
প্রসূন গুপ্ত: চলচিত্র, সাহিত্য থেকে ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার মানুষ রাজনীতিতে আসেন। খেলাধুলোর মাঠ বিশেষ করে ক্রিকেট ফুটবল থেকে অনেকেই এসেছেন। এক সময়ে ইন্দিরা ঘনিষ্ঠ তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদিও এসেছিলেন। রাজপাট নিয়ে সরকারের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা হওয়া রাজনীতিতে আসার কারণ বলে শোনা গিয়েছিল। ইন্দিরার আমলে রাজা বা নবাবদের উপাধি বা মসনদ নিয়ে নেওয়া হয়। শোনা গিয়েছে তাতেই প্রতিবাদী হয় ইন্দিরার প্রিয়পাত্র টাইগার পাতৌদি।
পতৌদি রাজনীতিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যান। কিন্তু খুব সুবিধা কিছু করে উঠতে পারেননি। টাইগারের রাজপাটের মতো ১৯৭১-এ নেতৃত্ব চলে যায়। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন অজিত ওয়াদেকার। ওই সময়ে পতৌদি প্রায় একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন পরে অবশ্য ইন্দিরার সৌজন্যে ফের সম্পর্ক ভালো হলে ১৯৭৩-এ দলে ফেরেন এবং ১৯৭৪ এর শেষ দিকে ফিরে পান অধিনায়কত্ব।
এমন অনেকেই ক্রিকেট বা ফুটবল মাঠ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। কীর্তি আজাদ, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা লোকসভার সদস্য হয়েছেন। বিদেশ বোস বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক এবং অশোক দিন্দা বিজেপির বিধায়ক। লক্ষ্মীরতন শুক্ল তৃণমূলের বিধায়ক, এমনকি ক্রীড়ামন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে অবশ্য রাজনীতি ছেড়ে আবার ময়দানে ফেরেন।
বর্তমান মমতা সরকারের ক্রীড়া দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। তিনি দীর্ঘদিন বাংলা, পূর্বাঞ্চল হয়েও ক্রিকেট খেলেছেন এবং বর্তমানে বাংলা রঞ্জি দলের অধিনায়ক।
রাজা-রাজাদের আমলে কী ছিল অন্য বিষয়। কিন্তু ২২ গজের সঙ্গে সখ্যতা এবং জনপ্রতিনিধি-সহ মন্ত্রিত্ব এমন উদাহরণ বোধহয় ভারতে বিরল। মনোজের নেতৃত্বে বাংলা ক্রিকেট ফের রঞ্জি ট্রফিতে ফাইনালে যাওয়ার পথে। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে বাংলা দল। লিগ ম্যাচের প্রায় সবগুলিতে সরাসারি জয় পেয়েছে মনোজের বাংলা।
আপাতত সেমিফাইনাল খেলছে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে ইন্দোর মাঠে। গতবার এই এমপির কাছে সেমিতে হেরে বিদায় নিয়েছিল বাংলা কিন্তু এবার দুর্দান্ত খেলে ফাইনালের পথে কি মন্ত্রী মনোজের বাংলা?