প্রসূন গুপ্ত: যতই যা ঘটুক না কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পাল্টাবে না এমনটাই দাবি প্রাক্তনীদের। কথায় আছে 'তাগা বাঁধবে কোথায় বিষ উঠেছে মাথায়।' দীর্ঘদিন ধরেই এই ৱ্যাগিং সংস্কৃতি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে চলেছে। সাধারণত সরকারি কলেজগুলিতে ৱ্যাগিং বিদ্যমান ছিল এবং আছে। পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে তাবড় তাবড় অভিনেতারা সিনেমা জগতে এসেছেন, যথা জয়া বচ্চন, আসরানি, মিঠুন চক্রবর্তী, সুভাষ ঘাই প্রমুখ। এদের নানা সাক্ষাৎকারে ইনস্টিটিউটের ৱ্যাগিং-এর খবর শোনা গিয়েছিলো, কিন্তু কখনোই যৌন হেনস্থা নয়। ৭০ দশকে নক্সাল আন্দোলনের রেশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে। বহু ছাত্রছাত্রী ওই সময়ে উগ্র আন্দোলনের কারণে ধরাও পড়েছিল। পরবর্তীতে এসএফআইও এখানে সংগঠন তৈরি করে। এই ছাত্রছাত্রীদের পিছনে উস্কানি দেওয়ার দায়িত্ব থেকে প্রাক্তন পড়ুয়া বা শিক্ষকদের একটি অংশকে বাদ রাখা যায় না।
মজার বিষয় যে, যখন ভর্তি হয়েছে এবং হোস্টেলে থাকার অধিকারপ্রাপ্ত হয়েছে তাকেই এই ৱ্যাগিং এর খপ্পরে পড়তে হয়েছে। পরের বছর ওরাই পরের নব্যদের উপর অধিকার চালিয়েছে। এ যেন ক্ষমতা হস্তান্তর। যতগুলি ছাত্র সংগঠন আছে ৱ্যাগিংএর বিষয় নিয়ে উৎসাহ কারুর কম নয় অর্থাৎ নব্যদের উপর মানসিক, শারীরিক অত্যাচার যেন এদের কোর্সের মধ্যেই দেওয়া রয়েছে, করতেই হবে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ড.সুপ্রিয়া চৌধুরী সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন যে, তিনি নাকি ৱ্যাগিং বিরোধী কমিটির সদস্য ছিলেন। এক সময়ে নিয়ম করা হয়েছিল নতুন পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হোস্টেল করা হবে এবং সেই ছাত্রাবাসে পুরাতনীরা প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু তার প্রতিবাদে নাকি সচল হয় প্রতিটি ছাত্র ইউনিয়ন। সুপ্রিয়াদেবী থেকে উপাচার্য্যকেও নাকি ঘেরাও করা হয়। দাবি ছিল নতুনদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছে কতৃপক্ষ। ড.চৌধুরী প্রকারান্তে জানান, এই সমস্ত বন্ধ করা অসম্ভব। ছাত্র মৃত্যুর পরেও দাপটে এক ছাত্রী পরম বিক্রমে জানায়, ধূমপান থেকে মদ্যপান তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে পড়ে। বিন্দুমাত্র পরিবর্তন নেই তাদের চাল চলনে। বাইরে নানান রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদ চলেছে, কিন্তু পাত্তাই দিচ্ছে না পড়ুয়াদের অংশ বিশেষ। এই ভাবেই কি চলবে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাক্ষেত্র?