
একটা সময় ছিল যখন ফুটবলের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপ ধাক্কা খেত ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলির কাছে | ক্রীড়াবিদরা বলতেন, ইউরোপ মানে শক্তি এবং দ্রুততার ফুটবল। আর ল্যাটিন আমেরিকা মানে শৈল্পিক খেলা | যুগ যুগ ধরে ফুটবলকে ব্রাজিল থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনা বা উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা সমৃদ্ধ করেছে | ব্রাজিল মানেই কফি কিংবা ফুটবল |
পেলে আজও বেঁচে | স্ট্রাইকার হিসাবে পেলে কত গোল করেছিলেন পরের কথা। কিন্তু তাঁর পায়ে জাদু ছিল | বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে প্রচুর গোল করেছেন | অবশ্য তাঁর পশে গারিঞ্চা বা অন্য খেলোয়াড়রা সাপোর্ট দিয়েছেন | এই কারণে ব্রাজিল ৫ বার বিশ্বকাপ জয় করেছে | পেলের যুগ শেষ হলেও নতুনরা উঠে এসেছেন চিরকাল |
এই সেদিনের রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো কিংবা কাকা ইত্যাদি কেউ না কেউ উঠে এসেছেন এবং দলকে চাঙ্গা করেছেন | কিন্তু ২০০২ এর পর ব্রাজিল প্রায় ২০ বছরে আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি |
আর্জেন্টিনা উঠে আসে ১৯৭৮ এ প্রথমবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে | তারপর আসে শিল্প আর স্কিলের জাদুকর মারাদোনা | ১৯৮২ তে স্পেন বিশ্বকাপে তাঁকে মেরেধরে খেলতেই দেওয়া হয়নি | ১৯৮৬র বিশ্বকাপ হয় মেক্সিকোতে | এখানে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন মারাদোনা | প্রায় একার চেষ্টায় ইউরোপিয়ান দলগুলিকে একের পর এক হারিয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় | ১৯৯০ এ দারুণ খেলেও ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে যায় | কিন্তু বিশ্ব ফুটবলে সেরা হয়ে থাকেন প্রয়াত মারাদোনা | কিন্তু তারপর ওই অবধি ২০১৪ তে কোনও রকমে মেসির আর্জেন্টিনা ফাইনালে ওঠে। কিন্তু সমস্ত দলকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না | আজকের মেসি বা নেইমার চুটিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাব ফুটবল খেলছেন | ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করছেন। কিন্তু দেশের হয়ে তাঁদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না |
কারণ একটাই, ল্যাটিন আমেরিকার সমস্ত ভালো খেলোয়াড়দের কোটি কোটি ডলার দিয়ে ইউরোপের দলগুলি কিনে নিয়েছে | কাজেই কোটি টাকা মূল্যের ইনসিওর করা পা বাঁচিয়েই খেলছেন দেশের হয়ে | তাই আগামী দিনে ল্যাটিন আমেরিকাকে চ্যাম্পিয়নশিপে আর পাওয়া যাবে কি ?