প্রসূন গুপ্তঃ একটা সময়ে বিধানসভাও রাজনৈতিক মানুষের একটা দর্শনীয় স্থান ছিল। ভিতরে প্রবেশ করতে গেলে অবশ্যই অনুমতি লাগলেও তা পেতে দেরি হতো না যদি উপযুক্ত প্রমাণ থাকতো। সে দিন গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের বারবেলায় রাজ্য বাজেট, কাজেই তৎপরতা চোখে লাগার মতো।
বহুদিন বাদে বিধানসভায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল এই প্রতিবেদকের। কিন্তু বোঝার ভুলে সাত সকালে গিয়ে জানলাম বাজেট বিকেল ৩টেতে এবং তার আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তেমনটিই হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলার বিধানসভা সেই আগের মতোই রয়েছে পটভূমি পরিবর্তন তেমন কিছু বোঝা গেলো না। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়ি এতটাই যে মাছি গলার উপায় নেই। প্রশাসন যেমন মিডিয়ার বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, তেমন বিরোধীরা যাতে বিধানসভার মূল প্রবেশদ্বারে হৈচৈ করতে না পারে তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাধারণত বিধানসভার মূল দরজার উল্টোদিকে সাংবাদিকদের বসার জন্য প্রেস কর্নার রয়েছে। নিয়ম হয়েছে, ওই প্রেস কর্নারের বাইরে এসে গেটের সামনে ছবি তোলা যাবে না। ভিতরেও ক্যামেরা নেওয়া যাবে না। আইপিএস এবং অসংখ্য পুলিস নিশ্ছিদ্র করে রেখেছে প্রবেশ পথ। উপযুক্ত প্রেস কার্ড না থাকলে ঢোকা যাবে না বিধানসভায় সে তিনি যিনিই হন না কেন। নেতারা সাধারণত সঙ্গীসাথী নিয়ে যে কোনও জায়গায় যান। বিধানসভাতেও তারা প্রবেশ করতে পারেন। এবারে নিয়ম হয়েছে, একমাত্র গাড়ির চালক ও আপ্ত সহায়ক ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না।
অনেকদিন বাদে এসেছি বলে বিধানসভার মার্শাল ডেকে পাঠালেন। প্রশ্ন করলাম, এতো কড়াকড়ি কেন? তিনি জানালেন, এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী থাকলে সিকিউরিটিতে জোর দেওয়া হয়ে থাকে, কিন্তু আজ আবার বাজেট। সম্প্রতি দিল্লিতে পার্লামেন্টে কিছু মানুষ কোনও এক বিজেপি সংসদের দেওয়া পাস নিয়ে ঢুকে পরে নিরীহ পটকা ফোটায়, তাতেই নাকি সারা ভারতের বিভিন্ন বিধানসভা ও মন্ত্রী মহলের অফিসে নিরাপত্তা অত্যন্ত কঠিন করা হয়েছে।
শেষে জানলাম বিরোধীরাও নাকি যা খুশি আন্দোলন করার করতে পারে, কিন্তু মূল প্রবেশ দরজার সামনে অর্থাৎ রাস্তায়। বিধানসভা আজ সাধারণের প্রবেশের বাইরে থাকা এক স্মারক ভূমি।