
বাসের রেষারেষি এবং তার জেরে নিরীহ পথচারীর মৃত্যুর ঘটনা এখন আকছারই ঘটছে। বহু ক্ষেত্রে আইনের চোখরাঙানিকেও তোয়াক্কা করছে না বাসচালকরা। শনিবার সকালে বাঘাযতীন উড়ালপুলে এমনই একটি বেসরকারি বাসের ধাক্কায় ঝরে যায় একটি তরতাজা প্রাণ।
এবার বেপরোয়া যানের তালিকায় ঢুকে পড়ল টোটোর নামও। আলোর উৎসবের ঠিক আগের রাতেই অন্ধকার নেমে এল প্রাক্তন ডব্লুবিসিএস অফিসার দীপককুমার সেনের বাড়িতে। কালীপুজোর জন্য রাজ্য ও জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয় পুলিস-প্রশাসন। ফলে শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে বেড়ে যায় টোটোর দাপট। আর সেই টোটোই প্রাণ কেড়ে নিল বারাসতের প্রাক্তন ডব্লুবিসিএস অফিসারের।
বুধবার, ৩রা নভেম্বর বারাসতের নতুনপুকুর এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ষাটোর্ধ্ব দীপককুমার সেন। তখন আচমকাই সামনে থেকে একটা টোটো তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে ফেলেন জ্ঞান। জ্ঞান ফেরার পর তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেয় পথচলতি মানুষ।
দীপকবাবুর ছোট ছেলে অভিষেক সেন বলেন, "বাবা প্রতিদিন বিকেল ৫টা-সাড়ে ৫টা নাগাদ হাঁটতে যায়। বুধবারও বেরিয়েছিল। এক ব্যক্তি বাবাকে বাড়ি দিয়ে গেল। আমাদের বলা হয়েছিল, বাবা মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে গেছে। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। পরে জানতে পারি আসল ঘটনা। বাবার মাথায় রক্ত জমে গিয়েছিল। যেটা বাবার মৃত্যুর আসল কারণ। বাবার হঠাৎ বুকে ব্যথা হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।"
তিনি আরও বলেন, "ইদানিং টোটোর দাপট মারাত্মক বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের চলাফেরাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। আর এরকম ঘটনা তো মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বারাসত থানায় টোটোচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা ওর কঠিন শাস্তি চাই। সিসিটিভি ফুটেজ হাতে চলে এসেছে। আশা করি, খুব তাড়াতাড়ি ওই টোটো চালককে পুলিস গ্রেফতার করতে পারবে।"
টোটোচালকের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল, নাকি টোটোচালক মদ্যপ অবস্থায় ছিল, তা তদন্ত করে দেখছে বারাসত থানার পুলিস। বারাসত শহরে যে বেআইনি টোটোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে, সে কথা একবাক্যে স্বীকার করছেন এলাকার বাসিন্দারাও।