প্রসূন গুপ্ত: গত কয়েক ঘন্টার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ নিজের পেজ থেকে তৃণমূলের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে স্বপরিচয় দিলেন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। হঠাৎ হলোটা কি ? দু একদিন আগেই তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিলো। মামুলি কিছু কথা। কুশল বিনিময় আর কি। একবারের জন্যও বুঝতে পারা গেলো না যে , তিনি দলের উপর ক্ষুব্দ!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি দলের উপর ক্ষুব্দ নাকি দলের প্রথম সারির কোনও নেতার উপর। গুঞ্জনে যা জানা যাচ্ছে যে, তিনি উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নাকি ক্ষুব্দ। কিন্তু কি এমন হলো যে কুণাল লিখছেন যে, কোনও নেতা অযোগ্য, সারা বছর ছ্যাঁচড়ামি করবে তারপর নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভর করে ভোটে জিতে আসবেন। কে এই ব্যক্তি ? তিনি যিনিই হন, তিনি ভোটে দাঁড়ান এবং জিতেও আসেন। অর্থাৎ কোনও এক জয়ী নেতা।
পশ্চিমবঙ্গে বা কলকাতায় এমন কোনও বিধায়ক বা কাউন্সিলর নেই ,যাঁর ক্ষমতা আছে যে কুণালের সাথে দুশমনি করবে। তাহলে অবধারিত কোনও বড়োসড়ো নেতা যিনি ভোটে জিতে আসছেন বারংবার। ফের গুঞ্জনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপ দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক নেতা। সত্তর উর্দ্ধ বয়স। এক সময়ে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাত ধরে রাজনীতি এবং পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের নেতা। কংগ্রেস দল ভেঙে যেদিন তৃণমূল দল তৈরি হয় তখনও তিনি মমতার পাশেই ছিলেন। মাঝে একবার দল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে গিয়ে ফের ফেরত তৃণমূলে।
সুদীপ দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির রাজনীতি করছেন। মাঝে একবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির কোপে পরে জেলযাত্রাও হয়েছিল কিন্তু বেরিয়ে আসার পরে দিল্লির রাজনীতির সরকারি দলের সুনজরে আসেন এবং বিভিন্ন কাজে তাঁকে দেখাও যায়। কলকাতার রাজনীতিতে তিনি বড় একটা উৎসাহ দেখান না তবে উত্তর কলকাতায় সংগঠন তাঁর আছে। তিনি পার্লামেন্টে দলের নেতাও বটে। তবে এই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ছোটোখাটো নেতাদের খুব একটা পাত্তা দেন না। অন্যদিকে আর এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা তাপস রায়ের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক খুব খারাপ। কুণাল তাপস দুজনই দলের মুখপাত্র এবং উত্তর কলকাতার জাদরেল নেতা। এবারে প্রশ্ন ঠিক লোকসভা ভোটের আগে অভিষেক ঘনিষ্ঠ এই দুই নেতার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে বিকল্প ভাবনা সুদীপের কিছু থাকতে পারে কি ? সবটাই রহস্য।