসি (SSC) পরীক্ষা দিয়েও মেলেনি চাকরি (job)।
জানা যায়, ইতিহাস নিয়ে এমএ পাস করেছেন হাবড়ার আশুতোষ কলোনির বাসিন্দা বছর ৪৩ এর গোবিন্দ সাহা। এরমধ্যে কয়েকবার এসএসসি, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা, খাদ্য বিভাগের চাকরির জন্য পরীক্ষা সবই দিয়েছেন। কিন্তু ভাগ্যে জোটেনি একটিও চাকরি। বর্তমান সময়ে যখন চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় বেনিয়ম, পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি পাওয়া অথচ যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছে না এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তখন ইতিহাস নিয়ে এমএ পাস করা বর্তমানে ওই যুবক ২০২ টাকার দিনমজুরিতে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ করছেন। গোবিন্দর মতে, সঠিক নিয়োগ হলে তিনি হয়তো তাঁর চাকরিটা পেয়ে যেতেন। স্বপ্ন দেখতেন একজন শিক্ষক হবেন। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হতে পারতেন।
বাড়িতে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দশ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তাই সংসারের হাল ধরতে চাকরি না পাওয়া উচ্চ শিক্ষিত গোবিন্দ প্রতিদিন সকাল হলেই হাবড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে জঞ্জাল সাফাইয়ের দেখাশোনার কাজে নেমে পড়েন। মাঝেমধ্যে নিজেও জঞ্জাল সাফাইয়ে ও বাড়ি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের কাজে হাত লাগান। রাস্তার পাশে প্রয়োজনে ব্লিচিং ছড়ানো সবই করেন তিনি। সামনে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। তবে গোবিন্দের মুখে হাসি নেই, কারণ সপ্তাহে চারটে রবিবার বাদ দিলে প্রতিদিন কাজ করার পর তাঁর মেরে কেটে মাসিক আয় হাজার পাঁচেক টাকা। তা দিয়ে সংসার চালাবেন, না ছেলের পড়াশোনা করাবেন, না ছোটখাটো শখ পূরণ করবেন, ভেবেই পান না গোবিন্দ।
বিজেপির স্থানীয় নেতা অবশ্য বলছেন রাজ্যের কর্মসংস্থান এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে একজন এমএ পাস যুবককেও জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে। এমন কাম্য নয়।
এবিষয়ে হাবরা পুরসভার পুরপ্রধান বলেন, পারিশ্রমিক কম থাকলেও সুপারভাইজারের কাজ সম্মানজনক। তাঁর যোগ্যতা থাকলে নিশ্চয়ই তিনি ভালো পরীক্ষায় বসে চাকরি পাবেন।