২৬ পেরিয়ে সাতাশ বছরে পা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আজ, পয়লা জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে দিনভর একাধিক কর্মসূচি ছিল শাসকদলের। প্রথম কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় দলের সদর দফতর তৃণমূল ভবনে। বাইপাসের ধারে মেট্রোপলিটানে দলের সেই দফতরে সকালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। আর সেখানেই বিস্ফোরক তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। তারপরই নতুন বছরের প্রথম দিনেই তৃণমূলের নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ভূমিকা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছিল বিগত কয়েক দিন ধরে। সোমবার সেই বিতর্ককেই কার্যত উস্কে দিলেন মমতা ঘনিষ্ঠ সুব্রত বক্সী। সুব্রতের ‘ধারণা’, অভিষেক লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। তাঁর ‘বিশ্বাস’, অভিষেক ‘যদি’ লড়াইয়ের ময়দানে থাকেন, তবে দলের সর্বময় নেত্রী মমতাকে সামনে রেখেই লড়বেন তিনি। বিরোধীরা কোনোভাবেই ভাঙন ধরাতে পারবে না।
সুব্রত বক্সীর এই মন্তব্যের পরেই তৃণমূলের ঘরোয়া কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যে আপত্তি জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, রাজ্য সভাপতিকে সম্মান করি। কিন্তু তাঁর বাক্যগঠন নিয়ে আপত্তি রয়েছে। এটা কখনই কাঙ্খিত নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল লড়াই করছে, করবে। তাঁর পিছিয়ে আসার কোনও কারণ নেই।
তৃণমূলের শীর্ষ দুই নেতার মন্তব্যে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যখন নিয়োগ সহ একাধিক দুর্নীতিতে জর্জরিত রাজ্যের শাসক দল। তখনই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই দ্বন্দ্ব লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলবে তা বলাই বাহুল্য। তৃণমূলের অন্দরে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঝন্টু বরাইকের। বিজেপি মুখপাত্র সজল ঘোষ বলেন, সুব্রত বক্সীর কথা গুরুত্বহীন, তাঁর কথা দলেরই বিধায়ক শোনেন না।
নব জোয়ার থেকে দলের একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সাংগঠনিক ভাবে দলকে শক্তিশালী করতে দেখা গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও ইদানিং দলের কর্মসূচিতে সেই ভাবে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। অভিষেকের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর চাউর হয়, তিনি নিজের লোকসভা কেন্দ্রেই মনোনিবেশ করতে চান। এই আবহেই সুব্রত বক্সীর এই মন্তব্যে, আগুনে ঘৃতাহুতি বলেই দেখছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।