
রবিবার বিকেলে কি লকডাউন ডাকবে সরকার! ট্রেনের জানালার ধারে বসা এক যাত্রী খবরের কাগজের খেলার পাতায় চোখ রেখে এমনই অযাচিত মন্তব্য ছুঁড়লেন সহযাত্রীদের দিকে। আঁতকে উঠলেন অনেকেই।
করোনা আবহে এই মুহূর্তে সরকারিস্তরে এরকম কোনও ঘোষণা হয়নি ঠিকই। কিন্তু রবিবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান 'হাইভোল্টেজ' ম্যাচ যে কতখানি পারদ উস্কে দিয়েছে, তারই ইঙ্গিত ছড়িয়ে রয়েছে শহরজুড়ে। শনিবার দুপুরেই ধর্মতলার মোড় থেকে শুরু করে গোটা বড়বাজার, এমনকী দক্ষিণের রাসবিহারীতে ভারতের জাতীয় পতাকা দেদার বিকোতে দেখা গিয়েছে। অনেক পাড়ার ক্লাবেও রবিবারের খেলাকে কেন্দ্র করে লাগানো হচ্ছে বিরাটের লম্বা কাট-আউট।
রবিবার এমনিই ছুটির দিন। তার ওপর এই ধরনের ম্যাচ, অন্তত ক্রীড়াপ্রেমী লক্ষ লক্ষ দর্শককে যে ঘরবন্দি করে রেখে দেবে, এ কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তাতে কি কোনওভাবে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে? এই নিয়ে অবশ্য বিতর্ক উঠতেই পারে।
ঘরবন্দি টিভি সেটের সামনে বসে অনেকে যেমন খেলা দেখবেন, তেমনি একইভাবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যাফে বা রেস্তোরাঁয় ক্রীড়াপ্রেমীদের ভিড়ও কিছু কম হয় না। এমনকী, প্রতিবারের মত বড় ম্যাচের আবহ ঘিরে উত্তাল হয় শপিং মলও। একতলা থেকে শুরু করে মাল্টিপ্লেক্সের সামনে পর্যন্ত জড়ো হয়ে খেলা দেখার অভ্যাস নতুন নয়। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও সেক্ষেত্রে ভিড় আটকানো মুখের কথা নয়।
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন দোকান, মল এবং রেস্তোরাঁয় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখানো হবে বলে সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়ে দিয়েছে, গভীর রাত অবধি রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, হল খুলে রাখায় কোনও বাধা নেই। ভারতের বহু হল, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ রয়েছে মহারাষ্ট্রে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়েই ফের হারানো ব্যাবসা ফিরে পেতে চাইছেন মালিকরা। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, পঞ্জাব এবং চেন্নাইতে আগেই রাত অবধি হল, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং দেশের নামী-দামি শহরগুলি এই ম্যাচ ঘিরে যে কতখানি উত্তাল হতে পারে, তার আভাস যথেষ্টই মিলতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি কলকাতায় হঠাৎ করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। ফলে মল, ক্যাফে ছাড়াও পাড়ার ক্লাবগুলিতে একসঙ্গে বহুজন বসে খেলা দেখা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঁকি মারে বৈকি! এখন দেখার প্রশাসন এবং জনগণ কতটা সজাগ।